আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের দাতিয়া জেলায় ভোটার তালিকা সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া কেন্দ্র করে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এই বিশেষ সংশোধনী অভিযানে বুথ লেভেল অফিসারদের (BLO) সহকারী হিসেবে বিজেপি এবং আরএসএস-সংলগ্ন একাধিক ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। বিষয়টি সামনে আসতেই প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, নামগুলি “ভুলবশত যুক্ত” হয়েছিল এবং সেগুলি তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে যখন মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জিতু পাটওয়ারি সেই সরকারি তালিকার একটি কপি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন। তাঁর অভিযোগ, অন্তত চারজন ব্যক্তি যারা BLO সহকারী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন, তাঁরা বিজেপির সক্রিয় সদস্য অথবা পদাধিকারী।

জিতু পাটওয়ারি তাঁর পোস্টে লেখেন, “নির্বাচন কমিশনের পর এখন প্রশাসনকেও সরকারের এবং শাসকদলের খোলামেলা পুতুলের মতো নাচতে দেখা যাচ্ছে। দাতিয়া কালেক্টরের জারি করা সরকারি আদেশে, কয়েকজন বিজেপি পদাধিকারী— যার মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি— তাঁদের SIR-র কাজে BLO সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটি ক্ষমতাসীনদের চাপের সবচেয়ে  'Absurd' এবং উদ্বেগজনক উদাহরণ।”

তিনি আরও দাবি করেন, “বিজেপি সরকার SIR-কে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া বলে দাবি করলেও বাস্তবে এই সরকারের অধীনে প্রতিটি সাংবিধানিক ব্যবস্থাকেই দলে-দলে ব্যবহার করার হাতিয়ার বানানো হয়েছে। ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়াকে বিজেপির রঙে রাঙানোর এই প্রচেষ্টা গণতন্ত্রের অপমান। কংগ্রেস এটি সফল হতে দেবে না। প্রতিটি ভোটারের অধিকারের সুরক্ষায় আমরা সতর্ক।”

নিয়ম অনুযায়ী, বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধন অভিযানে ভোটারদের তথ্য যাচাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে BLO-দের উপর। তাঁদের দায়িত্ব পালনে সাহায্যের জন্য প্রতিটি BLO-কে ২ থেকে ৪ জন করে সহকারী নিযুক্ত করা হয়েছে।

বিতর্ক বাড়তে থাকলে দাতিয়া জেলার কালেক্টর স্বপ্নীল ওয়াংখেড়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানান যে রাজনৈতিকভাবে যুক্ত তিনজনের নাম ভুলবশত তালিকায় যোগ হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমি এই আদেশ জারি করিনি। এটি দাতিয়া বিধানসভার উপ-বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (SDM) জারি করেছিলেন। তিনি বিভিন্ন দপ্তর থেকে পাওয়া নাম নিয়ে একটি তালিকা বানান এবং তাতে ভুল করে তিনটি নাম যোগ হয়ে যায়। ইতিমধ্যেই তাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। এখানে কোনও অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। সংশ্লিষ্ট SDM-কে ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।”

ওয়াংখেড়ে আরও জানান, তাঁর দপ্তর SDM-কে নোটিশ দিয়েছে এবং SDM সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদেরও ব্যাখ্যা তলব করেছেন। নির্বাচন কমিশন ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এই বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে এবং বিরোধীরা অভিযোগ তুলছেন— সরকার প্রশাসনিক কাঠামোকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। অন্যদিকে জেলা প্রশাসন দাবি করছে— এটি শুধুমাত্র ‘দপ্তরীয় ভুল’ এবং দ্রুত সংশোধন করা হচ্ছে।