বিরিয়ানি এনে কিছুটা বাঁচিয়ে ফ্রিজে রেখে দেন? পরদিন অবশিষ্টটা খাবেন বলে? তা হলে আপনার জন্য সুখবর আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অভ্যাস চালিয়ে যেতে। কারণ ফ্রিজে রাখা ‘লেফটওভার’ বিরিয়ানি শুধু যে দারুণ স্বাদ ধরে রাখে তা নয়, রাতভর ঠান্ডা হয়ে এটি পরিণত হয় অন্ত্রের জন্য অবিশ্বাস্য উপকারী এক খাবারে। ঠান্ডা ভাত, মশলা, সবজি এবং মাংসের রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে আপনার প্রিয় খাবারটি পরের দিন হয়ে ওঠে এমন এক পদ, যা অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমকে পুষ্টি দেয়, মাইক্রোবের বৈচিত্র্য বাড়ায় এবং নানা পুষ্টিগুণ সরবরাহ করে।
2
7
সার্জন ড. করণ রাজন জানিয়েছেন, অবশিষ্ট বিরিয়ানি অন্ত্রের জন্য কতটা উপকারী। তাঁর কথায়, ফ্রিজে রাখা বিরিয়ানির ভাত, মশলা, সবজি এবং মাংসের মিলিত পুষ্টিগুণ অন্ত্রকে নানা ভাবে সহায়তা করে।
3
7
ড. রাজন ব্যাখ্যা করেন, ফ্রিজে রাতভর রাখা বিরিয়ানিতে তৈরি হয় ‘রেজিস্টেন্ট স্টার্চ’। এটি এক ধরনের প্রিবায়োটিক, যা অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার খাবার হিসাবে কাজ করে।
4
7
তিনি বলেন, “ভাত যখন এক রাত ফ্রিজে থাকে, তখন এক ধরনের জাদু ঘটে। এতে তৈরি হয় রেজিস্টেন্ট স্টার্চ—একটি প্রিবায়োটিক, যা আপনার অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া খুব পছন্দ করে। রেজিস্টেন্ট স্টার্চ কার্বোহাইড্রেটের চেয়ে বেশি আচরণ করে ফাইবারের মতো। এটি শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের ব্যারিয়ারকে আরও শক্তিশালী করে।”
5
7
তাঁর মতে, লেফ্টওভার বিরিয়ানি শুধু রেজিস্টেন্ট স্টার্চেই সমৃদ্ধ নয়। প্রতিটি গ্রাস ভরা থাকে নানা পলিফেনল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং মশলা থেকে পাওয়া অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল যৌগ দিয়ে। তিনি বলেন, “মশলাগুলো পলিফেনলের শক্তিশালী উৎস, যা মাইক্রোবের বৈচিত্র্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই মশলার মিশ্রণ আসলে এক ধরনের ‘মাইক্রোবিয়াল মাল্টিভিটামিন’, যা কমফর্ট ফুডের ছদ্মবেশে থাকে।”
6
7
অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত মাংস অবশ্যই অন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, বিশেষ করে যদি খাদ্যতালিকায় ফাইবার কম থাকে। কিন্তু ড. রাজন মনে করিয়ে দেন, বিরিয়ানিতে ব্যবহৃত মাংস সাধারণত আনপ্রসেসড এবং পরিমিত পরিমাণে থাকায় এটি নানা পুষ্টি সরবরাহ করে। তাঁর ব্যাখ্যা, “চর্বিহীন, অপরিশোধিত মাংসে থাকে ভিটামিন বি১২, আয়রন, জিঙ্ক এবং অ্যামিনো অ্যাসিড—যা অন্ত্রের ব্যারিয়ারকে শক্তিশালী রাখতে এবং অন্ত্রে থাকা রোগপ্রতিরোধী কোষকে সাহায্য করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
7
7
এছাড়া বিরিয়ানিতে থাকা সবজি, পেঁয়াজ এবং ভেষজ উপাদানও এর পুষ্টিগুণ বাড়ায়। ড. রাজন শেষ মন্তব্যে বলেন, “আপনার মাইক্রোবায়োম পুরো খাবারটাকেই মূল্যায়ন করে, কোনও একটি উপাদানের ‘পাসপোর্ট’ দেখে নয়। পরিমিত আনপ্রসেসড মাংস, ফাইবার, পলিফেনল—এগুলোই ভারসাম্য বজায় রাখে।”