আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঘরে-বাইরে শোচনীয় পরিস্থিতিতে যাদব পরিবার। ভোটে পরাজয়ের একদিন পরই লালু প্রসাদ যাদবের দল ও পরিবারে ভাঙন ধরল। রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা করলেন লালু-কন্যা এবং তেজস্বী যাদবের বোন রোহিণী আচার্য। পরিবারের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানিয়েছেন তিনি। 

এক্স-পোস্টে রোহিণী আচার্য জানিয়েছেন, আরজেডি-র দুই বিদ্রোহী নেতা সঞ্জয় যাদব এবং  রমিজ আলমের পরামর্শেই তিনি এই পদক্ষেপ করেছেন। উল্লেখ্য, রমিজ আলম রোহিনীর স্বামী।

এক্স পোস্টে রোহিণী লিখেছেন, "আমি রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছি এবং আমার পরিবারকে ত্যাগ করছি... সঞ্জয় যাদব এবং রমিজ আমাকে এটাই করতে বলেছিলেন... এবং আমি সমস্ত দোষ নিজের কাঁধে নিচ্ছি।" 

পেশায় চিকিৎসক লালু-কন্যা রোহিণী আচার্য বছর কয়েক আগে আরজেডি-তে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিহারের সরণ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেছিলেন। কিন্তু বিজেপির রাজীব প্রতাপ রুডির কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে যান।

চলতি বছরের মে মাসে লালু প্রসাদ যাদব তাঁর বড় ছেলে তেজ প্রতাপ যাদবকে তেজ্যপুত্র বলে ঘোষণা করেছিলেন। তেজপ্রতাপ, অনুষ্কা যাদবের সঙ্গে তাঁর প্রেমের কথা ঘোষণা করতেই তাঁকে আরজেডি থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার কয়েক মাস পরেই ফের লালু-তেজস্বীর পরিবারের কলহ সামনে এল।

মে মাসে, তেজ প্রতাপ ফেসবুকে অনুষ্কা যাদবের সঙ্গে তাঁর ১২ বছরের সম্পর্কের কথা দাবি করে পোস্ট করেন। এর পর যাদব পরিবারের মধ্যে টানাপোড়েন নজরে পড়ে। তেজস্বীর বিবাহবিচ্ছেদের মামলা এখনও চলছে। পরে তিনি বলেছিলেন যে, তাঁর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছিল, কিন্তু ততক্ষণে বিতর্ক মাত্রা ছাড়িয়েছিল।

ক্ষুব্ধ লালু প্রসাদ যাদব তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন, তেজ প্রতাপকে আরজেডি থেকে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করেন এবং বড় ছেলের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কও ছিন্ন করেন। তেজপ্রতাপের  তার কর্মকাণ্ডকে দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং পারিবারিক মূল্যবোধের পরিপন্থী বলে অভিহিত করেন লালু প্রসাদ যাদব।

২০২৫ সালের বিহার নির্বাচনের ফলাফল-
বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) শিবিরের শরিক অন্যান্য আঞ্চলিক জোট দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে। ২৪৩টি আসনের মধ্যে এনডিএ ২০২টি আসন জিতেছে। 

আরজেডি, কংগ্রেস এবং অন্যান্য আঞ্চলিক শরিকদের নেতৃত্বে গঠিত মহাগঠবন্ধনের ফলাফল হতাশাজনক। আরজেডি পেয়েছে মাত্র ৩৫টি আসন।

এনডিএ-র ২০২টি আসনের মধ্যে, বিজেপি ৮৯টি আসন পেয়েছে, জেডি(ইউ)-এর দখলে ৮৫টি আসন। উভয়ই ১০১টি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল।

চিরাগ পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি-রাম বিলাস) ২৮টি আসনের মধ্যে ১৯টি আসন জিতেছে, জিতন রাম মাঝির হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (এইচএএম) ৫টি আসন জিতেছে এবং রাষ্ট্র লোক মোর্চা (আরএলএম) ৬টি আসনের মধ্যে ৪টি আসন জিতেছে।

মহাগঠনের পক্ষে, ২০২০ সালের নির্বাচনে একসময় একক বৃহত্তম দল আরজেডি ৭৫টি আসন নিয়ে জয়লাভ করেছিল এবং কংগ্রেস ২০২০ সালে ১৯টি আসন জিতেছিল, এবার এই দুই দল যথাক্রমে ১৪১টি আসনের মধ্যে মাত্র ২৬টি এবং ৬১টির মধ্যে ৬টিতে নেমে এসেছে।

প্রশান্ত কিশোরের জন সূরাজ পার্টি (জেএসপি) ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ত্রিমুখী লড়াইয়ে পরিণত করার স্বপ্ন দেখালেও তা ব্যর্থ হয়েছে। পিকে-র দল একটিও আসন পায়নি। তবে, বেশ কিছু নির্বাচনী কেন্দ্রে জন সূরাজ পার্টি অন্যান্য দলের ভোট ভাগকে কমিয়েছে।