আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ-এর বিরুদ্ধে কার্যত একপেশে ভাবে হারতে হয়েছে লালু যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দলকে। নির্বাচনে ভরাডুবির পর পরিবারে সৃষ্টি হওয়া টানাপোড়েন নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব।

দলীয় সূত্রের খবর, তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পরিবারে তেজস্বী যাদব ও রোহিণী আচার্যের মধ্যে চলমান বিরোধ তিনি নিজেই সামলাবেন। সোমবার পাটনায় নবনির্বাচিত আরজেডি বিধায়কদের বৈঠকে প্রথমবারের মতো এই বিষয়ে নিজের মতামত জানান লালু।

তিনি বলেন, ‘এটি পুরোপুরি পারিবারিক বিষয়, পরিবারের মধ্যেই মীমাংসা হবে। আমি আছি, আমি বুঝে নেব।’ জানা গিয়েছে, আরজেডির এই বৈঠকে লালুর স্ত্রী রাবড়ি দেবী, পরিবারের বড় মেয়ে মিসা ভারতী, জগদানন্দ সিং সহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকেই তেজস্বী যাদবকে আরজেডি বিধান পরিষদ দলের নেতা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। লালু তেজস্বীর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘তেজস্বী খুব পরিশ্রম করেছে এই নির্বাচনে।’

উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে ২৪৩ সদস্যের বিধানসভায় আরজেডি মাত্র ২৫টি আসনে জিতেছে। ২০১০ সালের পর এটাই দলের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ফলাফল। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বৈঠক চলাকালীন লালু প্রসাদ জানিয়েছেন, ‘তেজস্বীই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ 

ভোটের ফলাফলের পর ঘরে-বাইরে শোচনীয় পরিস্থিতিতে যাদব পরিবার। লালু প্রসাদ যাদবের কন্যা রোহিণী আচার্যের পরিবার ত্যাগের একদিন পরেই যাদব পরিবারে সঙ্কট আরও গভীর চেহারা নিয়েছে।

রোহিনী আচার্যের প্রকাশ্যে বিস্ফোরক ক্ষোভ এবং পরিবারের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণার পর রবিবার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠল।

পরিবারের আরও তিন কন্যা রাজলক্ষ্মী, রাগিনী ও চন্দা নিজেদের সন্তানদের নিয়ে পাটনার সরকারি বাসভবন ছেড়ে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিলেন।

নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর থেকেই দল এবং পরিবারে অস্থিরতা তুঙ্গে।

এই অশান্তির মধ্যেই সোমবার ভোরে নিঃশব্দে ১০ সার্কুলার রোড ছাড়েন রাজলক্ষ্মী, রাগিনী ও চন্দা। সূত্রের খবর, গত দু’দিনের ঘটনাবলি তাঁদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল।

এই প্রস্থানের পর আরজেডির একসময়ের জমজমাট ‘পাওয়ার সেন্টারে’ এখন শুধু লালু প্রসাদ যাদব, রাবড়ি দেবী এবং মিসা ভারতী থেকে গিয়েছেন।

অন্যদিকে, নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে সমালোচনার মুখে থাকা তেজস্বী যাদব জনসমক্ষেই আসেননি। উল্লেখ্য, শনিবার রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা করেন লালু-কন্যা এবং তেজস্বী যাদবের বোন রোহিণী আচার্য।

পরিবারের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানিয়েছেন তিনি। এক্স-পোস্টে রোহিণী আচার্য জানিয়েছেন, আরজেডি-র দুই বিদ্রোহী নেতা সঞ্জয় যাদব এবং  রমিজ আলমের পরামর্শেই তিনি এই পদক্ষেপ করেছেন।

উল্লেখ্য, রমিজ আলম রোহিনীর স্বামী। এক্স পোস্টে রোহিণী লিখেছেন, ‘আমি রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছি এবং আমার পরিবারকে ত্যাগ করছি... সঞ্জয় যাদব এবং রমিজ আমাকে এটাই করতে বলেছিলেন... এবং আমি সমস্ত দোষ নিজের কাঁধে নিচ্ছি।’