আজকাল ওয়েবডেস্ক: কর্ণাটকের এক আদিবাসী ব্যক্তি গত দু'বছর ধরে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে জেলবন্দি। কিন্তু অদ্ভূতভাবে তাঁর স্ত্রীকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপরই ওি ব্যক্তি কর্ণাটক হাইকোর্টে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছেন। এছাড়াও তাঁর এই পরিণতির জন্য দায়ী পুলিশ কর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।
কুশলনগর তালুকের বাসভানাহল্লির বাসিন্দা কুরুবারা সুরেশকে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে মাইসুরের পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত পূর্ণ সম্মানের সঙ্গে মুক্তি দিয়েছে। আদালত কর্ণাটক স্বরাষ্ট্র দপ্তরকে কুরুবারাকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশও দিয়েছিল। এই নামমাত্র শাস্তিতে অসন্তুষ্ট কুরুবারা সুরেশ এখন হাইকোর্টে একটি ফৌজদারি আপিল দায়ের করেছেন।
সুরেশ তাঁর আবেদনে তৎকালীন তদন্তকারী পুলিশকর্তা ডিজি প্রকাশ বিজি, তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিতেন্দ্র কুমার, উপ-পরিদর্শক প্রকাশ যত্তিমণি এবং মহেশ বিকে এবং সহকারী উপ-পরিদর্শক সোমশেখর-সহ পাঁচজন পুলিশকর্তার নাম উল্লেখ করেছেন। তিনি ওইসব পুলিশ কর্তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ তৈরি, তাঁদের অবস্থানের অপব্যবহার এবং যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই তাঁকে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা করার অভিযোগ তুলেছেন। সুরেশ পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং ফৌজদারি মামলা উভয়েরই দাবি করছেন।
মামলাটি ২০২১ সালের। স্ত্রী মালিগে নিখোঁজ হওয়ার পর থানায় নিখোঁজ ব্যক্তির অভিযোগ দায়ের করেন সুরেশ। ২০২২ সালে, পার্শ্ববর্তী মাইসুরু জেলার বেত্তাদাপুরা থানা সীমানায় কঙ্কালের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। স্পষ্ট পরিচয় না পেয়ে, পুলিশ সন্দেহ করে যে দেহাবশেষগুলি মালিগে-র। সুরেশ এবং তাঁর শাশুড়িকে ডিএনএ মিল না থাকা সত্ত্বেও দেহাবশেষের পরিচয় নিশ্চিত করতে জোর করা হয়েছিল।
এর ভিত্তিতেই, সুরেশকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং মালিগে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত তিনি প্রায় ১৮ মাস ধরে হেফাজতে ছিলেন। এরপর সুরেশকে জামিন দেওয়া হয় এবং মুক্তি দেওয়া হয়।
২০২৫ সালের এপ্রিলে 'মৃত' মালিগে মাদিকেরির একটি রেস্তোরাঁয় খাবার খাওয়ার সময় সুরেশের বন্ধুরা জীবিত অবস্থায় দেখতে পান। তাঁকে হেফাজতে নিয়ে বেত্তাদাপুরা পুলিশ মহীশূর আদালতে হাজির করে। এরপরই পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। হ
যদিও দায়রা আদালত শুধুমাত্র ইন্সপেক্টর প্রকাশ বিজির বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের জন্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে। তবে সুরেশের আপিল মামলায় নাম উল্লেখিত পাঁচজন পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি দায়বদ্ধতা বৃদ্ধির চেষ্টা করেছে। তিনি হাইকোর্টকে "অভিযুক্ত" না হয়ে "ভুক্তভোগী" হিসেবে বর্ণনা করার জন্য দায়রা আদালতের রায় সংশোধন করারও অনুরোধ করেছেন।
গত তিন বছর ধরে মালিগের অবস্থান খুজে বের করার জন্য এবং তার নিখোঁজ হওয়ার পরিস্থিতি বোঝার জন্য তদন্ত চলছে।
