আজকাল ওয়েবডেস্ক: এবারের স্বাধীনতা দিবসে ঐতিহ্যবাহী ভারতে তৈরি ১০৫ এমএম লাইট ফিল্ড গান দিয়ে ২১ গান স্যালুট দেওয়া হবে। ভারতে তৈরি এই ১০৫ মিমি লাইট ফিল্ড গান সম্প্রতি ‘অপারেশন সিন্ধুর’-এর সময় নিজের কার্যক্ষমতা প্রমাণ করেছে। ১৫ আগস্ট প্রতি বছর সামরিক রীতি হিসেবে ২১ টি গানের স্যালুট দেওয়া হয়। এটি দেশের সেনানীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজন করা হয়ে থাকে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হবে না।
এই বছর এই অনন্য অনুষ্ঠানটিতে আত্মনির্ভর ভারতের শক্তি প্রদর্শিত হবে। একেবারে দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত ১০৫ মিমি লাইট ফিল্ড গান এবার সকলের নজরে থাকবে। এই দেশীয় অস্ত্রগুলি পূর্বে ব্যবহৃত ব্রিটিশ পাউন্ডার গানগুলির স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।
১০৫ মিমি লাইট ফিল্ড গানটি ভারতের প্রথম স্বদেশি বন্দুক যার পাল্লা ১৭.২ কিলোমিটার পর্যন্ত এবং প্রতি মিনিটে ছয় রাউন্ড গুলি চালাতে সক্ষম। এই গানটি প্রথমে ১৯৮২ সালে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড দ্বারা তৈরি করা হয় এবং এর পরবর্তী সংস্করণগুলি দেশের সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন দেশকে বুড়ো আঙুল দেখাল আরবিআই, কতটা স্বস্তি ফিরল ঋণগ্রহীতাদের
এই গানটি পূর্বে ব্যবহৃত 'ইন্ডিয়ান ফিল্ড গান'-এর উন্নত সংস্করণ এবং এর ওজন পূর্ববর্তী সংস্করণের তুলনায় প্রায় ১০০০ কিলোগ্রাম কম। এই বছরের স্বাধীনতা দিবসের আরেকটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হল এটি অপারেশন সিন্ধুর-এর সাফল্যের ১০০ দিন পূর্ণ হওয়া। এই অপারেশনটি পাকিস্তানে অবস্থিত বহু সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি এবং বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানে এবং ধ্বংস করে। এতে ভারতীয় অস্ত্রের কার্যকারিতা এবং বিধ্বংসী ক্ষমতা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়। যার মধ্যে আর্টিলারি গানগুলিও ছিল যেগুলি পশ্চিম সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছিল। ১৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় জাতীয় সঙ্গীতের সুরের সঙ্গে ৫২ সেকেন্ডে আটটি লাইট ফিল্ড গান থেকে ২১টি গোলা ছোঁড়া হবে। এদিকে তাই সকলের নজর আছে।
প্রসঙ্গত, আরও উন্নতির পথে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতীর সেনার ডিফেন্স অ্যাকুইজেশন কাউন্সিল ইতিমধ্যে ১০ টি প্রস্তাব দিয়েছে। সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য আরও বেশি মিলিটারি হার্ডওয়ার কেনার পক্ষে প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এই প্রস্তাবের বাস্তবায়নে খরচ হবে ১.০৫ লাখ কোটি টাকা। অপারেশন সিঁদুরের সফলতার পর এটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি বিরাট পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি ইতিমধ্যে এবিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নতুন গাড়ি, ইলেকট্রনিক যুদ্ধের সরঞ্জাম, উন্নত প্রযুক্তি এবং নতুন ধরণের মিসাইলের দিকে জোর দেওয়া হয়েছে।

অপারেশন সিঁদুরের সফলতার পর ভারতীয় সেনাবাহিনীকে আরও ঢেলে সাজানোর কথা ভাবা হয়েছে। এই বৈঠক উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনার তিন বাহিনীর প্রধানরা। তারা সকলেই নিজের মতো করে কথা বলেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে এই নতুন বিষয়গুলি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সামিল হলে সেখানে বাহিনীর ক্ষমতা আরও বাড়বে। এই তালিকায় সবার আগে রয়েছে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপ করা কুইক রিঅ্যাকশন মিসাইল। এটা ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পাকিস্তান সীমান্তে বাড়তি সহায়তা করবে। পাশাপাশি নৌবাহিনীতেও বেশ কয়েকটি নতুন সরঞ্জাম কেনা হবে। যার ফলে ভারতীয় নৌবাহিনী অনেক বেশি কার্যকরী হবে। তবে আধুনিক নানা প্রযুক্তির দিকে জোর দেওয়া হয়েছে এদিনের বৈঠকে। বিপক্ষকে যাকে চোখের নিমিষে নাস্তানাবুদ করে দেওয়া যায় সেজন্যেই এই ব্যবস্থা করা হবে।
