আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের শ্রমবাজারে বিরাট বৈষম্যের চিত্র উঠে এসেছে ‘ইন্ডাস ভ্যালি রিপোর্ট ২০২৫’-এ। ব্লুম ভেঞ্চারসের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের মাত্র ২২ শতাংশ মানুষ নিয়মিত বেতন পান, যাদের মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশের রয়েছে কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি বা নিয়োগপত্র। অপরদিকে, ৫৮ শতাংশ ভারতীয় আত্মনির্ভরশীল, যাদের এক তৃতীয়াংশ গৃহবধূ বা পরিবারের অবৈতনিক কর্মী।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করে দেখা গেছে, রাশিয়ায় ৯৩ শতাংশ, ব্রাজিলে ৬৮ শতাংশ, চীনে ৫২ শতাংশ এবং বাংলাদেশেও ৪২ শতাংশ কর্মী আনুষ্ঠানিকভাবে নিযুক্ত। ভারতের ১৩ শতাংশ মানুষ নিয়মিত বেতন পেলেও তাঁদের কোনো চাকরির সুরক্ষা নেই।

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, উচ্চ শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে বেকারত্বের হার অত্যন্ত বেশি, যা ২৮.৭ শতাংশ। আহমেদাবাদের এক কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, শিক্ষার্থীরা ফিল্ডওয়ার্ক করতে চায় না, তাঁরা চায় কর্পোরেট অফিস, ল্যাপটপ এবং প্রতি মাসে ৩০,০০০ টাকা বেতন। ভারতীয় তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশের লক্ষ্য ‘সরকারি’ বা ‘এসি’ চাকরি।

ভারতে সরকারি চাকরির সংখ্যা সীমিত হলেও, এগুলোর বেতন বেসরকারি খাতের তুলনায় অনেক বেশি। উদাহরণস্বরূপ, সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের বেতন বেসরকারি শিক্ষকদের তুলনায় ৬-৭ গুণ বেশি। অথচ, সরকারি চাকরি প্রার্থী সংখ্যা ব্যাপক। উদাহরণস্বরূপ, উত্তর প্রদেশ পুলিশের ৬০,০০০ পদের জন্য ৫০ লাখ প্রার্থী আবেদন করেন।

শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও ভারত পিছিয়ে। দক্ষিণ কোরিয়ায় ৯৬ শতাংশ কর্মী আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ পেলেও ভারতে মাত্র ২.৩ শতাংশ পায়। ফলে উৎপাদন শিল্পে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মূলধন নির্ভরতা দেখা যায়।

রিপোর্টটি আরও জানায়, ভারত একটি দেশ নয়, বরং তিনটি ভিন্ন দেশের সমষ্টি— ‘ইন্ডিয়া ১’, ‘ইন্ডিয়া ২’, এবং ‘ইন্ডিয়া ৩’। যেখানে ‘ইন্ডিয়া ৩’-এর ১০০ কোটি মানুষ মাসে মাত্র ৮,০০০ টাকায় বেঁচে থাকে।