আজকাল ওয়েবডেস্ক: একেই হয়তো বলে কারও পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ। একদিকে যেখানে অপারেশন সিঁদুরের জেরে বেসামাল পরিস্থিতি পাকিস্তানের ঠিক তখনই হঠাৎ করে চিনের একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম একেবারে ওপরের দিকে।
চিনা জেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাভিক চেংডু এয়ারক্রাফট কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারের দাম মাত্র দুই দিনে ৩৬%-এর বেশি বেড়েছে। ভারতের সাম্প্রতিক সামরিক পদক্ষেপের পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই হঠাৎ করেই এই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
অ্যাভিক চেংডু এয়ারক্রাফট একটি চিনা প্রতিরক্ষা কোম্পানি। এটি জেএফ-১৭ থান্ডার এবং জে-১০সি ভিগোরাস ড্রাগনের মতো যুদ্ধবিমান তৈরি করে। এই বিমানগুলি পাকিস্তান বিমান বাহিনী ব্যবহার করে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পাওয়া খবরে এই কোম্পানির শেয়ারের দাম ১৬.৩৭% বেড়ে ৮০.৬৮ ইউয়ানে পৌঁছেছে। বুধবার ১৭% লাফ দেওয়ার পর এটি ঘটেছে। মোট দুই দিনে শেয়ারের দাম ৩৬.২১% বেড়েছে এবং গত এক মাসে ৪৪% বেড়েছে।
কোম্পানির শেয়ারের দামের এই লাফ এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন ভারতের সাম্প্রতিক অপারেশেনের জেরে বিপর্যস্ত হয়েছে পাকিস্তান। সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে পাকিস্তান ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। তবে পরে তথ্য যাচাইকারীরা এই খবরটি খণ্ডন করেছে। ভারতীয় দূতাবাস চিন পরিচালিত গ্লোবাল টাইমসকে ভারতের সামরিক অভিযান সম্পর্কে এই ধরণের খবর শেয়ার না করার জন্য ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে।
ভারত ৭ মে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি সন্ত্রাস শিবিরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল। এই অপারেশনের নাম ছিল অপারেশন সিঁদুর। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতি অনুসারে এর মধ্যে বাহাওয়ালপুর, কোটলি, মুজাফফরাবাদ এবং মুরিদকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর ভারতের এই প্রথম এই ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে। এটি ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর যৌথ পদক্ষেপ। এই হামলার পর, পাকিস্তানের করাচি ১০০ স্টক সূচক ৩,৫৫৯.৪৮ পয়েন্ট বা ৩.১৩% কমে বুধবার ১,১০,০০৯.০৩ পয়েন্টে গিয়ে বন্ধ হয়।
তবে ভারতীয় শেয়ার বাজার স্থিতিশীল ছিল। সেনসেক্স এবং নিফটি উভয়ই বেশ ভাল শেষ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠলেও এটি এখনও পর্যন্ত ভারতের বিনিয়োগকারীদের আস্থার উপর প্রভাব ফেলেনি।
ইন্ডিয়া টুডের খবর অনুসারে, এই ধরণের ঘটনার পর ভারতীয় বাজারগুলি অতীতে শক্তিশালীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ভারতের শেয়ার বাজারের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করেনি। বিনিয়োগকারীরা এখানে নিশ্চিত মনেই বিনিয়োগের পথে হেঁটেছে।
