আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিয়ের আসরে হুল্লোড়ে মেতেছিলেন সকলে। দেদার খাওয়াদাওয়া, নাচগান। সেই আবহেই বিয়ের আসর রক্তে ভাসল‌। সকলের চোখের সামনে পাত্রকে পরপর ধারালো ছুরির কোপ। খুনের চেষ্টা করেই পালিয়ে যায় দুই অভিযুক্ত। শিউরে ওঠা ঘটনাটি ধরা পড়েছে ড্রোন ক্যামেরায়। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আহত পাত্রের নাম, সুজল রাম সমুদ্র। নিজের বিয়েতেই গুরুতর আহত হয়েছেন ২২ বছরের তরুণ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। নিমন্ত্রিতদের সামনেই তাঁকে কোপানোর দৃশ্যটি ধরা পড়েছে ড্রোন ক্যামেরায়। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঝামেলার সূত্রপাত ওই বিয়ের আসরেই। জানা গেছে ডিজের গানে নাচানাচি করার সময় পাত্রের সঙ্গে রাঘো জিতেন্দ্র বক্সি নামের এক যুবকের সঙ্গে ঠেলাঠেলি হয়। এর জেরে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছিল দু'জনের মধ্যে। নিমেষেই সেই অশান্তি ভুলে গিয়েছিলেন পাত্র। সকলের সঙ্গে নাচগানেই মেতেছিলেন। 

কিছুক্ষণ পরেই ধারালো ছুরি নিয়ে পাত্রের দিকে তেড়ে যায় অভিযুক্ত যুবকের। সকলের সামনেই পাত্রের হাঁটু ও পায়ে একাধিকবার ছুরির কোপ বসিয়েই পালিয়ে যায় সে। বিয়ের মণ্ডপের বাইরেই দাঁড়িয়েছিল এক বাইক। সেই বাইকে করেই তাকে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে। দু'কিলোমিটার পর্যন্ত অভিযুক্ত যুবকের গতিবিধি ধরা পড়ে ড্রোন ক্যামেরায়। 

যেখানে দেখা গেছে, কমলা রঙের একটি জামা গায়ে অভিযুক্ত যুবক দৌড়ে বাইকের কাছে ছুটে যায়। সেখানে কালো রঙের জামা পরা আরও এক যুবক তাকে পালাতে সাহায্য করে। পুলিশ সেই ড্রোন ক্যামেরার ফুটেজ দেখেই জোরকদমে তদন্ত শুরু করেছে। এখনও পর্যন্ত দুই অভিযুক্তের খোঁজ পাওয়া যায়নি। 

আরও জানা গেছে, পাত্রের পাশাপাশি তাঁর বাবা রামজি সমুদ্রকেও ছুরির কোপ মেরে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল অভিযুক্তদের। কিন্তু শোরগোল ছড়াতেই সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি। তড়িঘড়ি করে রক্তাক্ত অবস্থায় পাত্রকে উদ্ধার করে অমরাবতীর আরআইএমএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর আঘাত গুরুতর। কিন্তু বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গত জুন মাসেই এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, জগদীশপুর গ্রামে বিয়ের আসরটি বসেছিল। বৃহস্পতিবার ত্রিলোকপুর গ্রাম থেকে এসেছিলেন বরযাত্রীরা। ডিজে গান চালিয়ে নাচতে নাচতে বিয়ের আসরে পৌঁছন তাঁরা। এরপর পাত্রকে বরণ করে বিয়ের মণ্ডপেও নিয়ে আসেন কনের আত্মীয়রা। ঠিক মালাবদলের আগেই ঘটল বিপত্তি। 

হঠাৎ ডিজের গানের সঙ্গে নাচ করতে গিয়ে কনের কয়েকজন আত্মীয়ের সঙ্গে বরপক্ষের ঝামেলা শুরু হয়‌। অশান্তি দেখেই শান্ত করার চেষ্টা করেন পাত্রের বাবা। সেই সময় কয়েকজন মদ্যপ যুবক তাঁর উপর হামলা করে। লাঠি দিয়ে একজন প্রৌঢ়কে মারধর করে। মালাবদল ছেড়ে বিয়ের মণ্ডপ থেকে সোজা বাবাকে বাঁচাতে ছুটে যান পাত্র। অভিযোগ, সেই সময় পাত্রের উপরেই হামলা করে ওই মদ্যপ যুবক। 

পাত্রকে মারধর করার সময় বন্দুক দিয়ে মাথায় একাধিকবার আঘাত করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। তড়িঘড়ি করে তাঁকে গাজিপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর অবস্থার আরও অবনতি হয়। শুক্রবার রাতে হাসপাতালেই প্রাণ হারান ওই যুবক। 

পুলিশ জানিয়েছে, একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে ওই মদ্যপ যুবক বন্দুক নিয়ে বিয়ের আসরে নাচ করছিল। তার প্রতিবাদ করেছিলেন কয়েকজন। সম্ভবত সেই বন্দুক দিয়ে পাত্রের উপর হামলা করে সে। ইতিমধ্যেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।