আজকাল ওয়েবডেস্ক: একটি হৃদয়ছোঁয়া ভিডিও সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় সবার মন জয় করে নিচ্ছে। দেখা যাচ্ছে একটি সাহসী জার্মান শেফার্ড কুকুর কয়েকজন শিশুকে বেওয়ারিশ কুকুরের হাত থেকে রক্ষা করছে। জানা গিয়েছে রাস্তায় ঘুরে বেড়ান কুকুরগুলি পথেই কিছু শিশুকে উত্যক্ত করছিল। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ঋষিকেশ শহরের একটি আবাসিক এলাকার বলে জানা গিয়েছে। এই ভিডিও নতুন করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার সৃষ্টি করেছে৷ 

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একদল শিশু রাস্তায় দৌড়ে বেড়াচ্ছিল। একসঙ্গে মিলে খেলছিল শিশুর দল। ঠিক সেই সময় পাশের বাড়িতে পোষা একটি জার্মান শেফার্ড দেওয়ালের ওপার থেকে সেই দৃশ্য দেখছে। এমন সময়ে আচমকা একটি পথ কুকুর সেই শিশুদের পেছন থেকে তাড়া করে। এহেন দৃশ্য দেখে পাশের বাড়ির জার্মান শেফার্ডটি কোনো দ্বিধা না করে দেওয়াল থেকে লাফিয়ে নিচে নেমে আসে এবং অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে সেই পথ কুকুরকে তাড়িয়ে দেয়।

এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া মাত্রই ভাইরাল হয়ে যায়। এক্স (পূর্বে টুইটার) প্ল্যাটফর্মে ভিডিওটি-'এ ডগ জাম্পড লাইক এ সুপারহিরো টু সেভ চিল্ড্রেন ফ্রম অ্যানাদার ডগ' (A dog jumped like a superhero to save children from another dog) ক্যাপশনসহ পোস্ট করা হয়। পোস্টটি ইতিমধ্যেই এক লাখেরও বেশি ভিউ পেয়েছে। পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রশংসার ঝড় উঠেছে এই পোষ্য কুকুরটিকে নিয়ে। দেখা যাচ্ছে তাকে ভালোবেসে সবাই 'ডোগেশ ভাই' নামে ডাকছেন।

অনেকে মন্তব্য করেছেন, 'কুকুর মানুষের চেয়েও বেশি বিশ্বস্ত, এটা আবার প্রমাণ হলো।' কেউ লিখেছেন, 'ডোগেশ ভাইয়ের জন্য স্যালুট, এমন সাহসিকতা আজকাল খুব কম দেখা যায়।' আরও কেউ লিখেছেন, 'ডোগেশ ভাই কি জয় হোক', 'ডোগেশ ভাই সুপ্রিমেসি', 'ডোগেশ ভাই-এর অরা আছে'। একজন মন্তব্য করে বলেন, 'এই কুকুরই আসল বডিগার্ড শিশুদের', আবার আরেকজন বলেন, 'একটি নিঃশব্দ রক্ষক, এক সতর্ক পাহারাদার।'

ঘটনার জেরে একজন ব্যবহারকারী আবেগপূর্ণভাবে লেখেন, 'পশুরাই আসল নায়ক।' আরেকজন লেখেন, 'ওই লাফটা… এমন উচ্চতা থেকে লাফানো মোটেও সহজ নয়। এটা সম্ভবত প্রশিক্ষিত বা অবসরপ্রাপ্ত কোনও নিরাপত্তাকর্মী কুকুর হতে পারে। কিন্তু যাই হোক, তার ব্যবহার এক কথায় অনবদ্য। এটি দেখা এক আশীর্বাদ।'

প্রসঙ্গত এই ঘটনার মাঝেই, সোমবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি সরকার ও নয়ডা, গুরগাঁও ও গাজিয়াবাদের সিভিক বডিগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, তারা যেন আট সপ্তাহের মধ্যে সব পথ কুকুরকে ধরতে, তাদের নির্বীজকরণ করতে এবং স্থায়ীভাবে শেল্টারে স্থানান্তর করতে উদ্যত হয়।

আরও পড়ুনঃ স্কুটার আরোহীদের দেহ উড়ে গিয়ে পড়ল কয়েক মিটার দূরে! ২০ বছরের তরুণের গতির বলি দুই যুবক...

বিচারপতি জেবি পারডিওয়ালা এবং আর মহাদেবনের বেঞ্চ জানিয়েছে, এমন শেল্টার গড়ে তুলতে হবে যেখানে প্রায় ৫,০০০ পথ কুকুর থাকতে পারে। একইসঙ্গে সেখানে যথাযথ কর্মী নিয়োগ করতে হবে নির্বীজকরণ ও ভ্যাকসিনেশনের জন্য। কোর্ট স্পষ্ট করে বলেছে, এই কুকুরগুলোকে একবার শেল্টারে স্থানান্তর করা হলে আর রাস্তায় বা আবাসিক এলাকায় ফেরানো যাবে না।

বেঞ্চ বলেছে, 'যে করেই হোক, আমাদের পথ কুকুর মুক্ত এলাকা তৈরি করতে হবে, তাহলেই শিশু ও বয়স্করা নিরাপদ বোধ করবে। এটা কোনও কথার সময় নয়, কাজ করার সময়।'
তাঁরা আরও বলেন, 'শিশুদের কোনওভাবেই র‍্যাবিসের শিকার হতে দেয়া যাবে না। এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে মানুষ বিশ্বাস করতে পারে যে তারা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে, কুকুরের কামড়ের ভয় ছাড়াই। এখানে কোনও আবেগের জায়গা নেই।' সুপ্রিম কোর্ট এবিষয়েও সতর্ক করেছে, কেউ যদি এই উদ্যোগে বাধা দিতে চায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।