আজকাল ওয়েবডেস্ক: তিন মেয়ে, দুই ছেলে। তাদের সঙ্গে থাকতেন বাবা। স্ত্রী মারা গিয়েছেন এক বছর আগে। সন্তানদের জন্য রান্না করে। মৃত স্ত্রীর শাড়ি দিয়েই সন্তানদের খুন করার পরিকল্পনা ছকেন বাবা? আত্মঘাতী হন নিজেও। বিহার কাণ্ডে ভয় ধরানো তথ্য সামনে।
অমরনাথ রাম। বয়স ৩৫ বছর। তিনি তাঁর পাঁচ সন্তান- অনুরাধা (১২), শিবানী (১১), রাধিকা (৭), শিবম (৬) এবং চন্দনকে (৫) দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে খুন করতে চান। ঘটনায় তাঁর তিন মেয়েই মারা গিয়েছে। তবে দুই ছেলে কোনওরকমে প্রাণে বেঁচে যায়।
দুই ছেলের মধ্যে একজন শিবম। সে ঘটনাটি নিজের চোখে দেখে। সে জানিয়েছে যে কোনওমতে সে নিজের গলার দড়িটি খুলে ফেলেছিল। শিবম জানিয়েছে, 'বাবা যখন শৌচাগার থেকে ফিরে এলেন, তখন তিনি একে একে আমাদের গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেন। আমি কোনওমতে দড়িটা খুলেছিলাম বলে বেঁচে গিয়েছি।'
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, এই ঘটনার পর থেকে, ঘণ্টায় ঘণ্টায় উঠে আসছে একাধিক তথ্য। যদিও পুলিশ গোটা বিষয় সম্পর্কে কোনও নিশ্চিত তথ্য এখনও সামনে আসেনি। তবে, সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্ত্রীর মৃত্যুর পর, পাঁচ সন্তানকে নিয়ে হিমশিম খেতেন অমরনাথ। একটি স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে সংসার চালানোর জন্য বিপুল টাকা ধার নিয়েছিলেন অমরনাথ। পরে আর সেই তাকা পরিশোধ দিতে পারেননি। ফলে চাপ বাড়ছিল দিনে দিনে।
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, অমরনাথের রান্না ঘরে ভাঙা ডিম, ডিমের খোসা, রান্না করা বাসন পড়ে ছিল। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, অমরনাথ সন্তানদের জন্য রাতের রান্নাও করেছিলেন নিজের হাতেই। অর্থাৎ হত্যা এবং আত্মহত্যার পরিকল্পনা তিনি করেই রেখেছিলেন। তারপরেই, ঠান্ডা মাথায় একের পর এক কাজ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত অমরনাথ প্রথমে তাঁর পাঁচ সন্তানকে একটি ট্রাঙ্কের ওপর দাঁড় করিয়ে সবার গলায় শাড়ির ফাঁস পরিয়ে দেন। এরপর তিনি নিজের গলাতেও ফাঁস লাগান। অভিযোগ, বাবা ও তিন মেয়ে ঝাঁপ দেন, কিন্তু দুই ছেলে ঝাঁপ দিতে চায়নি। পুলিশ মনে করছে, খুদেদের মায়ের শাড়িই ফাঁস লাগানোর কাজে ব্যবহার করেছিল অমরনাথ।
খবর অনুযায়ী, দুই ছেলে এখন হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। কেন তিনি এমন কাজ করলেন, তার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। পুলিশ মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। একইসঙ্গে সবদিক থেকে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তারা আশা করছে, বেঁচে যাওয়া দুই ছেলের বয়ান থেকে ঘটনার সত্যতা যাচাই করা যাবে। ঘটনার জেরে সাকরা থানায় ইতিমধ্যেই একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
