আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভুবনেশ্বরে সম্প্রতি বন্যা পরিস্থিতি। সূত্রে জানা গিয়েছে, ওড়িশার বালাসোর, ভদ্রক ও জাজপুর জেলায় নদীর জলস্তর বিপদসীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর জেরে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে এবং বন্যাসদৃশ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সুবর্ণরেখা, বৈতরণী ও জলকা নদীর জলস্তর বর্তমানে বিপদসীমার কাছাকাছি অথবা তার উপরে পৌঁছেছে। ওড়িশা সরকারের জলসম্পদ বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার চন্দ্র শেখর পদী জানিয়েছেন, রবিবার ভোর রাত ২টো নাগাদ বৈতরণী নদীর জলস্তর ছিল ১৯.০৯ মিটার। তথ্য অনুযায়ী যা বিপদসীমা ১৮.৩৩ মিটার অতিক্রম করেছে। তবে সকাল থেকে জলস্তর হ্রাস পেতে শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। এখন এটি ১৮.৫৪ মিটারে পৌঁছেছে বলে জানা গিয়েছে৷
সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, ভদ্রক ও জাজপুর জেলার কিছু অঞ্চলে এই নদীর জল ঢুকে সম্প্রতি বন্যাসদৃশ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভদ্রক জেলার ধামনগর এলাকায় জল ইতিমধ্যেই ঢুকে পড়েছে। একইভাবে, জলকা নদীর জলস্তর মঠানিতে ৬.৬৭ মিটার, যেখানে বিপদসীমা ৬.৫০ মিটার। তবে এই নদীতেও জল হ্রাস পাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
সুবর্ণরেখা নদীর জলস্তর বালাসোর জেলার রাজঘাটে ১০.২০ মিটারে রয়েছে। সেখানে বিপদসীমা ১০.৩৬ মিটার। তবে সরকার আশঙ্কা করছে যে রাতের মধ্যে এই জলস্তর বেড়ে ১১.৪ মিটারে পৌঁছতে পারে। এই কারণে বালাসোর জেলার ভোগারাই, বালিয়াপাল, বস্তা এবং জালেশ্বর ব্লকগুলিতে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরকার আশ্বস্ত করেছে যে রাজ্যে বড় ধরণের বন্যার সম্ভাবনা নেই কারণ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আগের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। শনিবার একটিও ব্লকে ৫০ মিমির বেশি বৃষ্টি হয়নি বলে জানানো হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী খবর পাওয়া গিয়েছে, নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের আগেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি জেলা প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর হয়েছে। জাজপুর, ভদ্রক ও বালাসোর জেলার জেলা প্রশাসকদের সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জলসম্পদ দপ্তরের একটি রাজ্য বন্যা কক্ষ ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে এবং পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। সুবর্ণরেখা ও বৈতরণী নদী অববাহিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য দুইজন প্রধান তথ্য প্রযুক্তিবিদকে পদমর্যাদার অফিসার হিসেবে নিয়োজিত করা হয়েছে।
ভদ্রক জেলার বৈতরণী বাঁধের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শণ করেছেন রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজ। জাজপুরের কালেক্টর ও অন্যান্য সিনিয়র অফিসাররা দাসরথপুর ব্লকের নুয়াপাটনা এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলি পরিদর্শণ করে দেখছেন।
ময়ূরভঞ্জ জেলার রাসগোবিন্দপুর ব্লকের বোধি এলাকায় জামভিরা নদীর ডান তীরবর্তী বাঁধে সম্প্রতি একটি ভাঙণ ধরা পড়েছে। এটি বালির বস্তা দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে, সুনদারগড় জেলায় ভারি বৃষ্টির কারণে ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে এনএইচ- ৫২০(NH-520) এর কোইদা-চুনাঘাটি অংশ বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট বিভাগ মাটি সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে। এমতাবস্থায় সরকার জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এরপর প্রয়োজন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
