শীতকাল এলেই অনেকেই সময় মতো জল খেতে ভুলে যান। যার ফলে তৈরি হয় ডিহাইড্রেশনের মতো সমস্যা। অনেকেই ভাবেন এই সমস্যা বোধহয় কেবল গরমকালে হয়। কিন্তু না, ব্যাপারটা সেরকম নয়। বরং চিকিৎসকদের মতে শীতকালে শরীর থেকে আরও বেশি পরিমাণে জল বেরিয়ে যায়, এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। 

শীতকালে নিশ্চুপে ডিহাইড্রেশন হয়। পারদ পতনের কারণে জল তেষ্টা অত পায় না। বিশেষজ্ঞের মতে, তাপমাত্রা কমলে তেষ্টা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়। শরীরে জলের প্রয়োজন থাকলেও, তেষ্টা পায় না। এদিকে শীতল বাতাসে শ্বাস নেওয়ার কারণে হোক বা বাথরুমের মাধ্যমে জল তো শরীর থেকে বেরোতেই থাকে। আর দুইয়ের ফলে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। 

গুরুতর ডিহাইড্রেশন বা তার প্রভাব মারাত্মক ভাবে না পড়লেও, মাইল্ড ডিহাইড্রেশন হতেই পারে। সেটাতেও কিন্তু শরীরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ক্লান্তি আসে, মাথা ব্যাথা হয়। মনোযোগের অভাব দেখা যায়। শুধু তাই নয়, শীতকালে ডিহাইড্রেশন হলে রক্ত ঘন হয়ে যায়, হাইপারটেনশন হয়। আর এসবের করবে রক্ত জমাট বাঁধা, হৃদয়ে চাপ পড়ার মতো সমস্যা হতে পারে। এছাড়া কিডনিতে পাথর হওয়া, সংক্রমণের ভয় তো আছেই। ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক হয় যায়। ঠোঁট ফেটে চৌচির হয়ে। মাসলে ব্যথা হওয়া, গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা হওয়া, তো ঘরে ঘরের সমস্যা। তাহলে কী করণীয়? 

ডিহাইড্রেশন এড়িয়ে হাইড্রেটেড থাকতে রোজ পুরুষদের ১৩ কাপ জল খাওয়া উচিত। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৯ এবং শিশুদের ৩ থেকে ৪ গ্লাস জল অবশ্যই খাওয়া উচিত রোজ। শীতকালে এমনই সোয়েটার, ইত্যাদি পরার কারণে শরীর গরম থাকে। তার মধ্যে জিম, রোজকার, বাথরুমের মাধ্যমে জল বেরিয়ে যায়। ফলে শরীরকে ঠিক রাখতে সঠিক পরিমাণে জল খায় জরুরি। 

একই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে বাথরুমের রং এবং পরিমাণের দিকে। যদি কম পরিমাণ বাথরুম হয় বুঝবেন শরীরে পর্যাপ্ত জল নেই। তবে কেবল জল নয়, তার পাশাপাশি শীতকালে হাইড্রেটেড থাকতে এই সহজ টিপস মাথায় রাখা জরুরি। 

রোজ ২ থেকে আড়াই লিটার জল খাওয়ার পাশাপাশি যদি স্যুপ খাওয়া যায় ভাল। 

এছাড়া বিভিন্ন ভিটামিন সি আছে এমন বা রসাল ফল খাওয়া উচিত। 

ঠান্ডা জল খেতে অসুবিধা হলে হালকা গরম জল খাওয়া যেতে পারে। 

স্মুদি খেতে পারেন নিয়মিত। এতে হাইড্রেটেড থাকবেন, আবার পুষ্টিও পাবেন। 

চা খেলে, হার্বাল চা ভাল অপশন হতে পারে। 

ডাবের জল সবসময়ই উপকারী হাইড্রেটেড থাকার জন্য। 

অতিরিক্ত কফি বা চা এই সময় না খাওয়াই ভাল। মদ, কোল্ড ড্রিঙ্কস যতটা পারেন এড়িয়ে চলুন। এতে ডিহাইড্রেশন হয় পারে। মদ্যপান করলে বাথরুমে যাওয়ার ফ্রিকোয়েন্সি বেড়ে যায়, যা শরীর থেকে অতিরিক্ত জল বের করে দেয়। অতিরিক্ত নুন খাবেন না।