আজকাল ওয়েবডেস্ক: আমেরিকায় একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রায় আট বছর পর ধরা পড়ে অভিযুক্ত। জানা গিয়েছে অভিযুক্ত ভারতীয় নাগরিক। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করল আমেরিকার পুলিশ। খবর অনুযায়ী, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে নিউ জার্সির ম্যাপল শেডে নিজেদের ফ্ল্যাটে খুন হয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের সাসিকলা নাররা এবং তাঁর ছয় বছরের ছেলে অনিশ। দু'জনকেই কুপিয়ে মারা হয়েছিল। এত বছর পর তদন্তে মোড় এল এক ল্যাপটপ-এর সূত্র ধরে! খবর অনুযায়ী, ল্যাপটপ থেকে পাওয়া ডিএনএ নমুনার সঙ্গে খুনের জায়গায় পাওয়া রক্তের নমুনার মিল খুঁজে পেয়েছেন।

সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম নাজির হামিদ। তিনি সাসিকলার স্বামী হনুমন্ত রাও নাররার সহকর্মী ছিলেন। দু'জনেই কাজ করতেন কগনিজ্যান্ট টেকনোলজিসে। খুনের সময় হামিদ নিহতদের বাড়ির কাছেই থাকতেন। বার্লিংটন কাউন্টির পুলিশ জানিয়েছে, খুনের পরপরই হামিদ ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘদিন সেখানেই গা ঢাকা দেন অভিযুক্ত। অপরাধের সময় তিনি আমেরিকায় ছিলেন।

আদালতের নির্দেশের পর সম্প্রতি হামিদের ল্যাপটপটি মার্কিন প্রশাসনের হাতে আসে। পরে ল্যাপটপটি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেই ডিভাইস থেকে পাওয়া ডিএনএ ঘটনাস্থলে পাওয়া এক অপরিচিত রক্তের ফোঁটার সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যায়। এই প্রমাণের ভিত্তিতেই প্রসিকিউটররা হামিদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনেছেন। এরপর অভিযুক্তকে ভারত থেকে আমেরিকায় ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ হনুমন্ত রাও নাররা বাড়ি ফিরে দেখেন তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে ছুরি মেরে খুন করা হয়েছে। দু’জনের শরীরেই গভীর ক্ষত ছিল। ধস্তাধস্তির চিহ্নও ছিল। তদন্তের প্রথম দিকেই পুলিশ ঘটনাস্থলে এমন কিছু রক্তের দাগ পায় যা নাররা পরিবারের কারও রক্তের সঙ্গে মেলেনি। এই কারণেই হনুমন্ত রাও নাররা সন্দেহের বাইরে চলে আসেন।

পরে পুলিশ জানতে পারে, হামিদ অতীতে হনুমন্তকে পিছু নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। এরপরই তিনি সন্দেহের তালিকায় আসেন। খুনের ছ’মাস পর তিনি ভারতে ফিরে এলেও কগনিজ্যান্টে দূর থেকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ভারতে থাকাকালীন পুলিশ ডিএনএ নমুনা চাইতে গেলে হামিদ তা দিতে অস্বীকার করেন। তাই পুলিশ আদালতের মাধ্যমে কগনিজ্যান্টকে নির্দেশ দেয় হামিদের ব্যবহৃত ল্যাপটপটি জমা দেওয়ার জন্য। ফরেনসিক পরীক্ষার পর সেই ল্যাপটপ থেকেই পাওয়া ডিএনএ, ঘটনাস্থলের রক্তের সঙ্গে মিলে যায়।

তদন্তকারীদের ধারণা, হামিদ যেহেতু প্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করতেন, তাই তিনি হয়তো ডিজিটাল প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা করেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের সঠিক কারণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে মনে করা হচ্ছে, এর পিছনে হনুমন্ত রাও নাররার প্রতি ব্যক্তিগত রাগ বা আক্রোশ থাকতে পারে। মামলা শুরু হওয়ায় এখন মার্কিন প্রশাসন হামিদকে ভারত থেকে দ্রুত ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া আইনি প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।