আজকাল ওয়েবডেস্ক: নভেম্বরেও প্রবল বর্ষণ, ঘূর্ণিঝড় থেকে রেহাই নেই। আবারও বঙ্গোপসাগরে তৈরি হল নতুন ঘূর্ণিঝড়। এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম, দিতওয়াহ। একটি ঘূর্ণিঝড় যেতে না যেতেই, আরেক ঘূর্ণিঝড় ঘিরে বড় আপডেট দিল হাওয়া অফিস। এবার শ্রীলঙ্কার কাছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ পরিণত হল ঘূর্ণিঝড়ে। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এটি দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসবে স্থলভাগের দিকে।
ভারতের মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় দিতওয়াহ-র জন্ম হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় দিতওয়াহ উত্তর- উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে যাবে। এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে দক্ষিণ ভারতে তুমুল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় দিতওয়াহ কোথায় আছড়ে পড়বে, সর্বোচ্চ গতিবেগ কত থাকবে, তা এখনও সুস্পষ্টভাবে জানায়নি আবহাওয়া দপ্তর। তবে অনুমান, ৩০ নভেম্বর এই ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। তামিলনাড়ু, পুদুচেরি ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের কাছে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পৌঁছে যাবে ঘূর্ণিঝড় দিতওয়াহ।
ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ভারত জুড়ে ভারী বৃষ্টির তাণ্ডব শুরু হয়েছে। নভেম্বরের শেষেও অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে রাজ্যে রাজ্যে। পয়লা ডিসেম্বর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, পুদুচেরি, কেরল, মাহেতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। আগামী ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত তামিলনাড়ুতে প্রবল বৃষ্টির কমলা, লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তামিলনাড়ুতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। শুক্রবার ও শনিবার বিক্ষিপ্তভাবে অতি প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে কয়েকটি জেলায়। পয়লা ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশ ও ইয়ানামেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদদের অনুমান, শ্রীলঙ্কার কাছে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শক্তি বাড়িয়ে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে তামিলনাড়ু উপকূলের কাছে পৌঁছবে। নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড়ের জেরে বাংলায় তাপমাত্রার পারদ ফের ঊর্ধ্বমুখী। আজ একধাক্কায় ফের পারদ চড়ল কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে। চলতি সপ্তাহান্তে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই। ভোরে ও সন্ধ্যায় হালকা শিরশিরানি অনুভূত হতে পারে। কয়েকটি জেলায় হালকা কুয়াশাও থাকবে। তবে ভরপুর শীতের আমেজ পাওয়া যাবে না নভেম্বরের শেষে।
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আন্দামান সাগরের গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার-এ পরিণত হয়ে, গতকাল সকাল সাড়ে সাতটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে উত্তর-পূর্ব ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে আঘাত হানে। আছড়ে পড়ার সময় ঘূর্ণিঝড়টির সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিমি। ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার আরও পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে এগোবে৷
প্রসঙ্গত, ঠিক একমাস আগেই অন্ধ্রপ্রদেশে আছড়ে পড়েছিল প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থা। অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপত্তনম ও কাকিনাড়ার দক্ষিণে কলিঙ্গপত্তনমে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হয়েছিল। সেই সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ১১০কিমি/ঘণ্টা। ল্যান্ডফলের আগে থেকেই অন্ধ্রপ্রদেশের একাধিক উপকূলে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছিল। ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে দু'জনের মৃত্যু হয়েছিল।
