আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুকুর–নদীতে নামলেই বিপদ ঘনিয়ে আসছে—শুধু সাপ বা কুমির নয়, এবার শোনা যাচ্ছে মাছের কামড়ে পুরুষাঙ্গ বিপন্ন হওয়ার খবর। এমন এক মাছের নাম নিয়ে তোলপাড় চলছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে— পাকু মাছ, যাকে অনেকে ‘বল-কাটার’ বা টেস্টিকল কামড়ানো মাছ বলে ডাকে।

 

সুইডেন–ডেনমার্কে আতঙ্ক

 

কয়েক বছর আগে সুইডেন ও ডেনমার্কের উপকূলে এই মাছ ধরা পড়ে আলোড়ন তৈরি করেছিল। ডেনমার্কের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের বিশেষজ্ঞ হেনরিক কার্ল সে সময় সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছিলেন,

“সাঁতার কাটতে নামলে অবশ্যই সাঁতারের পোশাক পরে নামবেন। মাছের কামড় মারাত্মক হতে পারে। টেস্টিকল এদের মুখে একেবারে ঠিকঠাক ফিট হয়ে যায়।”

 

তারই সূত্র ধরে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো শিরোনাম করেছিল—পাকু মাছ পুরুষাঙ্গ কামড়ে ছিঁড়ে ফেলে দিতে পারে। এমনকি পাপুয়া নিউগিনিতে এ ধরনের ঘটনার কথাও উঠে আসে। একাধিক জেলেকে মারাত্মক রক্তক্ষরণে প্রাণ হারাতে হয়েছে বলে দাবি ছড়ায়।

 

ভারতে নতুন আতঙ্ক—গোদাবরীতে পিরানহার দেখা

 

 ডেকান ক্রনিকল-এর একটি প্রতিবেদনে আরও আলোড়ন তৈরি হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, আন্ধ্রপ্রদেশের গোদাবরী নদীতে পাওয়া গেছে ভয়ংকর রেড-বেলিড পিরানহা।

প্রতিবেদনের শেষ অংশে উল্লেখ করা হয়েছে—পিরানহার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পাকু মাছও এখানে দেখা গিয়েছে। আর সেটিই নাকি কুখ্যাত ‘বল-কাটার’।

 

আদৌ কি সত্যি টেস্টিকল কামড়ায়?

 

আসলে পাকুর প্রধান খাবার হল বাদাম, ফল আর ছোট মাছ। মুখের গঠন তুলনামূলক চওড়া বলে বাদাম ভাঙতে সুবিধা হয়। এ কারণে অনেক বিজ্ঞানী মজা করে বলেছেন—মানব টেস্টিকলও নাকি বাদামের মতো দেখতে হওয়ায় এরা কামড়ে দেয়।

তবে পরে সিএনএন এ নিয়ে স্পষ্ট জানিয়েছে, ওই মন্তব্য ছিল একপ্রকার রসিকতা। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের পিরানহা গবেষক উইলিয়াম ফিঙ্ক বলেন—

“ফল আর বাদাম উপরে থেকে জলে পড়ে। মানুষ সাঁতার কাটার সময় সেইভাবে আচরণ করে না। ফলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”

 

তাহলে কী সতর্কতা নেবেন সাঁতারুরা?

 

বিজ্ঞানীরা একমত—পাকু মাছ সাধারণত মানুষকে আক্রমণ করে না। তবে কামড়ালে তা বেশ গুরুতর হতে পারে। তাই নদীতে নামলে শক্ত করে বাঁধা সাঁতারের পোশাক পরা উত্তম। বিশেষত গোদাবরী নদীতে পিরানহার আবির্ভাবের খবর আসার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়তি সতর্কতা দরকার।

 

 

‘বল-কাটার’ ট্যাগ শুনে আতঙ্কে পড়ার দরকার নেই। তবে বিদেশ থেকে আসা এ ধরনের প্রজাতি নদীর স্বাভাবিক জীববৈচিত্র্যের জন্যও হুমকি তৈরি করতে পারে। তাই মাছ শিকারি থেকে প্রশাসন—সবারই নজরদারি বাড়ানো জরুরি। গোদাবরীতে নামার আগে ভয় না পেয়ে বরং সচেতন হন। আর মাছটির খ্যাতি নিয়ে যতটা হইচই, তার থেকে অনেক বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত এদের আক্রমণাত্মক বিস্তার রোধে।