আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহারাষ্ট্রের থানেতে টানা ভারী বৃষ্টি। খবর অনুযায়ী, দ্বিতীয় দিনের প্রবল বর্ষণে শহরবাসীর জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এহেন অতিবৃষ্টির ফলে উপভন লেক উপচে পড়ায় জেলার একটি আন্ডারপাস জলমগ্ন হয়ে যায়। এমনকী একটি গাড়ি প্রায় সম্পূর্ণভাবে জলের নিচে তলিয়ে যায় বলে সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে৷ 

সম্প্রতি এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, স্থানীয় দুই ব্যক্তি জলে ঝাঁপ দিয়ে প্রথমে গাড়ির কাছে যান। এরপর  সেখানে পৌঁছে গাড়ির ভেতর আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করছেন। থানে জেলার নরিভালি ও উত্তরশিব গ্রামকে সংযোগকারী আন্ডারপাসটি অতিবৃষ্টির কারণে প্লাবিত হয়ে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। 

ভিডিওটিতে আরও দেখা গিয়েছে, দুই স্থানীয় ব্যক্তি গলা সমান জলে সাঁতরে গাড়িটির কাছে পৌঁছন। এর পর একজন ব্যক্তি গাড়ির পেছনের দিকে উঠে গাড়িটিকে নিচে ঠেলে দেন, যাতে ভিতরে আটকে থাকা যাত্রীরা বাইরে বেরোতে পারেন। এরপর, ধীরে ধীরে যাত্রীরা গাড়ির জানালা দিয়ে বেরিয়ে এসে সাঁতরে রাস্তায় উঠে আসেন।

বর্তমানে মুম্বই, থানে, পালঘর, নবি মুম্বই, রায়গড় সহ আরও বেশ কয়েকটি জেলা প্রবল বৃষ্টিপাতের কবলে রয়েছে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (IMD) মঙ্গলবারের জন্য মুম্বই ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে। একইসঙ্গে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।

অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (BMC) মঙ্গলবার মুম্বইয়ের সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল এবং কলেজে ছুটি ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে কর্মীদের ওয়ার্ক ফ্রম হোমে কাজ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মুম্বইয়ে গত কয়েকদিন ধরে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে শহরের একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সোমবার শহরের কেন্দ্রীয় অংশ মাতুঙ্গা এলাকায় একটি বেসরকারি স্কুলবাস জলে আটকে পড়ে। জানা গিয়েছে বাসটিতে ছয়জনের বেশি শিশু এবং দুজন স্টাফ সদস্য ছিলেন। প্রায় আধঘণ্টা ধরে বাসটি জলমগ্ন রাস্তায় আটকে থাকার পর স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এরপর শিশু ও স্টাফদের উদ্ধার করে। পরে তাঁদের মাতুঙ্গা পুলিশ স্টেশনে নিরাপদে নিয়ে যাওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ হাঁটতে বেরিয়েছিলেন তিন প্রৌঢ়া, কয়েক মুহূর্তে চরম পরিণতি তাঁদের! অসমে হাড়হিম কাণ্ড 

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ শীঘ্রই পরিণত হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। এর ফলে ধেয়ে আসছে প্রবল দুর্যোগ। এই নিম্নচাপের ফলে অন্ধ্রপ্রদেশের পাঁচটি জেলায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ১৯ আগস্ট অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ ওড়িশা এবং উত্তর অন্ধ্র প্রদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, ‘এই ঘূর্ণিঝড় ১৯ তারিখে দক্ষিণ ওড়িশা এবং উত্তর অন্ধ্রের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাব হিসেবে অন্ধ্র প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে’। আবহাওয়ার এই পরিস্থিতির কারণে বিশাখাপত্তনম, অনাকাপল্লী, ডঃ বি আর অম্বেদকর কোনসীমা, কাকিনাডা ও পশ্চিম গোদাবরী জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

পাশাপাশি, শ্রীকাকুলম, পার্বতীপুরম মন্যম, পূর্ব গোদাবরী, আল্লুরি সীতারামারাজু, এলুরু, কৃষ্ণা, বাপতলা, পালনাডু, প্রকাশম ও নন্দ্যাল জেলায় জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। কুর্নুল, অনন্তপুর, ওয়াইএসআর কড়পা, নেল্লোর, তিরুপতি ও চিত্তুর জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশাখাপত্তনমের ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা কেন্দ্র জানিয়েছে, উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা ঝোড়ো হাওয়া (ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিলোমিটার বেগে) ও ভারী বর্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে শ্রীকাকুলম, বিজিয়ানাগরম, বিশাখাপত্তনম, অনাকাপল্লী, কাকিনাডা, কোনসীমা, পূর্ব গোদাবরী এবং ইয়ানাম জেলায় পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলির বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।