আজকাল ওয়েবডেস্ক: নির্বাচন মানেই টাকা বিলির প্রতিযোগিতা। এ দেশে এখন এটাই প্রবণতা। প্রশ্নের মুখে ভারতীয় গণতন্ত্রের দৃঢ়তা। এবার এই টাকার 'খোলা' নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুরলী মনোহর যোশী। তাঁর মতে, ভোটের আগে যেভাবে টাকা ছড়ানো হচ্ছে, তাতে মানুষ মনে করতে শুরু করেছে তাদের ভোট কিনে নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের সময় কেবল "অর্থ বিতরণ" করে প্রকৃত কল্যাণ নিশ্চিত করা যায় না।

প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার জিভিজি কৃষ্ণমূর্তির ৯১তম জন্ম বার্ষিকীর সভায় যোশী ভারতের নির্বাচনী রাজনীতির বদল নিয়ে মুখ খোলেন। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যোশী বলেন, "আজকের প্রশ্ন হল। কল্যাণের জন্য টাকা দেওয়া হয়েছিল নাকি ভোট কেনার জন্য? রাজনৈতিক দলগুলি এর সমাধান করবে না। তারা ক্ষমতায় থাকার জন্য সাংবিধানিক বিধান ব্যবহার করে। শ্রীমতি গান্ধী এটা করেছিলেন, বাজপেয়ী এটা করেছিলেন।"

বিহারে এনডিএ-র বিশাল জয় মূলত বিধানসভা নির্বাচনের আগে 'মুখ্যমন্ত্রী মহিলা রোজগার যোজনার' কারণেই বলে মনে করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে ১.২৫ কোটি মহিলা ভোটারকে ১০,০০০ টাকা নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। এই আবহে বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের অন্যতম যোশীর  ভোটের আগে অর্থ বিতরণ নিয়ে মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

প্রবীণ এই বিজেপি নেতা বলেছেন, ভারতে এমনীতেই উন্নয়ন এবং সুবিধার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বিভাজন আছে। সব রাজ্যের আর্থিক অবস্থা সমান নয়। কর্নাটকের একজন বাসিন্দা ভোটের বিনিময়ে যে সুবিধা পান মরুরাজ্য বা উত্তর-পূর্বের মানুষ তা পান না। যদিও সকলের ভোটের মূল্য সমান।

যোশী বলেন, সংবিধানের প্রতি আস্থা রেখে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাজ্যগুলিতে আরও ভাঙতে হবে। জনসংখ্যার অনুপাত এবং লোকসভা ও বিধানসভার সংখ্যায় সমতা রেখে নতুন রাজ্য তৈরি করা গেলে দেশে উন্নয়ন ও সুবিধা পাপ্তিতে সাম্য আনা সম্ভব। সংবিধানের "অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার"-এর নিশ্চয়তা উল্লেখ করে যোশী যুক্তি দেন যে, অর্থনৈতিক সমতা ছাড়া রাজনৈতিক অধিকার অর্থপূর্ণভাবে প্রয়োগ করা যায় না। তাঁর কথায়, "রাজ্যগুলিতে প্রায় সমান জনসংখ্যা এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা থাকলে, সংসদ সত্যিকার অর্থে সকলের স্বার্থে কাজ করবে।" তাঁর মতে, প্রতি ১০-২০ বছর অন্তর বিষয়টি পর্যালোচনা করা উচিত।

সংবিধান অনুসারে প্রতি দশ বছর অন্তর জনগণনা এবং পরবর্তী সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিলম্বের কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, ইন্দিরা গান্ধী সরকার যখন সীমানা নির্ধারণের স্থগিতাদেশ ২৫ বছর বাড়িয়েছিল, তখন এই প্রক্রিয়াটি "প্রথমবার ক্ষতির" সম্মুখীন হয়েছিল, যা অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারের অধীনেও অব্যাহত ছিল।