আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হতেই বিভিন্ন সংস্থা এক্সিট পোল প্রকাশ করেছে। আর সেই এক্সিট পোলগুলোর গড় ফলাফল স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে—বিরোধী মহাগঠবন্ধনের সামনে অত্যন্ত কঠিন সময় আসছে। ২০২০ সালে যেখানে মহাগঠবন্ধন ১১০টি আসন পেয়েছিল, এবার সেই সংখ্যা অনেকটাই কমে যাওয়ার পূর্বাভাস মিলছে।
সবচেয়ে বড় ধাক্কা লাগতে পারে লালু প্রসাদ যাদবের রাশট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-এর জন্য। ২০২০ সালে রাজ্যের সর্ববৃহৎ দল হিসেবে উদ্ভাসিত হয়েছিল আরজেডি; এবার সেই অবস্থান হারিয়ে বিজেপি সর্বাধিক আসন পাওয়ার পূর্বাভাস দেখা যাচ্ছে।
তবে মনে করিয়ে রাখা প্রয়োজন—বিহারের ক্ষেত্রে এক্সিট পোল বহুবার ভুল করেছে। অতীতে বহু নির্বাচনেই প্রকৃত ফল এক্সিট পোলকে ভুল প্রমাণ করেছে। তাই প্রকৃত চিত্র জানতে হলে অপেক্ষা করতেই হবে গণনার দিন পর্যন্ত।
এনডিএ স্পষ্টভাবে এগিয়ে—একাধিক সমীক্ষার ইঙ্গিত
এইবার মোট নয়টি এক্সিট পোল—যার মধ্যে আছে দৈনিক ভাস্কর, ম্যাট্রাইজ, পিপলস ইনসাইট, চানক্য স্ট্র্যাটেজিস, পিপলস পালস সহ অন্যান্য সংস্থার সমীক্ষা—সবাই প্রায় একই সুরে বলছে যে এনডিএ নিয়েই সরকার গঠনের পথে এগোচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থার হিসাবে এনডিএ পেতে পারে ১৩০ থেকে ১৬৭টি আসন। অন্যদিকে মহাগঠবন্ধনের সম্ভাব্য আসন সংখ্যা ৭৩ থেকে ১০৮। গড় হিসাব অনুযায়ী এনডিএ-র সম্ভাব্য আসন ১৪৭, আর মহাগঠবন্ধনের ৯০।
প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজের প্রভাব সীমিত
বেশ আলোচিত দলের মধ্যে অন্যতম ছিল প্রশান্ত কিশোরের ‘জন সুরাজ’। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, তারা এই নির্বাচনে ‘এক্স ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু এক্সিট পোল তা বলছে না। বিভিন্ন সমীক্ষা অনুযায়ী দলটি ০ থেকে ৫টি আসন পেতে পারে। গড় হিসেবে সংখ্যা মাত্র ২। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সামান্য আসনও বিরোধীদের ক্ষতি করতে পারে; কারণ জন সুরাজের ভোট কাটাকাটি মহাগঠবন্ধনের শক্ত ঘাঁটিকে দুর্বল করেছে বলেই আশঙ্কা।
আরজেডি–কংগ্রেসে বড় ধসের ইঙ্গিত
মহাগঠবন্ধনের প্রধান দলগুলোর পৃথক পারফরম্যান্সও তেমন আশাব্যঞ্জক নয়। আরজেডি যেখানে গতবার ৭৫টি আসন পেয়েছিল, এবার তাদের সম্ভাব্য আসন ৫৭ থেকে ৬৯। কংগ্রেসের পরিস্থিতি আরও খারাপ। গতবার তারা ১৯টি আসন পেয়েছিল; এবার এক্সিট পোলের হিসাবে তারা পেতে পারে ১১ থেকে ১৪ আসন।
বিজেপি সর্বোচ্চ দল, কিন্তু আগের চেয়ে কম আসন
বিজেপি থাকার কথা ৬৭ থেকে ৭০টিতে। যদিও এটি তাদের সর্বাধিক আসন এনে দেবে এবং এনডিএ-র সার্বিক লড়াইকে এগিয়ে রাখবে, গতবার তারা ৭৫টি আসন পেয়েছিল; সেই তুলনায় কমছে বিজেপির আসন সংখ্যা। এদিকে, এনডিএ-র অন্য বড় সঙ্গী জেডিইউ-র ভাগ্যে সম্ভবত বড়ো উত্থান। গতবার তাদের ঝুলিতে ছিল ৪৩টি আসন; এবার তারা পেতে পারে ৫৮ থেকে ৭১ আসন।
সব মিলিয়ে এবারের এক্সিট পোল মহাগঠবন্ধনের জন্য হতাশার ছবি দেখালেও, ভোট-পরবর্তী বাস্তব ফলাফল বদলে দিতে পারে অনেক হিসাব। বিহার বহুবার এক্সিট পোলকে ভুল প্রমাণ করেছে—তাই নজর এখন গণনার দিনেই।
