আজকাল ওয়েবডেস্ক: সামনেই নির্বাচন। তার আগেই একেরপর এক ঘটনায় বেশ সরব বিরোধীরা এবং একপ্রকার চাপের মুখে এনডিএ জোট সরকার। খেমকার খুন নিয়ে তোলপাড় বিহার গত কয়েকদিন ধরেই। এগিয়ে আসছে নির্বাচনের দিনও।
ঠিক তার আগে একের পর এক খুনের ঘটনা বিহারে। ব্যবসায়ী মৃত্যুর ঘা শুকনোর আগেই, এবার খুন বিজেপি নেতা। একের পর এক গুলি, প্রকাশ্য দিবালোকে শেষ করে দিয়েছে তাঁকে। ঘটনায় চাঞ্চল্য পাটনায়।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, সুরেন্দ্র কেওয়াত, স্থানীয় বিজেপির কিষাণ মোর্চার নেতা কাজ করছিলেন মাঠে। আচমকা কয়েকজন আততায়ী এসে একেবারে কাছ থেকে পরপর গুলি চালায় নেতাকে লক্ষ্য করে। তাদের প্রত্যেকের মুখ গামছায় ঢাকা ছিল। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়েছে, অন্তত চারটি গুলি চালানো হয়েছে। সুরেন্দ্রকে উদ্ধার করে তৎক্ষণাৎ পাটনা হাসপাতালে নিয়ে যাইয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় পুলিশ মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।
এর আগে চার জুলাই, পাটান্য নিজের বাড়ির সামনেই খুন হন খেমকা। খেমকার মৃত্যুতে তোলপাড় হয় পাটনা। গান্ধী ময়দান থানার অন্তর্গত টুইন টাওয়ার এলাকার প্যানাশ হোটেলের সামনে ঘটে ব্যবসায়ী-নেতার খুনের ঘটনা। জানা গিয়েছে, সেদিন তিনি একটি বৈঠক সেরে ফিরছিলেন। সেই মুহূর্তে তাঁর উপর অতর্কিতে হামলা চালানো হয়। পুলিশ অনুমান করেছে ঘটনাটি সম্পূর্ণরূপে সুপরিকল্পিত। এমনকি একাধিক হামলাকারী এতে জড়িত ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, হামলার আগে খেমকার গতিবিধি নজরে রাখতে 'স্পটার' ব্যবহার করা হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কেউ তাঁকে অনুসরণ করছিল পুলিশের ধারণা৷ সুযোগ বুঝে অভিযুক্তদের তথ্য সরবরাহ করছিল।
যদিও ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। ফের শুক্রবার গভীর রাতে রামকৃষ্ণ নগর থানার অন্তর্গত জখরিয়াপুর এলাকায় ফের এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, তিনি 'ত্রিশনা মার্ট' নামের একটি দোকানের মালিক ছিলেন। শুক্রবার রাত প্রায় ১১ টা নাগাদ তিনি দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ে কিছু অজ্ঞাত দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে আচমকা গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করে। পুলিশ জানিয়েছে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখছে তারা। পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এক সপ্তাহে দুই ব্যবসায়ীর খুন। একদিকে গোপাল খেমকার মতো প্রভাবশালী রাজনৈতিক-ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ব, অন্যদিকে স্থানীয় দোকানদার। এই ধরণের ধারাবাহিক ঘটনায় ব্যবসায়ী সমাজ ও নাগরিকদের মধ্যে ব্যাপক ভয় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে৷ ব্যবসায়ীরা বলছেন, 'প্রতিদিন দোকান খুলতে ভয় লাগে। কার কখন কী হবে, বোঝা যাচ্ছে না। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমাদের ব্যবসা চালানোই মুশকিল হয়ে পড়বে।' পাটনার বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচীর ডাক দিয়েছে। দ্রুত তদন্ত শেষ করে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। পাটনা পুলিশ এই দুটি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে।
ঠিক তার পরেই প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে খুন করা হল বিজেপি নেতাকে। পরপর একই ঘটনায় রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
