আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ফল গণনা শুরু হওয়ার পর থেকে এই প্রবণতাই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এক্সিট পোলগুলি সঠিক পথেই ছিল। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, এনডিএ আবারও রাজ্যে সরকার গঠনের পথে, এবং এবার তারা আগের তুলনায় অনেক বড় ব্যবধানে জয় পেতে চলেছে বলে মনে হচ্ছে। বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটগণনা এখনো চলছে, তবে প্রাথমিক ফলাফলই রাজনৈতিক অঙ্ক পরিষ্কার করছে।
প্রবণতা অনুযায়ী, কংগ্রেস মাত্র পাঁচটি আসনে এগিয়ে আছে। অন্যদিকে, বিজেপি ৮১টি আসনে এগিয়ে, জেডিইউ ৮০টি আসনে, এলজেপিআরভি ২২টি আসনে, আরজেডি ৩৩টি আসনে, সিপিআই(এমএল)(এল) ৬টি আসনে এবং হ্যামস ৪টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। এই সংখ্যা দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে এনডিএ সহজেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার সীমা অতিক্রম করেছে এবং ১৮২টি আসনে এগিয়ে থেকে সরকার গঠনের অবস্থানে পৌঁছে গেছে। বিপরীতে মহাগঠবন্ধন এগিয়ে আছে মাত্র ৫৭টি আসনে, যা তাদের জন্য বড় ধাক্কা।
কংগ্রেসের শোচনীয় পারফরম্যান্সের পর নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কংগ্রেস সাংসদ মানিকম টাগোর এক্সে লিখেছেন, “যখন আপনি ৬৫ লাখ ভোটার—যাদের অধিকাংশই বিরোধী সমর্থক—তালিকা থেকে মুছে ফেলেন, তখন ফল ঘোষণার দিনে আর কীই বা আশা করবেন? খেলায় মাঠ যদি আগে থেকেই হেলে থাকে, তবে গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না।” তাঁর এই মন্তব্য নির্বাচন কমিশন ও ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ককে আরও উস্কে দিয়েছে।
প্রাথমিক প্রবণতা প্রকাশের পর কংগ্রেস নেতা পবন খেরা সরাসরি প্রধান নির্বাচন কমিশনার গ্যনেশ কুমারের দিকে আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেছেন, “যেমনটা বলেছিলাম, শুরু থেকেই জ্ঞানেশ কুমার জনগণের বিরুদ্ধে সফল হচ্ছেন বলেই মনে হচ্ছে। এই লড়াই বিজেপি–কংগ্রেস–আরজেডি–জেডিইউর মধ্যে নয়; এটি সরাসরি জ্ঞানেশ কুমার এবং ভারতের জনগণের মধ্যে লড়াই।” খেরা আরও বলেন, “প্রাথমিক প্রবণতা দেখেই বোঝা যাচ্ছে জ্ঞানেশ কুমার এগিয়ে যাচ্ছেন… তবে আমি বিহারের মানুষকে হালকাভাবে নিচ্ছি না। তারা সাহস দেখিয়েছে। এখন দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কোনদিকে যায়।”
কংগ্রেসের আরেক নেতা উদিত রাজও একইভাবে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ নিবিড় সংশোধন পদ্ধতির দিকে অভিযোগের তীর ছুড়েছেন। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এসআইআর–ই এগিয়ে। আমি বলব না এটি বিজেপি–জেডিইউর জয়, এটি নির্বাচন কমিশনের জয়। ভোটার তালিকা ‘স্যানিটাইজ’ করার পর লাখ লাখ অসঙ্গতি চিহ্নিত হয়েছিল, কিন্তু কমিশন একটিও অভিযোগের জবাব দেয়নি। ৮৯ লাখ অভিযোগ উঠেছিল, তবু কমিশন বলল কেউ অভিযোগ করছে না। এটি গণতন্ত্রের হত্যা।”
তিনি আরও যোগ করেন, “বিরোধী ভোটারদের নাম মুছে দিয়ে, ডিজিটাল স্লিপ থাকা সত্ত্বেও হাজার হাজার ভোটারকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে… বিহারে পরিবর্তনের স্রোত ছিল। বিজেপি নেতারা অনেক জায়গায় তাড়া খেয়েছে। তাহলে তারা জিতছে কীভাবে? আমার মনে হয় এটি এসআইআর–এর জয়।”
সব মিলিয়ে, বিহারের ভোটগণনা প্রাথমিক থেকেই উত্তপ্ত। অভিযোগ–বিতর্কের মাঝেও এনডিএর বড় লিড রাজ্যের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে নতুন করে রূপ দিচ্ছে। ফলাফলের চূড়ান্ত ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক উত্তেজনা অব্যাহত থাকবে।
