আজকাল ওয়েবডেস্ক: মা নিকিতা সিংহানিয়ার সঙ্গেই থাকবেন বেঙ্গালুরুর আত্মঘাতী প্রযুক্তিকর্মী অতুল সুভাষের চার বছরের ছেলে। এর আগে মৃত অতুলের মা অঞ্জু দেবী নাতিকে নিজেদের কাছে রাখতে চেয়ে মামলা করেছিলেন। সোমবার ছিল সেই মামলার শুনানি। এ দিন ভিডিও কলের মাধ্যমে শিশুটির সঙ্গে কথা বলার পর অঞ্জু দেবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি এস সি শর্মা এই নির্দেশ দিয়েছেন।

সোমবার শুনানি শুরু হতেই, আবেদনকারী অর্থাৎ অঞ্জু দেবীর আইনজীবী বিস্তারিত হলফনামা দাখিল করার জন্য এক সপ্তাহের সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু বিচারপতি নাগরত্না এই ধরনের আবেদন খারিজ করে দেন এবং বলেন, "এটি একটি হেবিয়াস কর্পাস (আবেদন)... আমরা শিশুটিকে দেখতে চাই। শিশুটিকে দেখান। আদালত কিছুক্ষণ পরে বিষয়টি বিবেচনা করবে।"

প্রায় ৪৫ মিনিটের বিরতির পর শিশুটিকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে হাজির করানো হয়। তবে, শিশুটির পরিচয় রক্ষার জন্য সেই সময় আদালত শুনানির লাইভ সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়।

চলতি মাসের শুরুতে নিকিতা সিংহানিয়া আদালতকে জানিয়েছিলেন যে, তাঁর ও অতুলের পুত্র সন্তান হরিয়ানার ফরিদাবাদের একটি বোর্ডিং স্কুলের ছাত্র। ওই শিশুকে তিনি তাঁর সঙ্গেই রাখার জন্য বেঙ্গালুরুতে নিয়ে আসতে আগ্রহী। নিকিতার কথায়, "আমরা শিশুটিকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাব... আমরা ছেলেটিকে স্কুল থেকে নিয়ে এসেছি। জামিনের শর্ত পূরণের জন্য মাকে বেঙ্গালুরুতে থাকতে হবে।" তার আইনজীবী তখন বলেন, এরপর বিচারপতি নাগরত্না এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিং-এর বেঞ্চ জানিয়েছিল যে, পরবর্তী শুনানির দিন শিশুটিকে আদালতের সামনে হাজির করতে হবে।

এর আগে অতুলের বাবা পবনকুমার মোদি বলেছিলেন, "আমরা কেউই জানি না ও (নিকিতা) আমাদের নাতিকে কোথায় রেখেছে। তাকে কি মেরে ফেলা হয়েছে, নাকি বেঁচে আছে… আমরা কিছুই জানতে পারছি না। আমি আমার নাতিকে আমাদের কাছে পেতে চাই।" সেই সঙ্গেই পবনের দাবি করেন, তিনি কোনওদিন নিজের নাতিকে কোলে নেওয়া দূরে থাক চোখেই দেখেননি। যা কথোপকথন হয়েছে সবই ভিডিও কলে। পুত্রহারা বাবা এবার নিজের নাতিকে কাছে চান। 

বেঙ্গালুরুর একটি আবাসন থেকে প্রযুক্তি কর্মী অতুলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। উদ্ধার হয় ২৪ পাতার সুইসাইড নোট। যেখানে স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া, শাশুড়ি নিশা সিংহানিয়া, শ্যালক অনুরাগ-সহ স্ত্রীর পরিবারের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছিলেন যুবক। মৃত্যুর আগে ৮০ মিনিটের একটি ভিডিও রেকর্ড করেন অতুল। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, "বিচার না মেলা পর্যন্ত তোমরা যেন আমার অস্থি বিসর্জন কোরো না!" এই নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। এরপর নিকিতাকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি তাঁর মা নিশা সিংহানিয়া ও ভাই অনুরাগ সিংহানিয়াকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও এই মুহূর্তে তাঁরা জামিনে মুক্ত।

অতুল সুভাষের আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হলেও বর্তমানে জামিন পেয়েছেন তাঁর স্ত্রী নিকিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তবে,  খারিজ হয়নি অভিযোগ। কিন্তু নিকিতা তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত হতে দিতে চান না। এই সংক্রান্ত ইস্যুতে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে আদালত।