আজকাল ওয়েবডেস্ক: আমেদাবাদের ইঞ্জিনিয়র কেশবকান্ত শর্মা 'গতি' নামে একটি বিশেষ ড্রোন তৈরি করেছেন। সেই ড্রোন লক্ষ্যবস্তুতে গ্রেনেড হামলা চালাতে সক্ষম এবং বিস্ফোরণের পরে নিরাপদে ফিরে আসতে পারে। সামরিক ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে তৈরি 'গতি' ড্রোনটি ইতিমধ্যেই পরীক্ষার সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীকে মুগ্ধ করেছে। ফলে ভারতীয় সেনা ২০টিরও বেশি 'গতি' ড্রোনের অর্ডার দিয়েছে।
জটিল পরিস্থিতিতে যুদ্ধক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে কেশবকান্ত শর্মার উদ্ভাবন গতি ড্রোন। গ্রেনেড স্থাপনে নির্ভুলতার প্রয়োজনীয়তা। গ্রেনেড হামলার জন্য ম্যানুয়াল পিন অপসারণ করতে হয়, তারপরে লিভার ছেড়ে দেওয়া হয়, যার চার সেকেন্ড পরে বিস্ফোরণ ঘটে। গতি ড্রোনটি এই পুরো প্রক্রিয়াটিকে স্বয়ংক্রিয় করে তোলে।
কেশবকান্ত শর্মার কথায়, "এই ড্রোনটি কেবল অবস্থানে গ্রেনেড-ই ফেলে না - সেটি স্বয়ংক্রিয় গ্রেনেডের পিনটি সরিয়ে লিভার ছেড়ে দেয়। পিনটি অপসারণ না হলে, গ্রেনেডটি ফাটতে পারে না। আমাদের ড্রোনটি মাঝ আকাশে এই কাজ সম্পাদন করে এবং লক্ষ্যবস্তুতে বিস্ফোরণ নিশ্চিত করে। বিস্ফোরণের পরে, ড্রোনটি নিরাপদে ফিরে আসে।"
ড্রোনটি ৫০০ মিটার উচ্চতায় ৭.৫ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে পারে, অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পারে। এর ওজন মাত্র ২.৫ কিলোগ্রাম। 'গতি' ড্রোন পূর্ণাঙ্গ পরিসরে সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে।
শর্মা বলেন, "অপারেশন সিঁদুর"-এর সময় যে অপারেশনাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, সেখান থেকেই এই ধারণাটি তাঁর মাথায় এসেছিল। তিনি বলেন, "অপারেশন সিঁদুরের সময় আমাদের বাহিনীর জন্য কিছু সমস্যা দিয়েছিল, আমরা এমন একটি ড্রোন তৈরির কথা ভেবেছিলাম যা গ্রেনেড দিয়ে শত্রু ভূমিতে আক্রমণ করতে পারে এবং নিরাপদে ফিরে আসতে পারে।"
পোখরানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সামনে 'গতি' প্রদর্শন করা হয়েছিল, যার পরে সেনাবাহিনী শর্মার সংস্থাকে ২০টিরও বেশি ড্রোনের বরাত দিয়েছে।
আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে গভীর আঘাতের ক্ষমতার জন্য ড্রোন প্রযুক্তির উপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইঞ্জিনিয়র কেশবকান্ত শর্মা বিশ্বাস করেন- এক্ষেত্রে 'গতি' একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি বলেন, "আমাদের ড্রোন ৭.৫ কিমি দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে, গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটায় এবং ফিরে আসে। এটির সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে।"
অপারেশন সিঁদুরের পর দেশের সীমান্তে নিরাপত্তাকে আরও মজবুত করতে 'ড্রোন স্কোয়াড্রন' তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) ৷ অপারেশন সিঁদুর থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রাণঘাতী ইউএভি আক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই ভারত-পাক সীমান্তবর্তী পোস্টগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তোলার কাজ শুরু করে দিয়েছে বিএসএফ ৷ সেই কারণেই, ড্রোন স্কোয়াড্রন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স ৷ বর্ডার আউটপোস্টে (বিওপি) এই স্কোয়াড্রন মোতায়েন করা হবে ৷ স্কোয়াড্রনে থাকবে নজরদারির চালানোর জন্য এবং আক্রমণের জন্য ড্রোন, মনুষ্যবিহীন বিমান আনম্যান্ড এরিয়ল ভেইক্যাল (ইউএভি) এবং যন্ত্রগুলি পরিচালনার জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কর্মীরা ৷ সূত্রের খবর, চণ্ডীগড়ে বিএসএফ-এর ওয়েস্টার্ন কমান্ডের সদর দফতরের একটি কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হয়েছে। মূলত, সেই কন্ট্রোল রুম থেকে বিশেষ এই স্কোয়াড্রনটি পরিচালনা করা হবে ৷
