আজকাল ওয়েবডেস্ক: পরীক্ষায় টুকতে গিয়েই বিপত্তি। টোকাটুকি করার সময় ধরা পড়ে গিয়েছিলেন কলেজ পড়ুয়া। ঠিক মতো পরীক্ষা শেষ করতে পারেননি। সেই অপমানেই ১৩ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হলেন ওই কলেজ পড়ুয়া। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের জয়পুরে। রবিবার পুলিশ জানিয়েছে, ১৯ বছরের এক পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছেন। পরীক্ষায় টোকাটুকি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন ওই পড়ুয়া। সেই অপমানেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, ১৯ বছরের ওই কলেজ পড়ুয়া নির্মীয়মাণ একটি ভবনের ১৩ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। মৃত পড়ুয়ার নাম, প্রিয়াংশু রাজ। তিনি বিহারের পাটনার বাসিন্দা ছিলেন। মণিপাল ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্সের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পড়াশোনার জন্য কলেজের হস্টেলে থাকতেন। 

কলেজের পরীক্ষার সময় টুকতে গিয়েই ধরা পড়ে গিয়েছিলেন পড়ুয়া। যার পরেই তাঁর উত্তরপত্র ছিনিয়ে নিয়েছিলেন অধ্যাপক। ঠিক মতো পরীক্ষা শেষ করতে না পারায় মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন ওই পড়ুয়া। একটি স্কুটার ভাড়া করে কলেজ থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে এক নির্মীয়মাণ ভবনে পৌঁছে যান তিনি। ১৩ তলায় উঠে নিজের ফোন ও ব্যাগ রেখে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মঘাতী হন। 

ওই নির্মীয়মাণ ভবনের শ্রমিকরাই পুলিশে খবর পাঠান। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ুয়াকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে যাওয়ার পরেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সেই ১৩ তলা থেকে পড়ুয়ার ব্যাগ ও ফোন উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ। 

গত সপ্তাহেই এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। পড়াশোনার অত্যধিক চাপ। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়েও, আতঙ্কিত প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। অবশেষে বাবা-মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে চরম পদক্ষেপ করেন তিনি। গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গ্রেটার নয়ডায়। বুধবার পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম বর্ষের এক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া আত্মঘাতী হন। সম্ভবত পড়াশোনার চাপেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি। আত্মহত্যার আগে বাবা-মায়ের উদ্দেশে সুইসাইড নোট লিখেছিলেন তিনি। যেখানে ক্ষমা চান তিনি। সুইসাইড নোটে পড়ুয়া লিখেছিলেন, পড়াশোনার জন্য আর অর্থ ব্যয় হোক, তা চান না তিনি। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, মৃত পড়ুয়ার নাম, আকাশ দ্বীপ। দিল্লি টেকনিক্যাল ক্যাম্পাসের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। গ্রেটার নয়ডায় নলেজ পার্ক এলাকায় হোস্টেলে থাকতেন বিহারের বাসিন্দা আকাশ। গতকাল সন্ধ্যায় ওই হোস্টেলের ঘরে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান সহপাঠীরা। তড়িঘড়ি করে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। 

আকাশের ঘর থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। যেখানে বাবা-মায়ের উদ্দেশে তিনি লিখেছিলেন, 'বাবা-মা আমাকে ক্ষমা করো, আমাকে তোমরা দুর্বল ভেবো না। কখনও ভেবো না, আমি এটা অন্য কারও জন্য করছি‌। আমার মৃত্যুর জন্য আমিই দায়ী। আমার মৃত্যুর পর কাউকে বিড়ম্বনায় ফেলো না।' 

চিঠিতে আরও লেখা ছিল, 'আমি চাই না, আমার পড়াশোনার জন্য আর অর্থ ব্যয় হোক। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে যা হয়েছিল, আবারও একবছর পিছিয়ে যাক, তা আমি চাই না। চার বছর ধরে আমি এটা টেনে নিয়ে যেতে পারব না‌। অর্থ ব্যয় করে মিথ্যে আশা দেখাতে পারব না‌। আমি একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে খারাপ করেছিলাম। আবারও সেই ভুল করতে চাই না।'