আজকাল ওয়েবডেস্ক: শুক্রবার ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক। তার আগেই ফের দিল্লিকে শুল্ক হুঁশিয়ারি দিলেন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট। জানালেন, ৫০ শতাংশের উপরও শুল্ক চাপানো হতে পারে ভারতের উপর। ট্রাম্র-পুতিন বৈঠর সফল না হলেই ভারতের উপর আরও শুল্ক আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছেন বেসেন্ট। বুধবার ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, "আমরা রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর দ্বিতীয়বার শুল্ক চাপিয়েছি। যদি আলাস্কায় বৈঠকে পরিস্থিতি ভাল না হয়, তাহলে শুল্ক আরও বাড়তে পারে।"

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টের কথায়, "আমি মনে করি সবাই রাষ্ট্রপতি পুতিনের উপর হতাশ। আমরা আশা করেছিলাম যে তিনি আরও পূর্ণাঙ্গভাবে আলোচনার টেবিলে আসবেন। মনে হচ্ছে, তিনি আলোচনার জন্য প্রস্তুত হতে পারেন। এবং রাশিয়ান তেল কেনার জন্য আমরা ভারতীয়দের উপর সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করেছি। আমি দেখতে পাচ্ছি, যদি পরিস্থিতি ঠিকঠাক না হয়, তাহলে নিষেধাজ্ঞা বা সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।"

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ট্রাম্প ইতিমধ্যে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন। কিন্তু, ৭ অগাস্ট তিনি ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে আরও ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক চাপান। ফলে মোট শুল্কহার বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ শতাংশ। ট্রাম্প সরাসরি অভিযোগ করেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনে "যুদ্ধ মেশিনকে জ্বালানি দিচ্ছে" এবং তিনি এতে অসন্তুষ্ট। 

ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী মোদি স্পষ্টভাবে জানান, ভারত কখনোই কৃষকের স্বার্থে আপোস করবে না, অর্থনৈতিক ক্ষতির শঙ্কা থাকলেও না। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক ট্রাম্পের শুল্ক দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্তকে "অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য" বলে অভিহিত করেছে।

আরও পড়ুন-  আধার-ও প্রামাণ্য নথি, বিহারের এসআইআর মামলায় কমিশনকে বড় নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতের আমদানি বাজারনির্ভর এবং ১.৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া ভারত তার পূর্ববর্তী বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, যারা ভারতের সমালোচনা করছে, তারা নিজেরাও রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন চালিয়ে যাচ্ছে।

রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের প্রধান ক্রেতা চীন। কিন্তু, চীনের উপর বাড়তি শুল্ক নিয়ে আর হইহই করছে না ওয়াশিংটন। এই সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে বেসেন্ট বলেন, "আমি প্রেসিডেন্টের চেয়ে এগিয়ে কিছু বলব না। তবে প্রেসিডেন্ট জানেন কীভাবে সুবিধা আদায় করতে হয়। এবং তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে স্পষ্ট করে বলবেন যে, সমস্ত বিকল্প টেবিলে রয়েছে।"

নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো যেতে পারে বা শিথিল করা যেতে পারে কিনা সমন্ধে প্রশ্ন করা হলে বেসেন্ট বলেন, "নিষেধাজ্ঞাগুলি বাড়ান যেতে পারে, শিথিল করা যেতে পারে। তাদের একটি নির্দিষ্ট জীবন থাকতে পারে। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে পারে। আপনি জানেন, বিশ্বজুড়ে এই রাশিয়ান ছায়া জাহাজের বহর রয়েছে যা আমি মনে করি- আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারি।" 

প্রসঙ্গত বেসেন্ট এই বছর কানাডায় জি৭ বৈঠকে আলোচনায় উপস্থিত নেতাদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে- "তাঁরা কী চীনের উপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে ইচ্ছুক? দেখা গেল সকলে জল মাপছেন।।" তিনি আরও বলেন যে, ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধে রক্তপাত বন্ধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"