আজকাল ওয়েবডেস্ক: শুক্রবার সকালে রাজস্থানের ঝালাওয়ারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। জানা গিয়েছে, ঝালাওয়ারের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদ ধসে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৭ জন ছাত্রের। জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় আহত হয়েছে ১৭ জনেরও বেশি ছাত্র। জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় ছাত্ররা ক্লাসে উপস্থিত ছিল। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ঝালাওয়ারের পিপলোদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রত্যক্ষদর্শী এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০ বছর পুরনো স্কুল ভবনটির ছাদ পাথরের স্ল্যাব দিয়ে তৈরি করা ছিল।
ফলে, তা ভেঙে পড়তে ভয়ঙ্কর চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকাজুড়ে। ছাদ ভেঙে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্কুল চত্বরে হাহাকার শুরু হয়। দ্রুত উদ্ধার অভিযান শুরু হয় পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে। ঝালাওয়ারের পুলিশ সুপার অমিত কুমার জানিয়েছেন, ‘এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চারজন পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে, ১৭ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে ঝালাওয়ারের স্থানীয় হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে তিন-চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক’। জানা গিয়েছে, নিহতরা সপ্তম শ্রেণির ছাত্র এবং প্রত্যেকেই ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গভীর শোক প্রকাশ করেন।
তিনি এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে লেখেন, ‘ ঝালাওয়ারের একটি স্কুলে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। এই কঠিন সময়ে আমি ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্র ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে আছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। স্থানীয় প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সহায়তা প্রদান করছে’। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা এই ঘটনাকে অত্যন্ত ‘মর্মান্তিক এবং হৃদয়বিদারক’ ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করে জানান, ‘আহত পড়ুয়াদের যথাযথ চিকিৎসার নির্দেশ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের দেওয়া হয়েছে। ঈশ্বর যেন মৃতদের আত্মাকে চিরশান্তি দান করেন ও পরিবারের সদস্যদের এই শোক সহ্য করার শক্তি দেন’।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী মদন দিলাওয়ার জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হবে। তাঁর কথায়, ‘কে দায়ী, কেন ২০ বছর পুরনো এই বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ছাদ এখনও ব্যবহৃত হচ্ছিল, তা বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখা হবে’। এই ঘটনায় গোটা রাজ্য জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, এবং দোষীদের চিহ্নিত করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা। জানা গিয়েছে, বাড়িটি ভেঙে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় বাসিন্দারা আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে সহায়তা করার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে জেলা প্রশাসন এবং দুর্যোগ ত্রাণ দলকে উদ্ধার অভিযানের জন্য ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। ওই স্কুলবাড়িটি এমনিতেই জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। এর আগেও একাধিকবার স্কুলবাড়িটির স্বাস্থ্য নিয়ে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যদিও তাতে কোনও কাজ হয়নি।
দিন কয়েক আগেই সামনে এসেছিল আরও এক ঘটনা। জানা যায়, ভোপালের বারখেদা পাঠানিতে পিএম শ্রী স্কুলে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটেছে। দিন কয়েক আগে ভরা ক্লাসরুমে ভেঙে পড়ে আস্ত সিলিং ফ্যান। ফ্যানটি ভেঙে পড়ে পড়ুয়াদের উপরেই। অনেকেই আতঙ্কে পালাতে পারলেও, কয়েকজন তাতেই চাপা পড়ে। তার জেরে ঘটে বিপত্তি।স্কুলের তরফে জানা গেছে, ঘটনার দিন প্রায় সকল পড়ুয়াই উপস্থিত ছিল। ফলে ফাঁকা ছিল না ক্লাসরুম। মনোযোগ দিয়ে সকলেই পড়া বুঝছিল। ক্লাসে ছিলেন একজন শিক্ষিকা। বোর্ডে লিখে পড়া বোঝাচ্ছিলেন তিনি। মাঝ পথেই বিকট শব্দ শুনতে পান তিনি। মাথা তুলে উপরে তাকাতেই দেখেন, প্লাস্টার খসে পড়ছে। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই চলন্ত সিলিং ফ্যানটি পড়ুয়াদের উপরে ভেঙে পড়ে।
