আজকাল ওয়েবডেস্ক: তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোরে কলেজছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে গুলি করে জখম করল পুলিশ। রবিবার রাতে মর্মান্তিক ঘটনার পর সোমবার সকালে এক বিশেষ অভিযানে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, থাবাসি, করুপ্পাসামি ও কালিস্বরন নামে তিন অভিযুক্ত সকলেই সিভাগঙ্গা জেলার বাসিন্দা এবং কোয়েম্বাটোরে নির্মাণকাজে যুক্ত ছিলেন। অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধেই একাধিক অপরাধমূলক মামলা রয়েছে।
পাশাপাশি, এই গণধর্ষণের ঘটনাতেও আগেই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ঘটনাটি ঘটে রবিবার রাতে। জানা যায়, রবিবার রাতে এক কলেজছাত্রী ও তাঁর এক বন্ধু গাড়িতে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন।
সেই সময় তিনজন অভিযুক্ত তাঁদের গাড়ির পথ আটকায়, ছাত্রীটির বন্ধুকে আক্রমণ করে এবং তাঁকে গুরুতর জখম করে। তারপর জোর করে ছাত্রীটিকে গাড়ি থেকে টেনে নিয়ে যায় এবং বিমানবন্দরের কাছাকাছি এক নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার পর পুলিশ একাধিক বিশেষ দল গঠন করে তল্লাশি শুরু করে। সোমবার সকালে একটি মন্দিরের কাছে অভিযুক্তদের ঘিরে ফেলে পুলিশ। সেই সময় অভিযুক্তরা ধারালো অস্ত্র (হাসুয়া) দিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করে।
এতে হেড কনস্টেবল চন্দ্রশেখর আহত হন। তাঁর হাত ও কব্জিতে গভীর ক্ষত হয়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালালে তিনজনের পায়ে গুলি লাগে বলে জানা গিয়েছে।
এরপর তাঁদের গ্রেপ্তার করে কোয়েম্বাটুর জেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত পুলিশ অফিসারকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনার পর গোটা তামিলনাড়ু জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এডিএমকে সাধারণ সম্পাদক এডাপাড়ি কে. পালানিস্বামী রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘ডিএমকে সরকারের আমলে রাজ্যের মহিলারা আর নিরাপদ নন। অইএডিএমকে আমলে তামিলনাড়ু ছিল দেশের অন্যতম নিরাপদ রাজ্য।’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এল. মুরুগন বলেন, ‘এই ঘটনাটি প্রমাণ করে রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ কোনওভাবেই কমেনি।’ বিজেপি রাজ্য সভাপতি নৈনার নাগেন্দ্রন রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন।
কোয়েম্বাটুর দক্ষিণের বিধায়ক ও বিজেপির মহিলা মোর্চা নেত্রী বনথি শ্রীনিবাসন বলেন, ‘এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ডিএমকে সরকারের আমলে রাজ্যে কোনও আইন নেই’।
বিজেপি নেতা কে. আন্নামালাই মন্তব্য করেন, ‘ডিএমকে ক্ষমতায় আসার পর থেকে সমাজবিরোধীরা আর আইনের ভয় করছে না। প্রশাসন ও পুলিশের প্রতি তাদের কোনও ভয় নেই।’ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
