আজকাল ওয়েবডেস্ক: ওজন কমিয়ে রোগা ছিপছিপে গড়নের হয়ে ওঠা, মুখের কথা নয়। স্বাস্থ্যকর ডায়েট, কঠোর পরিশ্রম, শরীরচর্চার মাধ্যমেই শুধুমাত্র তা সম্ভব। এমনকী উপায় জানা থাকলেও, ওজন কমানোর পথচলা সহজ নয়। তবে মায়ের জন্য কী না সম্ভব! 

 

২২ বছরের শৌভিক সাহু। সম্প্রতি ৮৫ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলেছিলেন। আগে ১৬০ কেজি ওজন ছিল। একটানা শরীরচর্চা ও হাই-প্রোটিন ডায়েটের মাধ্যমে ওজন কমাতে পেরেছেন তিনি। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই আবেগঘন পোস্ট করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, শুধুমাত্র মায়ের স্মৃতিতেই ৮৫ কেজি ওজন কমাতে পেরেছেন তিনি। 

 

যখন ১৬০ কেজি ওজন ছিল, তখন উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস, আর্থারাইটিস, শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগতেন তিনি। এমন দেহের গঠনের কারণেই মায়ের শেষকৃত্যের সময় অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন শৌভিক। করোনাকালে মায়ের মৃত্যু হয়েছিল। শেষকৃত্যে পিপিই কিট পরে যাওয়ার অনুমতি ছিল। কিন্তু সেই পিপিই কিট ছিল অত্যন্ত ছোট। যা পরতেই কসরত করতে হয় শৌভিককে। 

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় তরুণ জানিয়েছেন, তিনি দুটি পিপিই কিট পরেই মায়ের শেষকৃত্যে হাজির হন। সেদিনই মনস্থির করেন, যেনতেনভাবে ওজন কমিয়ে সুস্থ জীবনযাপন করবেন। অবশেষে ৮৫ কেজি ওজন কমাতে পেরেছেন। এখন শৌভিকের ওজন ৭৫ কেজি। 

 

পোস্টে তরুণ আরও জানিয়েছেন, 'এখন আর আগের মতো প্রতিদিন রক্তচাপ মাপতে হয় না। খাবারের পর আর ওষুধ খেতে হয় না। ওজন ঝরানোর পর আমি সবধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছি। মাকে চিন্তামুক্ত করতেই সুস্থ থাকার প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। ওই পথচলা শুধুমাত্র মায়ের জন্য।' 

 

গত মার্চ মাসেই এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। মাত্র কয়েক মাসেই কমল ৪৫ কেজি ওজন। রাতারাতি ওজন কমিয়ে যুবতী রোগা ছিপছিপে। তবে তাঁর ওজন কমানোর জার্নিটা আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো নয়। এর পিছনেও রয়েছে রহস্য। যুবতী জানিয়েছেন, স্বামী ও চাকরি ছাড়তেই তিনি রাতারাতি রোগা হতে পেরেছেন। কীভাবে?

 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ৩৮ বছর বয়সি যুবতীর নাম কোনি স্টয়ার্স। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ডের বাসিন্দা। সংবাদমাধ্যমকে কোনি জানিয়েছেন, তিনি মোটা অঙ্কের বেতনের চাকরি করতেন। এক কন্যাসন্তানের মা তিনি। স্বামীর সঙ্গে সংসারেও ভাল সময় কাটছিল। কিন্তু কোনওটাতেই তিনি আদতে সুখী ছিলেন না। বাইরে থেকে দেখলে, তাঁর জীবন সুখময় মনে হলেও, যুবতীর মনে হত, চাকরি ও সংসার কোনওটাতেই তিনি আদতে খুশি নন। 

 

চাকরি ও সংসারের চাপে হতাশায় ভুগছিলেন। লকডাউনের সময় নিজেকে খুশি করতে মদ্যপান ও ভাজাভুজি খাওয়া শুরু করেন‌। শুধুমাত্র একবছরেই তাঁর ওজন বেড়ে যায় ১০০ পাউন্ড। প্রায় ৩০০ পাউন্ড ওজনের কোনি শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন। এরপরই তিনি জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেন। 

 

২০২১ সালে স্বামীর থেকে আলাদা হওয়ার ঘোষণা করেন। ঠিক এরপরই চাকরি ছেড়ে দেন। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ করতে ব্যবসা শুরু করেন‌। তখনই ওজন কমানোর জার্নি শুরু। কোনি জানিয়েছেন, তিনি রোলার স্কেটিং করা শুরু করলেন। তাঁর কথায়, 'স্কেটিং শুরু করার পর স্বাধীন জীবনের স্বাদ পেতে শুরু করলাম। ফ্রেশ লাগতে শুরু করে। সেই সময় থেকেই ওজন কমানোর জার্নি শুরু হয়।' 

 

ডায়েট ও স্কেটিং করেই কয়েক মাসের মধ্যে ৪৫ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলেছেন কোনি। এখনও জারি রয়েছে তাঁর ওজন কমানোর প্রক্রিয়া। ব্যবসায় তিনি সফলও। জীবনের নতুন অধ্যায়ে যারপরনাই খুশি তিনি।