আজকাল ওয়েবডেস্ক: হিমাচল প্রদেশে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে৷ উনা জেলার একটি সরকারি হাসপাতালে দুই নার্স কর্তব্যরত অবস্থায় মদ্যপান ও ধূমপানের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। খবর অনুযায়ী, এই গুরুতর অনৈতিক ও শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার। অর্থাৎ চলতি মাসের ৫ অগাস্ট রাতে। হাসপাতালের ভিতরে এমন আচরণ শুধুমাত্র হাসপাতালের নৈতিক পরিবেশের পরিপন্থী নয়, বরং রোগীদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ঘটনা ঘিরে তীব্র শোরগোল। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত দুই যুবতী নার্স হাসপাতালের নাইট ডিউটিতে কাজ করছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন মেডিক্যাল ওয়ার্ডে এবং অপরজন সার্জিক্যাল ওয়ার্ডের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরা রাতভর, বিশেষ করে রাত ১০টা থেকে ভোর ২ টো পর্যন্ত, হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বসে মদ্যপান করছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাঁরা কেবল মদ পান করেই থেমে থাকেননি, হাসপাতাল প্রাঙ্গণে প্রকাশ্যে ধূমপানও করেছেন। এটি সম্পূর্ণভাবে আইন ও হাসপাতালের নীতিমালার পরিপন্থী।

ঘটনার সূত্রপাত ঘটে যখন দুই নার্সের একজন অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে হঠাৎ বমি করতে শুরু করেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি তদন্ত করা হয়। এই ঘটনার মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসে যে, শুধু ৫ অগাস্ট নয়, এর আগের রাত অর্থাৎ ৪ অগাস্ট রাতেও তাঁরা একই ধরনের কাজ করেছেন। জানা গিয়েছে, ওই রাতে তাঁরা হাসপাতালের সার্জিক্যাল ও মেডিক্যাল ওয়ার্ড উভয় স্থানে বসেই মদ্যপান করেন এবং নিজেদের নিত্যদিনের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে অবহেলা করেন।

পুরো ঘটনায় সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এ ধরনের অনৈতিক কাজ তাঁরা একদিন নয়, পরপর দুই দিন করে যাচ্ছিলেন। এই ঘটনার জেরে প্রথম আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেন হাসপাতালের একজন প্রশিক্ষণরত নার্স। তিনি জানান, অভিযুক্ত নার্সেরা কর্তব্যরত অবস্থায় হাসপাতালে ওয়ার্ডে বসেই মদ্যপান করছিলেন, এমনকি রাতভর এমন চলতে থাকে। প্রশিক্ষণার্থী নার্সের বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁরা ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত একাধিকবার মদের বোতল ও ধূমপানের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন।

ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, দুই নার্সের মধ্যে একজন অন্য একটি হাসপাতালে ডেপুটেশনে ছিলেন। এই ঘটনার জেরে নার্সের ডেপুটেশন অবিলম্বে বাতিল করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুতরভাবে গ্রহণ করেছে এবং সংশ্লিষ্ট সমস্ত তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ইউটিউব দেখে খুন! প্রেমিকের সঙ্গে মিলে এ কী করলেন যুবতী? সত্য ঘটনায় শিউরে উঠবেন আপনিও 

উনা আঞ্চলিক হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট ডঃ সঞ্জয় মানকোটিয়া এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান, 'ঘটনাটি অত্যন্ত লজ্জাজনক ও দুঃখজনক। হাসপাতালের মতো একটি পবিত্র ও সংবেদনশীল স্থানে এ ধরনের কর্মকাণ্ড একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

বর্তমানে পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। ঘটনার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট নার্সদের সাময়িকভাবে ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকেও এই ঘটনার প্রতি বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, খুব শীঘ্রই তদন্ত শেষ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ হাসপাতালের পরিবেশ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার সাহস না পায়। নেওয়া হবে আইনি পদক্ষেপও৷