আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রবল বৃষ্টিতে ভাসছে বাণিজ্য নগরী। টানা তিনদিনের তুমুল বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা। দুর্যোগের কালো মেঘ মঙ্গলবারেও সরল না। এই পরিস্থিতিতে মিঠি নদীর জলস্তর প্রায় বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। আজকে আরও বৃষ্টির জেরে নদীর জলস্তর বিপদসীমা পার করতে পারে। 

 

মৌসম ভবনের তরফে আজ, মঙ্গলবারেও মুম্বই, রায়গড়, থানে জেলায় অতি প্রবল বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ জানিয়েছেন, রাজ্যের সব জেলাতেই আজ অতি প্রবল বৃষ্টির লাল ও কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আরও তিনদিন থাকবে। ২১ আগস্ট পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের অধিকাংশ এলাকাতেই প্রবল বৃষ্টির লাল ও হলুদ সর্তকতা থাকবে। 

 

মঙ্গলবারেও মুম্বই, থানে, রায়গড়, পালগড়, রত্নগিরিতে স্কুল, কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে মহারাষ্ট্রে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নান্দেদ। শুধুমাত্র এই জেলাতেই ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মুম্বই বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, শুধুমাত্র মঙ্গলবারেই ২৫০-র বেশি বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। শতাধিক বিমান দেরিতে ওঠানামা করছে। 

 

আরও পড়ুন: 'জল আছে কাকু?', তেষ্টা মেটাতে গিয়ে অটো চালকের যৌন লালসার শিকার নাবালিকা, ফের সেই বিজেপি শাসিত রাজ্যে

 

প্রবল বর্ষণের জেরে মুম্বইয়ে সমস্ত স্কুল-কলেজ ইতিমধ্যেই বন্ধ রাখার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল গতকাল। বিএমসির তরফে জানানো হয়েছে, প্রবল বর্ষণের জেরে মুম্বইয়ের সব স্কুলে ছুটি দেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় মৌসম ভবন জানিয়েছে, মুম্বইয়ের জন্য আগে জারি করা কমলা সতর্কতা বদলে বর্তমানে লাল সতর্কতা জারি করা হচ্ছে। টানা বৃষ্টিপাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জল জমে পরিস্থিতি ক্রমেই গুরুতর হয়ে উঠছে। গ্রেটার মুম্বই পুলিশের কমিশনার জানিয়েছেন, ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারির মধ্যেই প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় একাধিক এলাকায় জলজট ও দৃশ্যমানতা হ্রাসের ঘটনা ঘটছে’।

 

সাধারণ নাগরিকদের অপ্রয়োজনীয় যাতায়াত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি টুইট বার্তায় সতর্ক করে বলেন, ‘অত্যাবশ্যক না হলে বাইরে বেরোবেন না, যাতায়াত পরিকল্পনা করে করুন। কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে ১০০ / ১১২ / ১০৩ নম্বরে যোগাযোগ করুন’। অন্যদিকে, মুম্বইয়ের প্রাণরেখা হিসেবে পরিচিত লোকাল ট্রেন পরিষেবা দেরিতে চলছে। অফিস যাত্রীদের মতে, ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত দেরি হচ্ছে ট্রেন চলাচলে। 

 

নিচু এলাকাগুলি যেমন আন্ধেরি সাবওয়ে ও লোকহান্ডওয়ালা কমপ্লেক্সে অতিরিক্ত জল জমে গিয়েছে। এতে ট্রাফিক চলাচলে চরম সমস্যা দেখা দেয়। শহরের প্রাণ হিসেবে পরিচিত লোকাল ট্রেন পরিষেবাও এই দুর্যোগে ব্যাহত হয়েছে। জানা গিয়েছে সেন্ট্রাল রেলওয়ের হারবার লাইনে কিছু নিম্নভূমি অংশে ট্র্যাকে জল জমে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। বিশেষ করে কুরলা ও তিলকনগর স্টেশনের মধ্যবর্তী অংশে ট্র্যাক চেঞ্জিং পয়েন্টে সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে পরিষেবাতেও অনেক দেরি হয়।

 

শহরের একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শিয়নের গান্ধী মার্কেট সংলগ্ন রাস্তাগুলি পুরোপুরি জলের তলায় চলে গেছে। আবহাওয়া দপ্তর সোমবার মুম্বইয়ের পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের উপকূলবর্তী কয়েকটি জেলা রায়গড়, রত্নাগিরি, সাতারা, কোলহাপুর ও পুনেতেও লাল সতর্কতা জারি করেছে।