আজকাল ওয়েবডেস্ক: সামাজিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মানসিক ব্যাধি নিয়ে মানুষের সচেতনতা আগের থেকে কিছুটা বেড়েছে। তবুও এখনও মানসিক অসুখকে অনেকেই ‘বড়লোকের ব্যামো’ বলে কটাক্ষ করেন। এর নেপথ্যে একাধিক আর্থসামাজিক কারণ রয়েছে। অধিকাংশ মানুষের ধারণাই নেই যে মানসিক অসুখ কত জটিল ও আলাদা আলাদা ধরনের হতে পারে। ‘বাইপোলার ডিজঅর্ডার’-এর কথাই ধরা যাক। এটি এমন এক ধরনের মানসিক রোগ যেখানে একজন ব্যক্তির মধ্যে অস্বাভাবিকভাবে তীব্র আনন্দ এবং গভীর বিষণ্নতার দোদুল্যমান পর্যায় দেখা যায়। বিষয়টিকে ‘মুড সুইং’ বলে ভুল করাও খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এই সমস্যাটি একেবারেই সরল নয়।
আরও পড়ুন: প্রকাণ্ড করতে গিয়েছিলেন লিঙ্গ, ফস করে পুরোটাই কেটে ফেললেন চিকিৎসক! মাথায় হাত রোগীর
বিখ্যাত হাসপাতাল মায়ো ক্লিনিকের প্রতিবেদন জানাচ্ছে, এই রোগে আক্রান্ত হলে রোগীর মেজাজ, চিন্তাভাবনা এবং আচরণের মধ্যে চরম পরিবর্তন আসে। কি আকস্মিক পরিবর্তন রোগীর দৈনন্দিন জীবনকে কঠিন করে তোলে। রোগীর মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মূলত দু’টি ভাবনার স্তর দেখতে পাওয়া যায়। একটি আনন্দ এবং অপরটি বিষাদ। ম্যানিয়া বা আনন্দের সময় রোগী হঠাৎ করেই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী, উদ্যমী এবং আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন। আবার উল্টোদিকে বিষাদ বা ডিপ্রেশনের সময় আচিমা বেড়ে যায় হতাশা এবং ক্লান্তি। অতি সাধারণ কাজেও আগ্রহহীন হয়ে পড়েন রোগী।
আরও পড়ুন: প্রকাণ্ড করতে গিয়েছিলেন লিঙ্গ, ফস করে পুরোটাই কেটে ফেললেন চিকিৎসক! মাথায় হাত রোগীর
আপাত ভাবে সাধারণ মনে হলেও এই দু’টি স্তরেই, বিশেষ কিছু উপসর্গ দেখতে পাওয়া যায়।
ম্যানিয়া বা হাইপোম্যানিয়ার উপসর্গ
১। অস্বাভাবিক রকম আনন্দিত, উত্তেজিত হয়ে পড়া
২। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস
৩। ঘুমের প্রয়োজন কমে যাওয়া
৪। অতিরিক্ত কথা বলা বা খুব দ্রুত কথা বলা
৫। একসঙ্গে অনেক চিন্তা আসা বা একটি চিন্তা থেকে দ্রুত অন্য ভাবনায় চলে যাওয়া
৬। মনোনিবেশ করতে অসুবিধা হওয়া
৭। অতিরিক্ত কাজকর্মে জড়িত হওয়া বা নতুন নতুন পরিকল্পনা করা
৮। বেপরোয়া আচরণ করা, যেমন অতিরিক্ত খরচ করা, ঝুঁকিপূর্ণ যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা বা ভুল ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেওয়া
ডিপ্রেশনের উপসর্গ
১। দীর্ঘস্থায়ী দুঃখবোধ, হতাশা বা শূন্যতা অনুভব করা
২। আগে আনন্দ দিত এমন কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা
৩। ক্লান্তি বা শক্তিহীনতা অনুভব করা
৪। ঘুমের সমস্যা, যেমন অতিরিক্ত ঘুমানো বা ঘুমোতে অসুবিধা হওয়া
৫। ক্ষুধার পরিবর্তন, ওজন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া
৬। মনোনিবেশ করতে বা সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হওয়া
৭। নিজেকে মূল্যহীন বা অপরাধী মনে করা
৮। মৃত্যু বা আত্মহত্যা নিয়ে চিন্তা করা
রোগী ভেদে এই উপসর্গগুলির তীব্রতা এবং স্থায়িত্ব বিভিন্ন হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে ম্যানিয়া বা ডিপ্রেশনের এক একটি পর্যায় কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস ধরে চলতে পারে। এই ধরনের কোনও সমস্যা দেখতে পেলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে মনোবিদের কাছেও যেতে হতে পারে। মনে রাখবেন শরীর ভাল রাখতে মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখা জরুরি। তাই মনের অসুখকে অবহেলা করবেন না।
