ক্রমশ বাড়ছে জীবনধারা সংক্রান্ত রোগ। নেপথ্যে এক জায়গায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা, শরীরচর্চায় অনীহা, ভুল খাদ্যাভাস সহ বিভিন্ন কারণ। ফলে অজান্তে শরীরে থাবা বসাচ্ছে স্থূলতা, ব্লাড সুগার, খারাপ কোলেস্টেরলের মতো নানা সমস্যা। আর এই সব কিছুর মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে হৃদরোগ। আজকাল কমবয়সিদেরও হার্ট অ্যাটাকের কবলে পড়ে প্রাণ হারানোর ঘটনা সামনে আসছে।
হার্টের যত্ন নেওয়া কিন্তু খুব কঠিন নয়। হৃদরোগকে ঠেকাতে হাঁটার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে অনেকেই মনে করেন হার্টকে সুস্থ রাখতে হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটা প্রয়োজন। কিন্তু নতুন একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, একেবারে ভিন্ন তথ্য। গবেষকরা বলছেন, দিনে মাত্র ১০–১৫ মিনিট একটানা হাঁটলেই হার্ট অনেক বেশি সুস্থ থাকে।
গবেষকরা হাজার হাজার মানুষের হাঁটার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, যারা খুব কম হাঁটেন বা সারাদিন বেশি সময় বসে কাটান, তারাও যদি দিনে একবার ১০-১৫ মিনিট একটানা হাঁটেন, তাঁদের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। আবার যারা দিনে বার বার ছোট ছোট করে ১-২ মিনিট হাঁটেন, তাঁদের তুলনায় একটানা ১০-১৫ মিনিট হাঁটার উপকারিতা অনেক বেশি। অর্থাৎ আপনি দিনে মোট কত পা হাঁটলেন সেটা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল আপনি কতক্ষণ বিরামহীন হাঁটলেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ১০–১৫ মিনিট নিরবচ্ছিন্ন হাঁটা শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন আনে। এতে রক্তসঞ্চালন ভাল হয়, ফলে স্বাভাবিকভাবে হার্ট সুস্থ থাকে। সারাদিন বসে থাকার ফলে শরীরে যে ক্ষতি হয় অর্থাৎ ধমনী শক্ত হওয়া, রক্ত জমাট বাঁধা তা কমে। ব্লাড প্রেশার, সুগার ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হাঁটলে মনও শান্ত হয়, স্ট্রেস কমে যা হার্টের জন্য খুবই ভাল।
কারা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন? গবেষণা বলছে, যারা ব্যায়াম করতে পারেন না বা সময় পান না, যারা সারাদিন কম্পিউটারে বসে কাজ করেন, প্রবীণ ব্যক্তিরা, অতিরিক্ত ওজন বা উচ্চ রক্তচাপের রোগী-এদের সকলের জন্যই এই ১০–১৫ মিনিটের হাঁটা অত্যন্ত কার্যকর।
কীভাবে হাঁটা শুরু করবেন? দিনের যে কোনও সুবিধাজনক সময় বেছে নিন। দ্রুতগতিতে নয়, স্বাভাবিক ছন্দে ১০–১৫ মিনিট বিরতি ছাড়াই হাঁটুন। ধীরে ধীরে ২০–২৫ মিনিটে হাঁটার সময় বাড়াতে পারেন। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন হাঁটলেই যথেষ্ট।
