আজকাল ওয়েবডেস্ক: তোমার প্রিয় ঋতু বর্ষা তাই, রাস্তার কোণে কোণে জল জমা চাই! প্রেমিকরা বর্ষায় রোমান্টিক হতে পারলেও ভেজা মোজা আর স্যাঁতসেঁতে পা নিয়ে বিড়ম্বনায় ভোগেন অনেকেই। আর তার সঙ্গে নিঃশব্দে এসে হাজির হয় ‘অ্যাথলিটস ফুট’। নাম শুনে যাঁরা ভাবছেন এ বুঝি শুধু অ্যাথলিটদেরই সমস্যা, তাঁদের জানা দরকার, এই ছত্রাকঘটিত রোগে যে কেউই আক্রান্ত হতে পারেন। বিশেষত বর্ষাকালে এর বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। ঠিক কী এই রোগ? কেনই বা বৃষ্টি পড়া মাত্রই বাড়তে থাকে এর প্রকোপ? আর কীভাবেই বা নিজেকে আগলে রাখবেন?
কী এই অ্যাথলিটস ফুট?
অ্যাথলিটস ফুট টিনিয়া পেডিস নামের এক ধরনের ছত্রাকজনিত সংক্রমণ যা সাধারণত পায়ের পাতার পাতলা চামড়ায়, বিশেষ করে আঙুলের ফাঁকে দেখা দেয়। চামড়া লাল হয়ে যায়, চুলকানি হয়, ফাটল ধরতে পারে, কখনও কখনও জলেভরা ছোট ছোট ফোসকা-ও দেখা যায়। অসুখটি সংক্রামক, মানে এক জনের থেকে আরেক জনের শরীরে ছড়াতে পারে সহজেই। বিশেষ করে রোগীর জুতো, তোয়ালে বা মোজা ব্যবহার করলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
বর্ষাকালে কেন হয় বেশি?
বর্ষার বাতাসে আর্দ্রতা এবং জল-কাদা বেশি থাকে। পায়ে ঘাম জমা, নোংরা জলে পা দেওয়া বা ভেজা জুতো-মোজা পরে অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করা এই সময়ে একেবারে স্বাভাবিক ঘটনা। এই স্যাঁতসেঁতে পরিবেশই হল ছত্রাক জন্মানোর আদর্শ ক্ষেত্র। বিশেষ করে বন্ধ থাকা জুতোর মধ্যে যদি পা ঘেমে যায় এবং দীর্ঘ সময় ধরে ভেজা থাকে, তাহলে ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকগুণ বেড়ে যায়। তাছাড়া বর্ষার সময় পায়ের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা একটু কঠিন হয়ে পড়ে, সেটাও একটা বড় কারণ।
আরও পড়ুন: ‘ধরবে নাকি?’ পুরুষাঙ্গ দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেন প্রযোজক! টাকার বিনিময়ে সঙ্গমও করেন কামসূত্রের নায়িকা?
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত বীর্যপাতে মৃত্যু! শুক্রাণু দান করার নেশায় ডাক্তারি পড়ুয়ার করুণ পরিণতি জানলে চোখে জল আসবে
কীভাবে চিনবেন অ্যাথলিটস ফুট?
আঙুলের ফাঁকে চামড়া ফেটে যাওয়া বা ছড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত চুলকানি ও জ্বালা, পায়ে হঠাৎ করে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ হওয়া, জলেভরা ফোসকা (কখনও কখনও), চামড়া খসখসে হয়ে যাওয়া - এই সবই এই রোগের লক্ষণ।
প্রতিরোধ করবেন কীভাবে?
১. পা শুকনো রাখুন। ভিজে গেলে দ্রুত তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন। আঙুলের ফাঁকে যেন জল না জমে। দিনে দু’বার পা ধুয়ে ভাল করে শুকিয়ে নিতে হবে।
২. সুতির মোজা ও বাতাস চলাচল করে এমন জুতো পরুন। সিনথেটিক কাপড়ের মোজা বা ঘাম জমে যায় এমন জুতো ছত্রাকের প্রজননের আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে।
৩. মোজা ও তোয়ালে শেয়ার করবেন না। সংক্রমণ এড়াতে নিজের ব্যবহৃত জিনিসপত্র অন্য কারও সঙ্গে ভাগ করবেন না।
৪. অ্যান্টিফাঙ্গাল পাউডার ব্যবহার করুন: বাইরে বেরোনোর আগে বা ঘাম হলে পায়ে ছত্রাকনাশক পাউডার লাগান। প্রয়োজনে অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই যা করার করবেন।
৫. বদ্ধ ঘরে বা কমন বাথরুমে সাবধান। কমন শাওয়ার ব্যবহার করার পর ভা করে পা ধুয়ে মুছে নিতে হবে। প্রয়োজনে চটি পরেই প্রবেশ করুন।
চিকিৎসা দরকার কবে?
প্রাথমিক অবস্থায় সাধারণ অ্যান্টিফাঙ্গাল পাউডার বা ক্রিমে আরাম মিললেও যদি সংক্রমণ বেড়ে যায়, চামড়া ফেটে রক্তপাত শুরু হয় বা ফোসকা ফুলে ওঠে, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণের ক্ষেত্রে ছত্রাকনাশক ওষুধ খেতেও হতে পারে।
