আজকাল ওয়েবডেস্ক: গোপনাঙ্গে ঘা, ফুসকুড়ি কিংবা চুলকানি, কোনও মতেই হালকা ভাবে নেওয়া উচিত নয়। কারণ এর নেপথ্যে থাকতে পারে সিফিলিস নামের একটি যৌনরোগ। এই রোগ ট্রেপোনেমা প্যালিডাম নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়। এটি একটি জটিল রোগ, যা বিভিন্ন পর্যায়ে দেখা দিতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না করালে প্রাণ নিয়েও টানাটানি হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর পৃথিবীতে প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন। ভারতের মতো জনবহুল দেশে এই রোগে আক্রান্ত হওয়া মোটেই অস্বাভাবিক নয়।


সিফিলিস প্রধানত যৌন সংসর্গের মাধ্যমে ছড়ায়। এটি সংক্রামিত ব্যক্তির ত্বকের ক্ষত বা মিউকাস মেমব্রেনের সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। অন্তঃসত্ত্বা নারী থেকে তার শিশুর মধ্যেও সিফিলিস ছড়াতে পারে, একে জন্মগত সিফিলিস বলে।

সিফিলিসের একাধিক পর্যায় থাকে, যেগুলিতে আলাদা আলাদা উপসর্গ দেখা যায়। দেখে নেওয়া যাক সেগুলি কী কী। কেমন তার উপসর্গ।

প্রাথমিক সিফিলিস: এই পর্যায়ে, সংক্রমণের স্থানে (সাধারণত যৌনাঙ্গ, মুখ বা মলদ্বার) ব্যথাহীন ঘা দেখা দেয়। এই ঘা সাধারণত তিন থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়, তবে এর মানে এই নয় যে সংক্রমণ সেরে গেছে।

দ্বিতীয় পর্যায়ের সিফিলিস: ঘা সেরে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পরে, শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে হাতের তালু এবং পায়ের তলায়। এছাড়াও চুলকানি জ্বর, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা এবং লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়।

সুপ্ত সিফিলিস: এই পর্যায়ে, কোনও লক্ষণ নাও থাকতে পারে। চিকিৎসা না করালে, সংক্রমণ বছরের পর বছর ধরে শরীরে নীরবে থেকে যেতে পারে।

তৃতীয় পর্যায়ের বা টারশিয়ারি সিফিলিস: এই পর্যায়ে সংক্রমণ মস্তিষ্ক, স্নায়ু, চোখ, হৃদপিণ্ড এবং অন্যান্য অঙ্গের গুরুতর ক্ষতি করতে পারে। এমনকী পক্ষাঘাত, অন্ধত্ব, হৃদরোগ এবং এমনকি মৃত্যুও হতে পারে রোগীর।

আরও পড়ুন: ‘স্তনদুগ্ধ আইসক্রিম’ খেতে হুড়োহুড়ি বড়দেরও! কত দাম? কোথায় পাওয়া যাবে এই স্বাদ?
আরও পড়ুন: রোগীদের উপুড় করে নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলে নিতেন! তারপর…? বিস্ফোরক অভিযোগ নামী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে
সিফিলিসের চিকিৎসা
সিফিলিসের চিকিৎসা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে করা হয়, সাধারণত পেনিসিলিন ব্যবহার করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করে চিকিৎসা করালে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব। কিন্তু চিকিৎসা না করালে এই জীবাণু স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে, ফলে প্রাণ সংশয় হতে পারে। 

প্রতিরোধ করার উপায়
অন্যান্য যৌন রোগের মতো এই রোগ প্রতিরোধ করার সবচেয়ে ভাল উপায় কনডোম ব্যবহার করা। পাশাপাশি একাধিক যৌন সঙ্গীর সংসর্গ এড়িয়ে চলতে হবে। যত বেশি সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হবে ততই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। নিয়মিত যৌন রোগের পরীক্ষা করা এই রোগ প্রতিরোধ করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয় করা গেলে চিকিৎসায় ভাল ফল পাওয়া যায়।