আজকাল ওয়েবডেস্ক: শরীর মাঝে মাঝে অকারণে ব্যথা করছে? হঠাৎ করে হাঁটুর সন্ধিতে তীব্র যন্ত্রণা? চিকিৎসকের পরামর্শে রক্তপরীক্ষা করিয়ে যদি দেখা যায় ইউরিক অ্যাসিড বেড়েছে। অথচ একটু আগে থেকে সতর্ক হলেই সমস্যা এতো দূর গড়াত না। ইউরিক অ্যাসিড শরীরে প্রাকৃতিক ভাবেই তৈরি হয়। কিন্তু মাত্রা ছাড়ালেই তা হয়ে ওঠে উদ্বেগের কারণ। বিশেষ করে কিডনি ও অস্থিসন্ধির জন্য।
অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড রক্তে জমে গেলে তার প্রভাব পড়ে হাড়, সন্ধি, এমনকি মূত্রনালীতেও। গাউট, কিডনির পাথর—এ সব রোগ তৈরি করে এই নীরব শত্রু। তবে সৌভাগ্যবশত, শরীর নিজেই কিছু ইঙ্গিত দেয়, যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার দিকে ইশারা করে।
১. অস্থিসন্ধি ফুলে যাওয়া ও ব্যথা
এটি সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। বিশেষ করে বুড়ো আঙুল, গোড়ালি, হাঁটু বা কবজির সন্ধিতে হঠাৎ তীব্র ব্যথা শুরু হতে পারে। অনেক সময় ব্যথার সঙ্গে জ্বরজ্বর ভাব, লালচে ফোলাভাবও দেখা যায়।
২. সকালের দিকে শরীর আড়ষ্ঠ লাগা
ঘুম থেকে উঠেই শরীরের কিছু অংশ শক্ত হয়ে যাওয়া, বিশেষ করে পায়ের গাঁটে জড়তা অনুভব করলে তা ইউরিক অ্যাসিডের ইঙ্গিত হতে পারে। এটি 'গাউট আক্রমণ'-এর প্রাথমিক লক্ষণ বলেই ধরা হয়।
৩. প্রস্রাবে জ্বালা বা কষ্ট
ইউরিক অ্যাসিড জমে গেলে কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে। যার ফলে প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাভাব দেখা দেয়। অনেক সময় প্রস্রাব কম হওয়া বা রঙ গাঢ় হয়ে যাওয়াও একটি বড় লক্ষণ।
৪. ত্বকে লালচে দানা
দীর্ঘদিন ইউরিক বেশি অ্যাসিড থাকলে, তা রক্তনালিতে জমে গিয়ে ‘টোফাই’ নামের কঠিন পদার্থ তৈরি করতে পারে। এগুলি গাঁটের কাছে জমে ত্বকের ওপর ফোলাভাব বা লালচে র্যাশের মতো চেহারা নেয়।
৫. ক্লান্তি ও মাথাব্যথা
রক্তে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড জমে গেলে তা শরীরের রক্তচাপ বাড়াতে পারে। যার ফলে মাথাব্যথা, দুর্বলতা, এমনকি ঘন ঘন ক্লান্তিও দেখা যায়। এ সবকিছুর পেছনেই লুকিয়ে থাকতে পারে ইউরিক অ্যাসিডের ভারসাম্যহীনতা।
এই লক্ষণগুলিকে অবহেলা না করে দ্রুত রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা পরীক্ষা করানো উচিত। পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনতে হবে—প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, পুরি-পরোটা, লাল মাংস, ডালজাতীয় খাবার কমিয়ে বেশি করে জল খাওয়া, শাকসবজি, ফলমূল, ওটস জাতীয় খাবার গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধও চালু করতে হবে।
স্বাস্থ্য সচেতনতা মানেই নিজেকে আগলে রাখা। ইউরিক অ্যাসিডও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই সময় থাকতেই চিনে নিন উপসর্গগুলি। নইলে দেরি হলেই বিপদ বাড়বে!
