লিভার আমাদের দেহের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করে, পুষ্টি মেটাবলিজমে অংশ নেয় এবং শারীরিক শক্তি বজায় রাখতে বড় ভূমিকা রাখে। কিন্তু লিভারের সমস্যা অনেক সময়েই নিঃশব্দে শুরু হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিক সংকেত উপেক্ষিত হয়ে থাকে। ফলে চিকিৎসা শুরু হতেও অনেকটা দেরি হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিম্নলিখিত উপসর্গগুলোর কোনওটি অনুভব করলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

১. অবসাদ ও অতিরিক্ত ক্লান্তিঃ আপনি বার বার ক্লান্ত বোধ করছেন, পর্যাপ্ত ঘুম সত্ত্বেও দিনভর শক্তিহীন অনুভব করেন? তাহলে এটি লিভারের অসুখের সিগন্যাল হতে পারে। লিভার ঠিকভাবে কাজ না করলে দেহ থেকে টক্সিন পুরোপুরি দূর করতে পারে না, যার ফলে শক্তির ঘাটতি এবং অবসাদ দেখা দিতে পারে। 

২. চোখ ও ত্বকে হলুদ ভাবঃ জন্ডিস বা হলুদভাব লিভার সমস্যার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। যদি ত্বক, চোখ বা নখে হলুদ রং দেখা যায়, তাহলে অবশ্যই উপেক্ষা করা উচিত নয়। 

৩. পেশিতে বা কোমরের উর্ধ্বভাগে ব্যথা বা ফুলে ওঠাঃলিভারের অবস্থান দেহের ডান পাশের উপরের অংশে, তাই সেখানে ব্যথা, টান বা ফোলাভাব অনুভব হলে সেটি লিভার প্রদাহ বা সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। 

৪. পেটে গ্যাস বা পেটফাঁপা অনুভবঃ গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, বমিভাব, মলের ধরনের পরিবর্তন লিভার সমস্যা নির্দেশ করতেও পারে। 

৫. চুলকানির অনুভূতিঃ চিকিৎসাবিহীনভাবে দীর্ঘ সময় ধরে ত্বকে চুলকানি হতে থাকলে, তা লিভারের সমস্যার কারণে হতে পারে। 

৬. পা বা আঙুলের ফোলাভাবঃ লিভারের কাজ যদি ঠিক না হয়, তাহলে দেহে তরল জমতে পারে বিশেষ করে পায়ের অংশে যা এই সমস্যা দেখা দেয়। 

৭. সহজে চোট বা রক্তপাতঃ লিভার ব্লাড ক্লটিং প্রোটিন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যদি লিভার কাজ কম করে, তাহলে রক্ত জমে না, যা সহজে চোট বা ব্লিডিংয়ের দিকে পরিচালিত করতে পারে। 

যদি এই উপসর্গগুলোর মধ্যে কিছু অনুভব করেন, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সাধারণত স্বাস্থ্য চেক-আপে লিভার ফাংশন টেস্ট করানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়াও ওজন নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া এবং অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা জরুরি।