বলিউডের 'বাদশা' হওয়ার বহু আগে শাহরুখ খানের জীবনে এমন একটি মুহূর্ত এসেছিল, যা তাঁর মনে আজও অম্লান। এক ‘স্নেহের চড়’ মেরেছিলেন দিলীপ কুমার। কিংবদন্তি অভিনেতার সেই ছোট্ট স্পর্শই যেন তাঁকে ভিতর থেকে বদলে দিয়েছিল, এমনটাই মনে করেন শাহরুখ। তাঁর কথায়, জীবনের কিছু ঘটনা স্মৃতি নয়, আত্মায় খোদাই হয়ে থাকা একেকটি ছাপ।
2
8
দিলীপ কুমার আর শাহরুখের সম্পর্ক ছিল অনন্য। দিলীপ কুমার প্রায়ই বলতেন, তাঁর যদি কখনও ছেলে হতো, তবে তিনি চাইতেন সেই ছেলে যেন শাহরুখের মতো হয়। সেই স্নেহের টান থেকেই একদিন শাহরুখ নিজের অভিনয়-দিশা খুঁজতে গিয়েছিলেন দিলীপ সাহেবের কাছে। বিশেষ করে যখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন সঞ্জয় লীলা বনশালির ‘দেবদাস’-এ সেই ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করবেন, যেটি একসময় অমর করে গিয়েছিলেন দিলীপ কুমার নিজেই।
3
8
কিন্তু খুব কম লোকই জানেন, এই দুই তারকার মাঝে এমন এক মুহূর্তও ঘটেছিল যখন দিলীপ কুমার নরম করে শাহরুখকে একবার ‘চড়’ মেরেছিলেন। ২০০১ সালে এক জনপ্রিয় ফিল্মি অ্যাওয়ার্ডসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে শাহরুখ নিজেই সেই ঘটনার কথা বলেছিলেন দর্শকদের।
4
8
শাহরুখের ভাষায়,“আমি যখন প্রথম মুম্বই আসি আর দিলীপ সাহেবের সঙ্গে দেখা করি, উনি আমার গালে আলতো চাপড়ে বলেছিলেন,‘কাজ করো’। কিন্তু পেশোয়ারের একজন মানুষের আলতো চড়ও বেশ জোরেই লাগে!”
5
8
হাসতে হাসতেই তিনি আরও যোগ করেন,“সেই ছোট্ট চড় আমার কেরিয়ারকে ১০ বছর এগিয়ে দিয়েছিল। এখন তো মাঝে মাঝে মনে হয়, আবার যদি দিলীপ সাহেবকে বলি, আমাকে আরেকটা জোরের চড় দিন, তাহলে হয়তো আরও ২০ বছর এগিয়ে যেতে পারব!”
6
8
এরপরে শাহরুখের সৌভাগ্য হয়েছিল মঞ্চে স্বাগত জানানোর ভারতীয় সিনেমার ইতিহাস গড়ে দেওয়া সেই দিলীপ কুমার এবং তাঁর স্ত্রী সায়রা বানুকে। শাহরুখ বলেছিলেন, “ভারতীয় সিনেমার যে ভিত্তি, তার বড় একজন নির্মাতা হলেন এই মানুষটি। তাঁর এক চড়েই কিন্তু কেরিয়ার বদলে যেতে পারে। আমি তার জীবন্ত উদাহরণ।”
7
8
অদ্ভুতভাবে, সেই কথাই যেন পরে সত্যি প্রমাণিত হয়। শুধুমাত্র এক বছরের মধ্যেই শাহরুখ অভিনয় করলেন ‘দেবদাস’ দিলীপ কুমারের সেই অমর চরিত্রে। ছবিটি তাঁকে পৌঁছে দেয় আরও এক উচ্চতায়, স্থায়ী করে দেয় তাঁর সুপারস্টারডম।
8
8
আজ শাহরুখ খান দাঁড়িয়ে আছেন ভারতের সবচেয়ে ধনী অভিনেতা হিসেবে, ১৪,০০০ কোটি টাকার নেট ওয়ার্থ। আর তিনি হাসতে হাসতেই জানান, তাঁর এই বিশাল যাত্রার শুরুর ইন্ধন হয়তো সত্যিই ছিল দিলীপ সাহেবের সেই একটুকরো ‘জীবন-বদলে-দেওয়া’ চড়।