১৩ বছর কাটল। ফের  মুখোমুখি দেব-শুভশ্রী। তবে এ সাক্ষাৎ নিছকই রেলগাড়ির কামরায় দুই প্রাক্তনের 'হঠাৎ দেখা' নয়। মঞ্চের অজস্র আলোর ঝলকানি, অনুরাগীদের হর্ষধ্বনীর মাঝেই চোখে চোখ রাখলেন নায়ক-নায়িকা। উপলক্ষ ধূমকেতু। ন'বছর আগে যে ছবির দিনের আলো দেখার কথা ছিল, তা মুক্তি পাচ্ছে অবশেষে।  ১৪ অগাস্ট। ট্রেলার লঞ্চের বিশেষ অনুষ্ঠানেই ভিড় ছিল দেখার মতো। সেক্ষেত্রে ছবিটি মুক্তির বক্স অফিসেও কি থাকবে একই রকম উন্মাদনার ছাপ? উপচে পড়বে ভাঁড়ার?

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত 'ধূমকেতু'-র ভবিষ্যৎ পূর্ব নির্ধারিত। আজকাল ডট ইন-কে তেমনই জানিয়েছেন টলিউডের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ পঙ্কজ লাডিয়া। তাঁর মতে, ছবিটি অচিরেই হতে পারে চলতি বছরের সবচেয়ে বড় হিট। দেব এবং শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের রসায়ন  তার নেপথ্যে বৃহত্তম অনুঘটক। তারই সঙ্গে উপরি পাওনা কৌশিকের পরিচালনা। পঙ্কজের কথায়, "দেব-শুভশ্রীর জুটি সহজেই একটি ছবিকে সফল করে তুলতে পারে। অতীতেও তার অজস্র নজির আছে। পাশাপাশি 'ধূমকেতু'র মতো ছবি আজ থেকে ন'বছর আগে মুক্তি পেলে তা একটা এক্সপেরিমেন্ট হত। কিন্তু আজ এই ধরনের ছবির একটি বাজার তৈরি হয়েছে। গ্রহণযোগ্যতা আছে।"

বিগত কয়েক বছরে বাণিজ্যিক ছবির পাশাপাশি বিষয়ভিত্তিক ছবিতেও নিজেদের জায়গা তৈরি করেছেন দেব-শুভশ্রী।  সেগুলির মধ্যে বেশ কিছু ব্যবসা-সফল। ২০২৪-এ মুক্তি পাওয়া সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত 'টেক্কা' বক্স অফিসে ভাল আয় করে। দেবের  ছক ভাঙা  অভিনয়ও সেখানে প্রশংসিত। অন্য দিকে, ইন্দ্রদ্রীপ দাশগুপ্তের 'গৃহপ্রবেশ'-এ নজর কেড়েছেন শুভশ্রী। চলতি বছরের হিট ছবির তালিকায় এটি অন্যতম। বাণিজ্য বিশেষজ্ঞের কথায়, "ওরা দু'জন্যেই যেহেতু কমার্শিয়াল ছবির বাইরে গিয়ে নিজেদের জন্য দর্শক তৈরি করতে পেরেছে। সেক্ষেত্রে ধূমকেতুর মতো একটি ছবির  ব্লকবাস্টার হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়। দেব-শুভশ্রী জুটির সঙ্গে অনুপম রায়ের গান প্রেক্ষাগৃহে দর্শক টানবে বলেই আমার বিশ্বাস। কারণ এই নতুন বিষয়গুলি সিনেমাপ্রেমীদের মুগ্ধ করবে"।

আরও পড়ুন: ‘আহা! আমারও পুরনো প্রেম মনে পড়ে যাচ্ছে তো...’ দেব-শুভশ্রীকে দেখে কার কথা মনে পড়ল কুণাল ঘোষের?

অদূর অতীতে অগ্রিম বুকিং শুরুর আগেই 'পাঠান', 'জওয়ান'-এর মতো ছবিগুলিকে 'ব্লকবাস্টার' তকমা দেওয়া হয়। কারণ, শাহরুখ খানের জনপ্রিয়তা এবং ছবি নিয়ে তৈরী হওয়া 'বাজ'। বলিউডের খরা কাটাতে মাঠে নামেন 'বাদশা' স্বয়ং। বাংলায় 'ধূমকেতু'র ক্ষেত্রেও তারই পুনরাবৃত্তি। দেব-শুভশ্রী জুটিকে নিয়ে দর্শকের আবেগ এবং প্রায় এক দশক পর পর্দায় সেই পুরনো রসায়ন চাক্ষুষ করার উন্মাদনা ইতিমধ্যেই 'ধূমকেতু'র সাফল্য  রচনা করে দিয়েছে বলে মনে করছেন পঙ্কজ। বলিউডের কোনও ছবি বাংলায় যা ব্যবসা করে, 'ধূমকেতু' তা ছাপিয়ে যাবে বলেই আশাবাদী তিনি।

'ধূমকেতু'-র প্রচার কৌশলেরও প্রশংসা করেন পঙ্কজ। শুরু থেকে আলাদা প্রচার করলেও ছবির অগ্রিম বুকিং শুরুর আগে মঞ্চে একসঙ্গে দেব-শুভশ্রীর আবির্ভাব। দর্শকের নস্টালজিয়া উস্কে দিয়ে পুরনো গানে নাচ, হিট সংলাপ আওড়ানো- এসবই ছবির ব্যবসাকে আরও এগিয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। পঙ্কজ বলছেন, "একজন এক্সিবিটর-ডিস্ট্রিবিউটর হিসাবেও আমি খুব আশাবাদী। ওঁরা যেভাবে প্রোমোশন করলেন, তা ছবিটিকে সাফল্যের আরো কাছে আনল। কারণ ওঁদের দু'জনের ফ্যান ফলোয়িংই দেখার মতো। এত দিন শুধুমাত্র গরমের ছুটি, দুর্গাপুজো বা বড়োদিনে বাংলা ছবি ভালো ব্যবসা করত।  সেই ছক ভেঙে পুজোর এক মাস আগে ধূমকেতু ব্লকবাস্টার হলে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিরই মঙ্গল।“