আজকাল ওয়েবডেস্ক: হাদির মৃত্যুতে যে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পদ্মাপারে, তার আগুন এখনও জ্বলছে ধিকধিক করে। এই পরিস্থিতিতে, কাটছে না আশঙ্কার মেঘ। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম এবং একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পরিস্থিতি বিচারে সিলেটের ভারতীয় উপদূতাবাস এবং ভিসাকেন্দ্রে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, 'কোনও তৃতীয় পক্ষ যাতে পরিস্থিতির সুযোগ নিতে না পারে, তা নিশ্চিত করতেই বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা।'

ঢাকা ট্রিবিউন সূত্রে খবর, শনিবারেই সাইফুল এই তথ্য জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমে। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল থেকেই সিলেটে অবস্থিত ভারতীয় উপদূতাবাসে এবং ভিসাকেন্দ্রে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

 

অন্যদিকে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম 'প্রথম আলো' সূত্রে খবর, চট্টগ্রামে অবস্থিত ভারতীয় ভিসাকেন্দ্র বন্ধ অনির্দিষ্টকালের জন্য। সূত্রের খবর, চট্টোগ্রামের ভারতীয় উপদূতাবাসের নিরাপত্তার কথা মাতাহ্য রেখেই, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগেও, চট্টগ্রামে ভারতীয় উপদূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল উন্মত্ত জনতা। 

বাংলাদেশে হাদি মৃত্যুর পর, ফের উত্তাল হয় পরিস্থিতি। ১২ ডিসেম্বর গুলিবিদ্ধ হন  ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। শারীরিক অবস্থার বিচারে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল চিকিৎসার জন্য। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। অন্যদিকে হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল পদ্মাপারে। বৃহস্পতিবার মৃত্যু সংবাদ আসতেই তা ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মতো। বৃহস্পতিবার রাতভর তাণ্ডব চলে ঢাকা-সহ দেশের একাধিক জায়গায়। হামলা চালানো হয়েছে সংবাদ  মাধ্যমে। জ্বলে খাক হয়ে গিয়েছিল 'প্রথম আলো'র অফিস। বাংলাদেশেই ২৫ বছরের হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসের মৃত্যু হয়েছে গণপিটুনিতে।  তা নিয়ে নিন্দার ঢেউ দেশে বিদেশে।

যদিও চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মাঝে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে সে দেশের অন্তবর্তী সরকার বিবৃতি জারি করেছিল। শুক্রবার জারি করা এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এই গণপিটুনির নিন্দা করেছে। এই ঘৃণ্য কাজর বাংলাদেশ সরকার বরদাস্ত  করবে না বলেও জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের হিংসার কোনও স্থান নেই। এই জঘন্য অপরাধের হোতাদের রেহাই দেওয়া হবে না।" বৃহস্পতির পরে, শুক্রবারেও পরিস্থিতি উত্তাল ছিল পদ্মাপারে। তারমাঝেই  শনিবার রাতে ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে সে দেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে। পরিস্থিতি কেমন এখন সে দেশের? বুঝতে পারছেন না দেশের নাগরিকরাই। আশঙ্কা, বিশৃঙ্খলার আগুন ধিকধিক করে জ্বলছে দেশের ভিতরেই।