৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে ৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। ৭ নভেম্বর শিশির মঞ্চে আয়োজিত হয়েছিল 'সত্যজিৎ রায়ের স্মরণে' একটি বক্তৃতা। মুখ্য বক্তা হিসেবে ছিলেন পরিচালক রমেশ সিপ্পি। পরিচালক গৌতম ঘোষের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত হয়েছিল এই অনুষ্ঠান। কলকাতায় এসে আধুনিক যুগের ছবি প্রসঙ্গে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করলেন রমেশ সিপ্পি।
৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনীতেও ছিলেন রমেশ সিপ্পি। কলকাতায় এসে কি মনে হয়েছে বাংলার সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করবেন? রমেশ সিপ্পির কথায়, "গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই প্রসঙ্গেই আলোচনা হচ্ছিল। বাংলার সংস্কৃতি বরাবরই আমার খুব পছন্দের। যদি সময়, সুযোগ আর পরিস্থিতি থাকে তাহলে অবশ্যই মুম্বই ও কলকাতাকে একত্রে মিশিয়ে একটা ছবির প্লট ভাবা যায়।"
মঞ্চে উঠে প্রথমেই 'নমস্তে ক্যালকাটা' বলে নিজেই সংশোধন করে নেন বর্ষীয়ান পরিচালক। পরিস্কার বাংলায় বলেন, "নমস্কার কলকাতা।" 'শোলে'র ৫০ বছর পূর্তি নিয়ে বক্তৃতার শুরুতেই তিনি বলেন, "আমার পরিচালনার ইতিহাসে সেরা ছবি হচ্ছে শোলে। অনেকেই আমায় জিজ্ঞেসা করেন, কেন আর শোলের সিক্যুয়েল তৈরি করিনি? তাঁদের সবার কাছে আমার একটা প্রশ্ন আছে, ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও শোলের রেশ কি কেটে গিয়েছে? দর্শক মহলে কি শোলে ঘিরে আর উত্তেজনা নেই? আমার চোখে তো অন্য ছবি ভাসে। শোলে আজও প্রাসঙ্গিক, তাই শোলে নিয়ে আর কাজ করিনি।"
বর্তমানে ছবির ভাষা ও দর্শক প্রসঙ্গে রমেশ সিপ্পি বলেন, "ছবি কিন্তু মরে যায়নি, ছবি জীবিত। সর্বকালের ছবির ভাষা তো এক হয় না। যেমন ভাষা বদলায়, ভাবনা বদলায়, তেমন বক্স অফিসের মানও বদলায়। নবীন পরিচালকদের জন্য একটাই কথা বলব, নিজের ভাবনায় জোর দিন। দয়া করে, লক্ষ্যে স্থির থাকুন, দর্শকের মন বুঝে কাজ করুন, দেখবেন হলে দর্শক ঠিক আসবেন। এখন মহিলা পরিচালকরাও দারুণ কাজ করছেন। যদিও আমার মতে, শিল্পের ক্ষেত্রে লিঙ্গ প্রাধান্য পায় না।"
সত্যজিৎ রায়ের স্মরণে পরিচালক বলেন, "সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক আলাপ ছিল। ওঁর শোলে খুব পছন্দ হয়েছিল। বহুবার আমায় জানিয়েছেন, ওঁর দেখা অন্যতম পছন্দের ছবির মধ্যে শোলে অন্যতম। বাংলায় এসে আজ ওঁর কথা বড্ড মনে পড়ছে।"
