নিজস্ব সংবাদদাতা: ‘সত্যি বলে কিছু নেই’-এর পর ফের বড়পর্দায় আসছেন অভিনেত্রী অনন্য চট্টোপাধ্যায়। ছবির নাম 'অন্নপূর্ণা'। অংশুমান প্রত্যুষের পরিচালনায় এক মায়ের জীবনের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে এই ছবি। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ছবির ঝলক। অংশুমান প্রত্যুষের নতুন ছবি 'অন্নপূর্ণা'-র মুখ্যভূমিকায় রয়েছেন অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন ঋষভ বসু এবং দিতিপ্রিয়া রায়।
এই ছবির গল্প মা-কে নিয়ে, মায়েদের শ্রদ্ধা জানাতে। ছোট থেকেই আমাদের আগলে রেখে, সমস্ত কিছু শেখান আমাদের মায়েরাই। কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আমরা যেন ভুলে যাই তাঁদেরও অবদান। এই গল্পও তেমন এক মায়ের। ছোট থেকেই মেয়েকে সমস্ত কিছু শিখিয়ে বড় করেন তিনি। কাজের সূত্রে মেয়ের (দিতিপ্রিয়া) ঠিকানা বদলে হয় লন্ডনে। মেয়ে চায়, মাকে (অনন্যা) লন্ডনে নিয়ে গিয়ে রাখতে, রাজি হয়ে যান মা-ও। কিন্তু সেখানে গিয়েই তাঁকে যেন ঘিরে ধরে একাকিত্ব। ধীরে ধীরে মেয়ে আর থাকছে চায় না অন্নপূর্ণার সঙ্গে। ভারতে ফেরত পাঠাতে চায় তাঁকে। অন্যদিকে, সেই লন্ডনেই অন্নপূর্ণার সঙ্গে আলাপ হয় রনি নাম এক তরুণের (ঋষভ)। সন্তানসম সেই ছেলেটির সঙ্গে যোগাযোগ হওয়ার পর থেকেই ঘুরে যায় গল্পের মোড়। এই ছবিতে কাজের স্মৃতি থেকে অনন্যার সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা- সব নিয়েই আজকাল ডট ইন-এর সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় ঋষভ।
এইমুহূর্তে একেনবাবুর শুটিংয়ে আছেন ঋষভ। বেলগাছিয়ার রাজবাড়িতে শুটিং ব্রেকের ফাঁকে অল্প কথায় জানালেন, 'অন্নপূর্ণা'তে তাঁর কাজ করে মূল সঞ্চয় হল অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা। ঋষভের কথায়, “কৈশোরে ওঁর অভিনয় প্রথম দেখেছিলাম। তখন থেকেই অনন্যাদিকে আমার ভাল লাগে। ওঁর অভিনয়ের ধরণ, বাচনভঙ্গি, লুক - সবমিলিয়ে আমার ভীষণ প্রিয় অভিনেত্রী অনন্যাদি। এই ছবির শুটিংয়ের প্রায় পুরোটাই লন্ডনে। প্রথম দিকে অবশ্য অতটা ওঁর সঙ্গে মেশার সুযোগ পাইনি। একটা আলাদা গাম্ভীর্য নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলতেন। তারপর ছবিতে আমার সঙ্গে ওঁর একটি কান্নাকাটির শুটিংয়ের দৃশ্যে আচমকা সেই পাঁচিল ভেঙে গেল। ধীরে ধীরে সেটা কেটেছিল এবং যখন কেটেছিল, তখন বুঝেছিলাম ওঁর মতো মানুষ হয় না। ভীষণ সহযোগিতা করেন, খেয়াল রাখেন। আর একটা কথা এই ফাঁকে না বললেই নয়, লন্ডনের বিভিন্ন লোকেশনে এই ছবির জন্য ঘুরে ঘুরে শুটিং করাও কিন্তু দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা।”
‘অন্নপূর্ণা’-এ নিজের অভিনীত চরিত্র ‘রনি’কে নিয়ে ঋষভের বক্তব্য, “রনিকে এককথায় বলা যায় ‘জ্যাক অফ অল ট্রেডস’। ভালবাসার মানুষের টানে সে লন্ডনে হাজির হয়েছে। সে যাকে ভালবাসে, সে একজন বিদেশিনী। এবং এই শহরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তাঁর যোগ্য হওয়ার জন্য প্রতিদিন আপ্রাণ চেষ্টা করে যায় সে। ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে চাল-ডাল, ফ্রুট জুস বিক্রি করা থেকে একবেলা লন্ডনের রাস্তায় ভাড়ার ট্যাক্সি চালানো-সব করে সে। তবে মনটা কিন্তু খাঁটি বাঙালির। ছোটবেলায় মা'কে হারিয়েছে সে, ফলে মায়ের আদরের কাঙাল। আর ঠিক সে জায়গায় অনন্যা চট্টোপাধ্যায় অভিনীত চরিত্রের প্রবেশ। কী করে, একজন অচেনা ছেলে 'অন্নপূর্ণা'কে মা ডেকে ফেলল, মায়ের মতো স্নেহ পেল তাঁর কাছ থেকে, এ ছবি সেকথাও বলবে। ঠিক যেমন করে বলবে, নিজের মেয়ে যখন অন্নপূর্ণাকে অপমানিত করে কলকাতায় ফিরিয়ে দিতে উদ্যত হয়, তখন রনি তার 'মা'কে নিজের কাছে নিয়ে আসে। এবং কীভাবে অন্নপূর্ণা আর সে ক্লাউড-কিচেন শুরু করল, নিজেদের জীবনকে অল্প অল্প করে বদলে ফেলতে পারল ভালবাসার কোন আশ্চর্য, অজানা ফর্মুলার জাদুতে সে রহস্যও লুকিয়ে রয়েছে এই ছবিতে। এই ছবি মা ও সন্তানদেরও গল্প বটে...”
