গত ২৩ নভেম্বর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা ছিল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের তারকা স্মৃতি মান্ধানা ও সঙ্গীত পরিচালক পলাশ মুচ্ছলের। বেশ কয়েকদিন ধরে তাঁদের বিয়ে নিয়ে ভক্তদের উচ্ছ্বাস ছিল তুঙ্গে। কিন্তু বিয়ের আগেই ঘটে চলেছে একের পর এক বিপর্যয়। দুই পরিবারেই তৈরি হয়েছে কঠিন পরিস্থিতি। স্বাস্থ্য-সংকটের জেরে বিয়ের সমস্ত পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত রাখতে হয়েছে।

 

 

ঘটনার শুরু স্মৃতির পরিবার থেকে। ক্রিকেটারের বাবা শ্রীনিবাস মান্ধানা হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। বাড়ির এই অস্থিরতা বিয়ের প্রস্তুতিতে বড় ধাক্কা দেয়। ঠিক এর পরপরই মানসিক চাপে ভেঙে পড়েন হবু বর পলাশ মুচ্ছল।

 

 

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, পলাশ মুচ্ছলের মা অমিতা মুচ্ছাল সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। অমিতা মুচ্ছল জানিয়েছেন যে স্মৃতি তাঁর বিবাহ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই তাঁর পুত্র পলাশ নিজেই বিয়ে বাতিল করতে চেয়েছিলেন। এর কারণ হিসেবে তিনি স্মৃতির বাবা শ্রীনিবাস মান্ধানার সঙ্গে পলাশের গভীর মানসিক বন্ধনের কথা উল্লেখ করেছেন।

 


অমিতা বলেন, "পলাশ তাঁর 'আঙ্কেলের' (শ্রীনিবাস মান্ধানা) সঙ্গে মানসিকভাবে খুব ঘনিষ্ঠ। সত্যি বলতে, পলাশ স্মৃতির চেয়ে তাঁর বাবার সাথেই বেশি ঘনিষ্ঠ। তাই, যখন স্মৃতির বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন, তখন স্মৃতির সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই পলাশ স্থির করে যে তিনি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে হবে না।" তিনি আরও বলেন, "স্মৃতির আগে পলাশই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে আঙ্কেল সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সে সাত পাক ঘুরবে না।"

 


জানা যায়, বিয়ের দিন সকালে (২৩ নভেম্বর) প্রাতরাশের সময় স্মৃতির বাবা বুকে ব্যথাসহ হার্ট অ্যাটাকের মতো উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিন অর্থাৎ ২৪ নভেম্বর, পলাশকেও হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। হলদি অনুষ্ঠান হয়ে যাওয়ার পর বাইরে যেতে না পারায় তাঁর মানসিক চাপ এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। চার ঘণ্টা তাঁকে হাসপাতালেই রাখতে হয় এবং স্যালাইন ও ইসিজি করানো হয়। যদিও তাঁর রিপোর্ট স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু মানসিক চাপ ছিল চরমে।

 

 

জানা যাচ্ছে, স্মৃতির বাবা এখনও পর্যবেক্ষণে রয়েছেন এবং চিকিৎসকরা তাঁকে হাসপাতালে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। বাবা পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত স্মৃতি বিয়ে আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তে সম্মতি দেন। এর পরেই তিনি তাঁর বাগদান এবং ভাইরাল হওয়া প্রস্তাবনার ভিডিও-সহ সমস্ত বিয়ের পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মুছে ফেলেন।

 


স্মৃতির এই পোস্ট মুছে ফেলাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বা 'কনস্পিরেসি থিওরি' ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ একে 'নজর' লাগা বলে দাবি করছেন। আবার পলাশের বিরুদ্ধে স্মৃতির সঙ্গে প্রতারণা করার গুঞ্জনও ছড়িয়েছে। যদিও এর কোনওটিরই আনুষ্ঠানিক বা বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়নি। তবে পরিবার আপাতত এই সংকটকালীন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে তাঁদের স্বাস্থ্যের ওপরই মনোযোগ দিচ্ছেন।