সংবাদ সংস্থা মুম্বই: বাবা মিঠুন চক্রবর্তী, মা যোগীতা বালি—তবু বলিউডের রাজপথে সহজ ছিল না মিমো চক্রবর্তীর সফর।২০০৮ সালে মুক্তি পায় মিমোর প্রথম ছবি ‘জিমি’। ছবিটি শোচনীয় ভাবে ব্যর্থ হয় পর্দায়। দর্শক কিংবা সমালোচক, কেউই প্রশংসা করেননি ছবিটির। ‘হন্টেড থ্রিডি’ আর ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’-এ তিনি নজর কেড়েছেন ঠিকই, কিন্তু অভিনেতা হিসেবে তাঁর পথচলা একেবারেই কাঁটায় ভরা। একান্ত সাক্ষাৎকারে এক বিস্ফোরক অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন মিমো—বললেন কীভাবে শুটিংয়ের মাত্র দু’দিন আগে, কোনও কারণ ছাড়াই তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয়েছিল একটি ছবির থেকে, যেখানে তিনি চুক্তিবদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন!

 

“ওটা আমার জন্মদিনের আগের ঘটনা,” জানালেন মিমো, “আমার বাবাও সেই ছবিতে ছিলেন। ছবির জন্য আমাকে সই করানো হয়, সাইনিং অ্যামাউন্টের চেক পর্যন্ত পাই। সব হয়ে গিয়েছিল। শুট শুরু হওয়ার কথা ছিল এক মাস পর। কিন্তু শুটের ঠিক দু’দিন আগে আমাকে ফোন করে জানানো হল—‘আপনাকে নিচ্ছি না’। কোনও কারণ ছাড়াই।”

 

এই আচমকা সিদ্ধান্ত যে তাঁকে কতটা মানসিকভাবে আঘাত করেছিল, তা খোলাখুলি জানান তিনি—“ওরা নিজেরাই অফিসে ডেকে সই করাল, আবার নিজেরাই বাতিল করল। আমি তখন জিমে যাচ্ছি, পুরো প্রস্তুতিতে আছি… আর হঠাৎ কিছুই রইল না।” তবু অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েছেন মিমো। তাঁর কথায়— “একটা অভিনেতার হৃদয় লোহার মতো না হলে, টিকে থাকা মুশকিল। প্রত্যাখ্যান একজন অভিনেতার সবচেয়ে বড় বন্ধু। এটা ব্যর্থতা নয়, মানে এই যে তোমাকে বেছে নেওয়া হয়নি—ব্যস।”

 

প্রত্যাখ্যান যে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেটাই মনে করিয়ে দেন তিনি। বলেন, “কেউই প্রত্যাখ্যান পছন্দ করে না—চাকরি না পাওয়া হোক, প্রেমে না বলা হোক, সবই তো এককথায় প্রত্যাখ্যান। কিন্তু সেটা শেখায়। সেই একই অফিসে আমি বহুবার গিয়েছি, সেই একই প্রজেক্টের জন্য ৩–৪ বার অডিশন দিয়েছি। মনে হয়েছে এবার বুঝি হবে… কিন্তু কিছুই হয়নি।”

 

নিজের সাম্প্রতিক সাফল্য ‘খাকি’-তেও বেশ বাস্তববাদী মিমো। জানিয়েছেন—“আজও অডিশন দিই। ‘খাকি’ আমার জীবন বদলায়নি। অডিশনেই বোঝা যায় আপনি চরিত্রের সঙ্গে মানানসই কি না। শুধু আমি মিমো চক্রবর্তী বলে সব চরিত্রে মানিয়ে যাব, এমনটা নয়। আমি 'হিমেল মজুমদার'কে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি, তাই সেই চরিত্রটা পেয়েছি।”

 

চোখধাঁধানো নামের আড়ালেও থাকে পরিশ্রম, প্রত্যাখ্যান আর অটুট ইচ্ছাশক্তির গল্প—আর মিমোর গল্প সেই লড়াইয়েরই এক নিখাদ প্রতিচ্ছবি।