বড়দিনে মুক্তি পেয়েছে দেবের ‘প্রজাপতি ২’। এদিন তাঁর জন্মদিনও। তবে জন্মদিন উপলক্ষে পার্টি না করে ছবির পরিচালক অভিজিৎ সেন ও অন্যতম প্রযোজক অতনু রায়চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে হল-ভিজিটে বেরিয়ে পড়েছেন 'বার্থডে বয়'। একাধিক প্রেক্ষেগৃহে ‘প্রজাপতি ২’-র শো শেষে টহল দেওয়ার মাঝে আজকাল ডট ইন-এর মুখোমুখি হলেন টলিপাড়ার 'ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর'। সেখানে এই ছবি নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি বাংলা ছবির সঙ্গে বলিউডের প্রেক্ষাগৃহ পাওয়া নিয়ে রেষারেষির কথা যেমন উঠে এল দেবের মুখে,তেমনই উঠে এল টলিপাড়ার অন্দরে একইসঙ্গে ছবি মুক্তি নিয়ে ছবি নির্মাতা-প্রেক্ষাগৃহ কর্ণধারদের মধ্যে টানাপোড়েনের কথাও। এবং উঠে এল শুভশ্রীর সঙ্গে চলতে থাকা তাঁর সমস্যা ও ‘ইনোসেন্ট’ কথাবার্তা-র বিষয়টিও।  

 

‘প্রজাপতি ২’ নিয়ে দেব জানান, গত দু’বছর ধরে এই ছবির সঙ্গে একাত্ম হয়ে আছেন তিনি। অনেকটা আবেগ জড়িয়ে এই ছবির সঙ্গে। 'প্রজাপতি ২'-র মতো পারিবারিক ছবি যে সব বয়সী দর্শককে আনন্দ দেওয়ার পাশাপাশি বক্স অফিসেও সাফল্য পাবে, সে বিষয়ে একপ্রকার তিনি নিশ্চিতকি.তাঁর কথায়, “এই ছবির বাজেট ৭-৮ কোটি টাকা। আমি যদি ১-২ কোটি টাকার ছবি বানাতাম, টাকা উঠে আসতো  এবং সেটা আমার লাভ হতো। কিন্তু বাজেট বাড়লে তবেই তো ইন্ডাস্ট্রি বাড়বে। পাল্লা দিতে পারব বলিউডের সঙ্গে। বড় বাজেটের ছবি বানালে একটু বেশি প্রেক্ষাগৃহ, শো টাইমিং তো স্বাভাবিকভাবেই প্রয়োজন...তার উপর বক্স অফিসে আমাদের এই তিনজনের ছবির ট্র্যাক রেকর্ড যখন এত ভাল। তার পরেও হল পাচ্ছি না। ঘোষণা করার পরেও ছবি প্রজাপতি ২ সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আজ বহু প্রেক্ষেগৃহে 'প্রজাপতি ২' হাউজফুল! তাহলে? প্রেক্ষেগৃহের কর্ণধারদের তো এটুকু বিশ্বাস রাখা উচিত আমাদের উপর। আর আমি কাদের সঙ্গে লড়াই করব? এখানে সবাই তো নিজের!” 

 


সামান্য চুপ করে থেকে তিনি স্পষ্ট কথায় বলে ওঠেন, “আমার লড়াইটা শ্রীকান্ত মোহতা, নিসপাল রানে কিংবা রাণা সরকারের সঙ্গে নয় কিন্তু! আমার লড়াইটা দেশের বাকি আঞ্চলিক ছবিগুলোর সঙ্গে। তাদের বোঝানো এখনও বাংলা ছবি চাইলে পারে তাদের সঙ্গে টেক্কা দিতে। বলিউডের সঙ্গে চোখে চোখে রেখে লড়াই করতে। আমি নাম তুলছি না, কিন্তু প্রেক্ষেগৃহে তো একটি বলিউডি ছবি রমরমিয়ে চলছে। তা সত্বেও, প্রজাপতি ২ হাউজফুল হচ্ছে তো বিভিন্ন হলে। তবে? ওরাও তো বুঝল বাংলা ছবিও পারে লড়াই করতে! ”

 


উঠল শুভশ্রীর সঙ্গে সমস্যার প্রসঙ্গও। অল্প কথায় বললেন, “দেখুন, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটা না খুব ছোট্ট। এই এতটুকু একটা জায়গা। সেখানে এত ঝগড়া, মান-অভিমান রাখব কোথায়? রাখার জায়গা কোথায়? আর তার উপর আমাদের জীবনটাও তো খুব অনিশ্চিত। তাই না? তাহলে আমি এহেন পরিস্থিতিতে সিনেমা নিয়ে ভাৱ না কি রাগ-অভিমান নিয়ে ভেবে যাব? আর এরপর এই তো পরমব্রতর ছেলের অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠানে শুভশ্রীর সঙ্গে দেখা হল। আমি নিজেই গিয়ে ওর সঙ্গে কথা বললাম। ওকে বললাম, “কী হল ম্যাডাম? কী ব্যাপার? আমার ব্যাপারে  এত ইনোসেন্ট কথাবার্তা বলছেন কেন বাজারে?” বলতে বলতে হেসে ফেলেন দেব। ফের বলে উঠলেন, “ওইদিনই মিটিয়ে নিয়েছি সমস্যা। আমরা দু'জনেই ম্যাচিওর্ড। ও ওর মতো ভাল আছে, আমি আমার মতো। ওর আর আমার রাস্তা আলাদা। চাই ও ভাল থাকুক, এটুকুই।”

 

 


কথাশেষে ঠোঁটের কোণে হাসি নিয়ে দৃপ্ত ভঙ্গিতে দেবের সংযোজন, “বছরভর সময়টা আমার ভাল-ই গিয়েছে। শুরু-শেষ সবটাই আমার ভাল ছিল এই বছর। আমাকে যাঁরা বদনাম করার চেষ্টা করেছেন, কিছুটা তাঁদের বদনাম হয়েছে। আমি একদম ঠিক আছি। বছরশেষে বুকভরা ভালবাসা, হলভরা দর্শক দেখে যাচ্ছি, নিয়ে যাচ্ছি। ওঁদের আশীর্বাদ, চোখের জল, হাসি নিয়ে যাচ্ছি নিজের সঙ্গে। এর থেকে বেশি আর কী চাই আমার?”