বাংলা ছবিতে প্রথমবার উঠে আসবে সময়ের ঘূর্ণি বা টাইম ভর্টেক্স। কল্পবিজ্ঞানের উপর আধারিত এই ছবির নাম পয়লা বৈশাখ। ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় দেখা যাবে ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়, মুমতাজ সরকার। থাকবেন চন্দন সেন, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, প্রমুখ। কিন্তু ঠিক কী নিয়ে পয়লা বৈশাখ ছবির গল্প?
গল্প আবর্তিত হবে ইন্দ্র নামক এক চরিত্রকে ঘিরে। অতি স্বাধারণ মধ্যবিত্ত ইন্দ্রর জীবন সম্পূর্ণভাবে বদলে যায় একটা রাতের একটা ছোট্ট ঘটনায়। সদ্য চাকরি পাওয়ার আনন্দে ইন্দ্র তার জামাইবাবু রণজিৎ এবং খুব কাছের বন্ধু অনির্বাণ একসঙ্গে পার্টি করছিল সেই রাতে। আর এই পার্টির শেষেই এক অপ্রাকৃতিক ঘটনায় ইন্দ্র আটকে যায় একটা নির্দিষ্ট দিনে- পয়লা বৈশাখে। ইন্দ্রর প্রেমিকা মৌমিতা থেকে শুরু করে অন্যান্য বন্ধুবান্ধব, এমনকী তার পরিবারের কেউই এই পরিস্থিতি সম্পর্কে জানত না। দিনের পর দিন একইভাবে, একই দিন কাটাতে কাটাতে সে ধীরে ধীরে আশা হারিয়ে ফেলতে থাকে। ভুগতে থাকে অস্থিরতায়। এরকম এক চরম পরিস্থিতিতে নার্গিসের সাথে ইন্দ্রর দেখা হয়। নার্গিস একজন বিজ্ঞানী, সে নিজেও ইন্দ্রর মতো একই দিনে অর্থাৎ পয়লা বৈশাখে আটকে রয়েছে। ইন্দ্র নার্গিসের থেকে জানতে পারে যে তাদের এই অতি-প্রাকৃতিক সময়যাত্রার মূলে রয়েছে একটা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা যা কিনা নার্গিস আর তার বাবা প্রফেসর আহমেদ আমেরিকায় করছিল। বছরখানেক আগেই প্রফেসর আহমেদ তাদের গবেষণাগার আমেরিকা থেকে হাওড়ায় স্থানান্তরিত করেছে। তার কিছু মাস পড়েই নার্গিসের সাথে প্রফেসার আহমেদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং প্রফেসর আহমেদ নিখোঁজ হয়ে যান। প্রফেসর আহমেদকে খুঁজতে গিয়েই নার্গিস এই টাইম লুপে আটকে পড়ে। নার্গিসের মনে হয় তাদের বানানো যন্ত্র আই টি ডি এস এস এর উপর এক্সপেরিমেন্ট করতে করতেই প্রফেসর আহমেদের সাথে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেছে, যার ফলস্বরূপ তাদের এই পরিণতি। এরপর কী ঘটে তাই নিয়েই এই ছবি।

পয়লা বৈশাখ ছবিটির বিষয়ে পরিচালক অর্ক দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, "আমি একটি অতিপ্রাকৃতিক বৈজ্ঞানিক ঘটনাকে একটি কাব্যিক ত্রিকোণ প্রেমের গল্পের মাধ্যমে দেখাতে চেয়েছি, যেখানে নতুন প্রজন্মরা আবেগ ও যুক্তিগত, উভয়ভাবেই একাত্ম হতে পারে। যে কোনও পরিবর্তনের শুরুই অচলায়তনের দেয়ালের ইট কাঁপিয়ে দেয় এবং স্বতঃসিদ্ধ সামাজিক সত্যের মেকি আবারণকে কেটে টুকরো টুকরো করে দেয়। সমগ্র মানবজাতিকে নিয়ে আসে এক নতুন বিশ্বাস ও আশার পৃথিবীতে যেখানে অমর মানবিক ধীশক্তি সকল পার্থিব জীবিত আত্মার ওপর প্রভাব বিস্তার করে।" তিনি আরও জানিয়েছেন, "পয়লা বৈশাখে, আমরা এক অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা তৈরি করেছি- সময় ঘূর্ণি, যেখানে তিনটি সময় প্রবাহ একই সময় একই বিন্দুতে সংঘর্ষ ঘটায় এবং তৈরি করে এক নতুন ব্রহ্মাণ্ড । আর সেখানেই আমাদের গল্পের মূখ্যচরিত্র- ইন্দ্র আটকে পড়ে এক অচেনা নারী অর্থাৎ নার্গিসের সাথে।" পরিচালকের বিশ্বাস এই ছবি নতুন প্রজন্মের ভাল লাগবে।
