২০১৭ সাল, উইন্ডোজের প্রযোজনায় মুক্তি পেল 'পোস্ত'। পোস্ত আর গুরুজির নিরেট বন্ধন ও পারিবারিক দ্বন্দ্বের হিসাবে দর্শক মনে জায়গা করেছিল এই ছবি। ছবির প্রাণ হয়ে ছিল একরত্তি 'পোস্ত' ওরফে অর্ঘ্য বসু। অর্ঘ্য তখন সাত। ওই বয়সেই টলিউডের রাজপুত্র সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সান্নিধ্য, তার কাছে আরেকটা 'বন্ধু' পাওয়ার মতো! ১৫ নভেম্বর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণ বার্ষিকীতে আবেগপ্রবণ অর্ঘ্য। 

 


অর্ঘ্য এখন আর ছোট্টটি নেই। সে এখন ১৬-র কিশোর! আজকের দিনে যদি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সান্নিধ্য পেত সে, তবে কেমন হত? আজকাল ডট ইন-এর প্রশ্নে প্রথমে একটু চুপ করে থাকে সে। তারপর বলে, "অনেক কথা বলা বাকি রয়ে গেল। আসলে তখন বড্ড ছোট ছিলাম তো! দুষ্টুমিতেই সময় কাটিয়েছি বললে চলে। পোস্তর শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প হত আমাদের। কখনও বকা খাইনি। শিবুআঙ্কেল (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়)-এর কাছেও বকা খাইনি যদিও। তবে সেই সময় আমার মনে হত বেশ ভাল একজন বন্ধু পেয়েছি।" 

 


অর্ঘ্যর কথায়, "আজকের দিনে যদি আমাদের দেখা হত, তাহলে অনেককিছু বলতাম, অনেককিছু জানার ছিল আসলে। এত সুন্দর করে স্ক্রিনে প্রতিটা চরিত্রকে কীভাবে ফুটিয়ে তুলতেন? কীভাবে অভিনয়টা বাস্তবে পরিণত করা যায়, সেই সব অনেককিছু জানার ছিল। তখন তো বুঝিইনি, কার সঙ্গে কাজ করছি! যখন বুঝলাম, তখন তো সময় পেরিয়ে গিয়েছে।" 

 

অর্ঘ্য আরও বলে, "২০২০ সালের শুরুতে শুনছিলাম ওঁর শরীর খারাপ, অনেক খবরই আসছিল। তারপর হঠাৎ শুনি, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর নেই! আমার কাছে বড় ধাক্কা ছিল। এর একটা কারণ, আমার নিজের দাদুও সেই সময় মারা যান। অন্যদিকে, তখন একটু একটু করে ওঁর ছবি দেখছি, সবে মাত্র বুঝতে শিখেছি আমার প্রাপ্তিটা, আর ঠিক সেই সময় এই ঘটনাটা আমায় নাড়া দিয়ে গিয়েছিল। সেই থেকে আফসোসটা রয়েই গিয়েছে।" 

 

 

অর্ঘ্য বলে, "যদি সুযোগ পেতাম, আবারও একসঙ্গে কাজের ইচ্ছাপ্রকাশ করতাম। অনেককিছু শেখার চেষ্টা করতাম। পোস্ত সব সময় আমার কাছে বিরাট পাওয়া হয়ে থাকবে। আমি নিজেকে ব্লেসড মনে করি।" 

 

 

প্রসঙ্গত, অর্ঘ্যকে শেষবার পর্দায় দর্শক দেখেছিলেন পথিকৃৎ বসুর ছবি 'দাবাড়ু'তে। বর্তমানে পড়াশোনায় মন দিয়েছে অর্ঘ্য। তবে ভবিষ্যতে অভিনয়কেই আঁকড়ে ধরার ইচ্ছা আছে তার।