আজকাল ওয়েবডেস্ক: আর্থিক প্রয়োজনের সময় মানুষের জন্য টাকা পাওয়া সহজ করার পরিকল্পনা করছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই)। এতদিন কেবল সোনার গয়না বা মুদ্রা বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়া হত। কিন্তু এখন সেই তালিকায় রুপোও যুক্ত হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৬ থেকে মানুষ রুপো বন্ধক রেখে ঋণ নিতে পারবে। এই সুবিধা ব্যাঙ্ক, সমবায় ব্যাঙ্ক এবং নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফসি) এর মাধ্যমে পাওয়া যাবে।
আরবিআই জানিয়েছে যে, সোনা ও রুপোর গয়না বা মুদ্রার বিনিময়ে স্বল্পমেয়াদী ঋণ দেওয়া হবে। তবে, সোনা বা রুপোর বার (সোনার ফর্ম) এই নিয়মের অন্তর্ভুক্ত হবে না। এর অর্থ এই সুবিধা শুধুমাত্র অলঙ্কার বা মুদ্রার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, আরবিআই'য়ের এই পদক্ষেপ মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকেদের আরও সহজে ঋণ পেতে সাহায্য করবে। সকলেরই সোনার অলঙ্কার থাকে না, তবে অনেকের বাড়িতে ররপোর জিনিসপত্র থাকে।
রুপোর বদলে ঋণ: সোনার মতোই সহজ নিয়ম চালু করল আরবিআই
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) এর নতুন নিয়ম অনুসারে, এখন সোনার মতোই রুপো বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়া যাবে। উভয় ক্ষেত্রেই একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। সূত্র জানায়, সোনার মূল্যের সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ হিসেবে নেওয়া যেতে পারে এবং রুপোর ক্ষেত্রেও একই অনুপাত প্রযোজ্য হবে। আগে এই সীমা ছিল ৭৫ শতাংশ। উদাহরণস্বরূপ, যদি কারো কাছে ১ লক্ষ টাকার সোনা থাকে, তাহলে তারা ৮৫,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন। একইভাবে, রূপোর গয়নার মূল্য বাজার মূল্যের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হবে।
ঋণের সীমা এবং পরিশোধের নিয়ম
একই সোনা বা রুপো বন্ধক রেখে একাধিক ঋণ নেওয়া যাবে না। এছাড়াও, সোনা, রুপো বা ইটিএফ কেনার জন্য ঋণ নেওয়া যাবে না। সর্বোচ্চ ২.৫ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া যেতে পারে, যা ১২ মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। আরবিআই নির্দেশিকা অনুসারে, এক কেজি পর্যন্ত সোনার গয়না বা ৫০ গ্রাম সোনার কয়েন বন্ধক রাখা যেতে পারে। রুপোর ক্ষেত্রে, ১০ কেজি পর্যন্ত গয়না বা ৫০০ গ্রাম রুপোর মুদ্রা বন্ধক রাখা যেতে পারে।
ঋণ পরিশোধের পর, বন্ধক রাখা সোনা বা রুপো ৭ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। যদি বিলম্ব হয়, তাহলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিন ৫,০০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। বন্ধক রাখা সোনা বা রুপো হারিয়ে গেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে, ঋণদাতাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ঋণগ্রহীতা যদি সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে না পারে, তাহলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান বন্ধক রাখা সোনা বা রুপো নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারে। তবে, বিক্রির আগে যথাযথ নোটিশ দিতে হবে। নিলামের জন্য রিজার্ভ মূল্য বাজার মূল্যের ৯০ শতাংশ হওয়া উচিত। যদি দু'টি নিলামের পরে বিক্রি না হয়, তাহলে এটি ৮৫ শতাংশে বিক্রি করা যেতে পারে। যদি বিক্রয়ের পরিমাণ ঋণের পরিমাণের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে অতিরিক্ত অর্থ ঋণগ্রহীতাকে সাত দিনের মধ্যে ফেরৎ দিতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, আরবিআই'য়ের এই পদক্ষেপ ভারতের ক্ষুদ্রঋণ খাতকে উৎসাহিত করবে এবং সোনা ও রুপোকে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করে অনেক মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা উন্নত করবে।
