আজকাল ওয়েবডেস্ক: কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটল আইফোন প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাপল। বিশ্বজুড়ে সেলস টিমের বেশ কিছু কর্মীকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। বিপুল রাজস্ব আয় সত্ত্বেও এই বিরল পদক্ষেপ করল অ্যাপল। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত দুই সপ্তাহ ধরে অ্যাপল কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের অবহিত করেছে। যার ফলে ব্যবসা, স্কুল এবং সরকারি সংস্থাগুলির অ্যাকাউন্ট ম্যানেজারদের পাশাপাশি অ্যাপলের ব্রিফিং সেন্টারের কর্মীদেরও ছাঁটাই করা হয়েছে। অ্যাপল দাবি করেছে, এই রদবদলের লক্ষ্য বিক্রয় বিভাগকে সুবিন্যস্ত করা এবং অতিরিক্ত দায়িত্ব কমানো। 

বিশ্বের অন্যতম দামী সংস্থা অ্যাপলের ছাঁটাইয়ের ঘটনা অনেককেই অবাক করেছে। কারণ গত কয়েক বছর ধরে সংস্থার আয় দ্রুততম গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে সংস্থাটি প্রায় ১৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১২৪.৮৪ বিলিয়ন টাকা) আয় করতে চলেছে। যা তার আগের সব রেকর্ড ভেঙে দেবে।

এই ছাঁটাই অ্যাপলের সেলস অপারেশন বিভাগগুলিকে প্রভাবিত করবে। যাদের কাজ ছিল ব্যবসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি বিভাগের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা। অ্যাপল যখন প্রধান গ্রাহকদের কাছে পৌঁছনোর জন্য তার কৌশলকে সহজতর এবং পরিমার্জিত করার চেষ্টা করছে। ঠিক তখনই এই ছাঁটাই। 

ছাঁটাইয়ের ফলে বিভিন্ন পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিছু পদ অন্যদের তুলনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বড় ব্যবসা, স্কুল এবং সরকারি সংস্থাগুলিতে কাজ করা অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার সহ অন্যান্য পদগুলি প্রভাবিত হয়েছে। অ্যাপলের ব্রিফিং সেন্টারে ক্লায়েন্টরা পণ্য সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পারেন। সেখানকার কর্মীদের ছাঁটাই করা হয়েছে।

এমনকি অ্যাপলে দুই থেকে তিন দশকের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সিনিয়র ম্যানেজাররাও ছাঁটাইয়ের আওতায় পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রুপগুলির মধ্যে একটি অ্যাপলের সরকারি বিক্রয় দল। যারা মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ এবং বিচার বিভাগের মতো সংস্থাগুলির সঙ্গে কাজ করতে। দলটি ইতিমধ্যেই ৪৩ দিনের মার্কিন সরকার শাটডাউন এবং পরবর্তী ব্যয় হ্রাসের ফলে নানা বাধার সম্মুখীন হয়েছিল।

অ্যাপল সোমবার ছাঁটাইয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। কিন্তু, কতজন কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে তা জানায়নি। সংস্থার এক মুখপাত্র ব্লুমবার্গকে বলেছেন, “আরও বেশি গ্রাহকের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য, আমরা আমাদের সেলস টিমে কিছু পরিবর্তন আনছি যা অল্প সংখ্যক পদকে প্রভাবিত করবে। তবে, আমরা নিয়োগ অব্যাহত রাখছি এবং প্রভাবিত কর্মীরা নতুন পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।”

সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, যে সকল কর্মীরা চাকরি খুঁইয়েছেন তাঁরা অ্যাপলের নতুন পদ পেতে আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। সংস্থার জব পোর্টালে শূন্যপদ পোস্ট করা হয়েছে। যাঁরা উপযুক্ত চাকরি খুঁজে পাবেন না তাঁদের সংস্থার পক্ষ থেকে সেভিয়ারেন্স প্যাকেজ দেওয়া হবে। 

এই বছরের শুরুতে, সংস্থাটি অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে প্রায় সেলস টিমের প্রায় ২০ জনকে ছাঁটাই করেছিল। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, “২০২৪ সালে পণ্য বাতিল এবং নড়বড়ে অর্থনীতির কারণে অ্যাপল অস্বাভাবিকভাবে বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেছিল। এর মধ্যে ছিল এর দীর্ঘমেয়াদী এবং এখন বন্ধ হয়ে যাওয়া, স্ব-চালিত গাড়ি প্রকল্পের কর্মী এবং এর ডিভাইসগুলির জন্য অভ্যন্তরীণ স্ক্রিন তৈরির প্রচেষ্টা। কিছু এআই নিয়ে কাজ করা দল এবং পরিষেবা বিভাগের কিছু অংশের কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছিল।”