আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ছিল জিএসটি কর-কাঠামোয় সংস্কার হবে। নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। এবার শুরু হল পদক্ষেপ। জিএসটি কর-কাঠামোয় ১২ ও ২৮ শতাংশ স্ল্যাব বাতিলের অনুমোদন দিল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিগোষ্ঠী। ফলে দীর্ঘ্য প্রতীক্ষিত জিএসটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া আরও এক ধাপ এগিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ দিনের এই পদক্ষেপের ফলে ভবিষ্যতে জিএসটি-তে কেবল ৫ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ স্ল্যাব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পদক্ষেপটি জিএসটি ২.০ নামে পরিচিত একটি পদক্ষেপের সূচনা করল। এর লক্ষ্য কর ব্যবস্থাকে সহজ করা। যাতে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসার ওপর বোঝা কমানো যায়।
বৃহস্পতিবার জিএসটি সংক্রান্ত মন্ত্রিগোষ্ঠীর সভাপতিত্ব করেন বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী। অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের অর্থমন্ত্রী সুরেশ কুমার খান্না, রাজস্থানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং, পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কর্ণাটকের রাজস্বমন্ত্রী কৃষ্ণ বাইরে গৌড়া এবং কেরলের অর্থমন্ত্রী কে এন বালগোপাল। অর্থমন্ত্রকের বিস্তারিত প্রস্তাব পর্যালোচনা করে মন্ত্রিগোষ্ঠীর সদস্যরা ঐকমত্যে পৌঁছন।
জানা গিয়েছে, এ দিনের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে- তামাক ও কিছু বিলাসবহুল পণ্যের উপর ৪০ শতাংশ জিএসটি চালু থাকবে। মন্ত্রীদের প্যানেল বিলাসবহুল গাড়িকে ৪০ শতাংশ কর স্ল্যাবের আওতায় আনারও সুপারিশ করেছে। পরিকল্পনা অনুসারে, ৯৯ শতাংশ পণ্য, যার ওপরে আগে ১২ শতাংশ কর ধার্য ছিল, এখন সেগুলির উপর ৫ শতাংশ জিএসটি কর ধার্য করা হবে। একইভাবে, ২৮ শতাংশ কর ধার্য থাকা প্রায় ৯০ শতাংশ পণ্যে ১৮ শতাংশ কর ধার্য করা হবে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সভাপতিত্বে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে সুপারিশগুলি পেশ করা হবে বলে খবর।
কেন্দ্র জানিয়েছে যে, নতুন কাঠামোটি দৈনন্দিন জিনিসপত্রের উপর জিএসটি হার কমালে দেশের আম আদমি, কৃষকদের জন্য তা অত্যন্ত স্বস্তির হবে। ওষুধ, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, পোশাক, জুতো এবং বেশ কিছু গৃহস্থালী পণ্যের উপর জিএসটি কর কমে মাত্র ৫ শতাংশ হবে। বৃহৎ গৃহস্থালী যন্ত্রপাতি, টেলিভিশন এবং অন্যান্য টেকসই পণ্যের উপর বর্তামানে ২৮ শতাংশ হারে জিএসটি নেওয়া হয়। সেগুলি ১৮ শতাংশ হারের আওতায় আসবে
এ দিনের বৈঠকে মন্ত্রিগোষ্ঠীর সদস্যরা স্বাস্থ্য ও জীবন বিমাকে জিএসটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করেছে। অনুমোদিত হলে, এর অর্থ হবে পলিসিধারকদের আর প্রিমিয়ামের উপর জিএসটি দিতে হবে না বা হলেও তা ৫ শতাংশ হারে।
আরও পড়ুন- স্বস্তি, স্বাস্থ্য ও মেয়াদি বিমার উপর জিএসটি বাতিল বা কমে ৫ শতাংশ হতে পারে
সরকারি আধিকারিকদের অনুমান যে এই ধরনের ছাড় প্রতি বছর সরকারি রাজস্ব প্রায় ৯,৭০০ কোটি টাকা কমাতে পারে। যদিও বেশিরভাগ রাজ্য এই ধারণাকে সমর্থন করেছে। তারা এমন একটি ব্যবস্থাও তৈরি করার জন্য অনুরোধ করেছে- যাতে বিমাকারীরা প্রিমিয়াম অপরিবর্তিত রাখার পরিবর্তে গ্রাহকদের কাছে সুবিধা পৌঁছে দেয়।
মন্ত্রিগোষ্ঠীর সুপারিশগুলি এখন জিএসটি কাউন্সিলের কাছে পাঠানো হবে, যার সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী এবং এতে সমস্ত রাজ্যের প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত। কাউন্সিল তার আসন্ন সভায় প্রস্তাবগুলি পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অনুমোদিত হলে, ২০১৭ সালে জিএসটি চালু হওয়ার পরে এই পরিবর্তন সবচেয়ে বড় সংস্কারগুলির মধ্যে একটি হবে। সরকার বিশ্বাস করে যে, সহজ দুই-স্তর ব্যবস্থা ব্যবসার ক্ষেত্রে সুবিধাজনক এবং গ্রাহকদেরও করের বোঝা কমাবে।
