আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাতভর অঝোরে বৃষ্টি। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস মেনেই, টানা বর্ষণ উত্তরের জেলাগুলিতে। টানা বর্ষণে বাড়ছে নদীর জলস্তর। ঘূর্ণিঝড় মান্থা স্থলভাগে আছড়ে পড়ার পরেও, তার প্রভাব কাটেনি সম্পূর্ণরূপে। ঘূর্ণিঝড় পরিণত হয়েছে নিম্নচাপে। মান্থার রোষে বাংলা ভিজছে এখনও। হাওয়া অফিস, বৃহস্পতিবারেই উত্তরের জেলাগুলিতে লাল সতর্কতা জারি করেছিল। টানা বৃষ্টি জেলায় জেলায়। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বৃষ্টি বিক্ষিপ্তভাবে। জল বাড়ছে পাহাড়ি নদীগুলিতে।
যদিও নদীগুলিতে জল বাড়লেও এখনও কোনো বন্যা পরিস্থিতির খবর নেই জেলার কোথাও। মূলত তিস্তা পার্শ্ববর্তী ক্রান্তি ব্লক, জলঢাকা পার্শ্ববর্তী ধূপগুড়ি এবং ময়নাগুড়ি ব্লকের বিভিন্ন এলাকা এবং ডায়না পার্শ্ববর্তী নাগরাকাটা ব্লকের বামনডাঙ্গা এলাকায় সর্তকতা জারি রয়েছে। এই অবস্থায় সম্প্রতি বর্ন্যাত এলাকার মানুষদের ফ্লাড শেল্টার ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সুত্রে খবর, সমস্ত পরিস্থিতির উপর নজর যেমন রাখা হচ্ছে এবং সেই সঙ্গে প্রস্তুতি সারা হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার।
ফ্লাড কন্ট্রোল সুত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জলঢাকা নদীর এন এইচ ৩১ এলাকায় ওয়াটার লেভেল ৭৯.১০। তিস্তার দোমহনি এলাকায় ওয়াটার লেভেল ৮৫.০০ এবং ডায়না ১৪৩.৩৫। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে বৃষ্টিপাতের পরিমান ৪১.৯০ মিলিমিটার।
ধূপগুড়ি ব্লকের গধেয়ারকুঠি পার্শ্ববর্তী জলঢাকা নদীর জলস্ফীতিতে যাতে ফের বন্যা পরিস্থিতির জেরে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেই লক্ষ্যেই প্রশাসনের তরফ থেকে ময়দানে নামা হয় বৃহস্পতিবার সন্ধেয়। সন্ধে নাগাদ এসডিপিও এবং এসডিও সেইসঙ্গে ধুপগুড়ি থানার পুলিশ আধিকারিকরা বন্যা দুর্গত এলাকাতে পৌঁছে সেখানকার মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন ফ্লাড শেল্টার ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ব্লকের বিভিন্ন এলাকাতে মাইকিং পর্যন্ত করা হয়েছে মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যাওয়া বা নিরাপদ স্থানে রাত কাটানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তরের তরফে শুক্রবার ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা ভুটান এবং জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়। যার জেরে আগাম সতর্কতা নিয়ে ধুপগুড়ি ব্লকের গধেয়ারকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের হোগলাপাতা, বগরিবাড়ি সহ আশপাশের এলাকায় সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। অধিকাংশ মানুষকে শেল্টার ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবার কিছু মানুষ রেল লাইনে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ধুপগুড়ির এসডিপিও এবং এসডিও ময়দানে নেমে বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় নথিপত্র সঙ্গে নিয়ে স্কুল গুলোতে আশ্রয় নেওয়ার অনুরোধ করছেন। তবে দেখা গিয়েছে অনেকেই নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যেতে রাজি নয়। যা নিয়ে আধিকারিকরা বিপাকে পড়েছে।

হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, শুক্রবার-কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুর জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত (>০৭-২০ সেমি) হওয়ার সম্ভাবনা। উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদা জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টিপাত (০৭-১১ সেমি) হতে পারে। এছাড়াও, উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলায় ৩০-৪০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে ঝড় এবং বজ্রপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিল হাওয়া অফিস। হয়ও তাই। শুক্রবার সকালের আপডেট, উত্তরের জেলায় জেলায় বৃষ্টিপাত। একাধিক জায়গা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। টানা বৃষ্টিতে ধসের আশঙ্কা। দার্জিলিং, জলপাইগুলি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ারে লাল সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। অন্যদিকে, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুরে জারি কমলা সতর্কতা। জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহেও এদিন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় দাপট দেখাতেও শুরু করেছে বৃষ্টি। জারি হলুদ সতর্কতা। পাহাড়ে টানা বৃষ্টিতে ধসের আশঙ্কা, বৃষ্টিতে কমে যেতে পারে দৃশ্যমানতা।
